দুই মন্ত্রীর বৈধতা বিষয়ে শুনানি পিছিয়েছে
শপথ ভঙ্গের পরও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের মন্ত্রী পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের বিষয়ে পরবর্তী শুনানি পিছিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টম্বর) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালত রিটকারী আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শপথ ভঙ্গের আইনগত পরিণতি কি তা আপনাকে জেনে আসতে হবে। আমরা যতোদূর দেখেছি এ বিষয়ে সংবিধানে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা নেই।
আদালত আরো বলেন ভারত, পাকিস্তান ও উপমহাদেশসহ অন্যান্য দেশে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না দেখে আসবেন। একথা বলে আদালত বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেন।
পরে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ পরে সাংবাদিকদের বলেন, আজ দুই মন্ত্রীর মামলাটি শুনানির জন্য ছিল। মাননীয় আদালত বলেছেন শপথ ভঙ্গ হলে তার পরিণতি কি হবে, এ ব্যাপারে সংবিধানে কি আছে তা জেনে যেতে বলেছেন। আগামী বৃহ্পতিবার এ বিষয়ে আবার শুনানি হবে। আশাকরি ওইদিন আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারব এবং আদালত রুল জারি করবেন।
তিনি আরও বলেন, এটা রিট অব কো-ওয়ারেন্টো। বাংলাদেশে এ ধরনের মামলা এর আগে কোনোদিন হয়নি। এ ধরনের মামলায় আদালত কেবল রুল দিতে পারেন, তার কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ দিতে পারে না।
উল্লেখ, শপথ ভঙ্গের পরও কোনো কর্তৃত্ববলে দুই মন্ত্রী পদে রয়েছেন তা জানতে চেয়ে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টে একটি রিট করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। এই দুই মন্ত্রীকে রিটের বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়, আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে দুই মন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন। ওই রায়ের পর মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদ আঁকড়ে থাকার কোনো অধিকার তাদের নেই। আদালত অবমাননার দায়ে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা দেওয়ার পর তাদের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদে থাকা ‘পাবলিক সার্ভেন্ট ডিসমিসাল অন কনভিকশন অর্ডিনেন্স-১৯৮৫’ এর পরিপন্থি। তারা অবৈধভাবে ও আইনি কর্তৃত্ব ছাড়াই পদে রয়েছেন। সংবিধান সুরক্ষায় শপথ ভঙ্গের মাধ্যমে তারা মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসাবে নেওয়া শপথ ভেঙেছেন।’
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর দুই মন্ত্রীকে এ বিষয়ে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন ওই আইনজীবী। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব না পাওয়ায় এ রিটটি দায়ের করেন তিনি।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর মামলার আপিলের রায়ের আগে প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য দেন দুই মন্ত্রী। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছর ২৭ মার্চ তাদের দোষী সাব্যস্ত করে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই রায় দিয়েছিলেন।
সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি গত ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। আপিল বিভাগের ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ‘তারা (দুই মন্ত্রী) আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং সংবিধান সমুন্নত রাখার যে শপথ নিয়েছেন তা লঙ্ঘন করেছেন। আমাদের সন্দেহ নেই যে, বিবাদীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বক্তব্য রেখেছেন এবং তারা তাদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। তারা আইন ভঙ্গের কাজ করেছেন।’
এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করলেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ৩ সেপ্টেম্বর এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেছেন, জেনেশুনে সংবিধান লঙ্ঘন করিনি। এদিকে দুই মন্ত্রী সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকেও অংশ নিয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন