প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে সরকার বিব্রত। মন্ত্রীদের নাম উল্লেখ না করে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ওই দুই মন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আজ সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়টি উঠে আসে।

মন্ত্রিসভার এক জ্যেষ্ঠ সদস্য প্রধান বিচারিপতিকে নিয়ে দুই মন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তুলে ধরেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা (দুই মন্ত্রী) যে মন্তব্য করেছেন তাতে আমি নিজেও বিব্রত।’

বৈঠক শেষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যের কথা জানান। তাঁরা বলেন, দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘তাঁদের এই বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে তাঁদের নিজস্ব। সরকারের নয়।’

মন্ত্রিসভার বৈঠক বেলা ১১টায় শুরু হয়ে সাড়ে ১২টায় শেষ হয়। তবে মন্ত্রিসভার বৈঠকের নিয়মিত ব্রিফিং হয় বেলা আড়াইটায়। ওই সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমকে প্রশ্ন করা হয়, আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এবং প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে কিছু বলেছেন কি না?

জবাবে সচিব বলেন, ‘নির্ধারিত এবং এজেন্ডাভুক্ত বিষয়গুলোই আমি আপনাদের ব্রিফিং করেছি। এর বাইরে অনির্ধারিত আলোচনায় কী হয়েছে তা প্রকাশে আমি অপারগ।’

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মীর কাসেম আলীর আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের সমালোচনা করে গত শনিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে বক্তব্য দেন সরকারের দুই মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আ ক ম মোজাম্মেল হক। প্রধান বিচারপতি তাঁর আসনে থাকতে চাইলে ‘অতিকথন’ বন্ধ করা উচিত বলেও এক মন্ত্রী পরামর্শ দেন।

একই সঙ্গে মীর কাসেম আলীর মামলায় আপিল বিভাগের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি যেসব মন্তব্য করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে ওই মামলায় পুনরায় শুনানি করার আহ্বান জানান দুই মন্ত্রী। প্রধান বিচারপতি এবং বিচারাধীন বিষয় নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করায় এই দুই মন্ত্রীকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।