দু’চোখেই দেখার সম্ভাবনা নেই সিদ্দিকুরের
শাহবাগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চোখ নিয়ে ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসাধীন তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। তবে সিদ্দিকুরের কোনো চোখে দেখার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এমনকি অস্ত্রোপচারেও চোখ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সোমবার চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ে সিদ্দিকুর রহমানের চোখ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক লিংগম গোপাল জানান, অস্ত্রোপচারেও কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। সোমবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান সিদ্দিকুর রহমানের সহপাঠী শেখ ফরিদ।
তিনি বলেন, বেলা দেড়টার পর প্রায় আধা ঘণ্টা সিদ্দিকুরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। অনেকক্ষণ কান্নাকাটির পর সিদ্দিকুর আমাকে জানায়, ‘আজ চোখ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ডাক্তার লিংগম গোপাল সরাসরি জানিয়েছেন চোখ ভালো হবে না। এমনকি অস্ত্রোপচারেও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
ফরিদ আরও বলেন, ‘চোখ ভালো না হলে আমি বাঁচব কি করে একথাই বারবার বলছিল সিদ্দিকুর। ওকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো শক্তি আমার নেই।’
তিনি বলেন, সিদ্দিকুরের সঙ্গে আছেন ওর বড় ভাই নায়েব আলী ও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল আহসান। সিদ্দিকুরের ভাই নায়েব আলীর সঙ্গেও আমার ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা হয়েছে। তিনিও একই কথা জানিয়েছেন।
শেখ ফরিদ সিদ্দিকুরের বড় ভাইয়ের বরাত দিয়ে বলেন, ‘চিকিৎসার বিষয়টির সর্বশেষ কি হয় এরপর দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত হবে। আজ রাতে ডাক্তাররা আপডেট জানাতে চেয়েছেন। রাতে জানা যাবে চিকিৎসার জন্য আরও থাকতে হবে নাকি দেশে ফিরবে।’
উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই সকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে নীতিমালা প্রণয়নসহ সাত দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে আসেন।
শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার পর পুলিশ ও ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ হঠাৎই টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ শুরু করে। সেখানে তাদের ওপর হামলা করে পুলিশ। এ ঘটনায় তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে তিতুমীর কলেজের ছাত্র গুলিবিদ্ধ সিদ্দিকুর রহমানকে (২৩) ঢাকা মেডিকেল থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানকার চিকিৎসকরা বলেছেন, সিদ্দিকুর ডান চোখে আলো দেখছে না। বাঁ চোখের একদিক থেকে আলো কিছুটা উপলব্ধি করতে পারছে।
এরপরই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিদ্দিকুরকে চেন্নাইয়ে পাঠানো হয়। চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে চিকিৎসাধীন সিদ্দিকুর।
ওই ঘটনার পরদিনই রাতে ১২০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। মামলা নং ২৬।
ঘটনার পর ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিদ্দিকুরের কীভাবে আঘাত লাগল, তা খতিয়ে দেখা হবে। এ আঘাত সাবোটাজ কি না, তা-ও দেখব।’
পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ বড় একটি বাহিনী। বাহিনীতে অতিউৎসাহী কিছু পুলিশ সদস্য থাকতে পারে। সিদ্দিকুরের ঘটনায় যদি এমন কোনো অতিউৎসাহী সদস্য জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিদ্দিকুরের চোখ নষ্ট হওয়ার খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তদন্তে গত ২২ জুলাই রমনা বিভাগ পুলিশ পৃথক তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির প্রধান রমনা বিভাগের এডিসি (প্রশাসন) নাবিদ কামাল শৈবাল।
একই ঘটনায় ২৩ জুলাই ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপস) মীর রেজাউল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন ভারপ্রাপ্ত ডিসি ডিবি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও এডিসি রমনা আশরাফুল আলম।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন