”দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে খালেদার বিরুদ্ধে মামলা”
আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা প্রত্যাহার দাবিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এ কথা বলেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদ (অব.)।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।
গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানা রকম তথ্য আছে।’ তার ওই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তার কোনো ভিত্তি নেই। তিনি সেদিন অন্যদের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেছিলেন। তিনি শহীদদের পূর্ন সম্মান দিতে চান। আমরা মুক্তিযোদ্ধারাও চাই, শহীদদের সঠিক সংখ্যা নিরূপন হোক। তাদের আরো সুযোগ-সুবিধা নিয়ে উচ্চ সম্মান দেওয়া হোক। কিন্তু দু:খের বিষয় এই সরকারের সেই ধরনের কোনো মনমানসিকতা নেই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) এমন কি বললেন যে দেশ রসাতালে গেলো? নামগোত্রহীন এক উকিল তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানীদের হাতে দুটি সন্তানসহ ছয় মাস বন্দি থাকলেন, নির্যাতন ভোগ করলেন, তিনি আজ দ্রেশদ্রোহি হয়ে গেলেন, আর যারা পালিয়ে বেড়ালো তারা হয়ে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা।’
তিনি বলেন, ‘দেশে যদি গণতন্ত্র, ভোটাধিকার থাকতো; আর যদি আগামী একমাসের মধ্যে কোনো কারনে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে দেখা যাবে কে দেশদ্রোহী আর কে দেশনেত্রী।’
খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় কালিমা লিপ্ত করতেই তার নামে দেশদ্রোহিতার মামলা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো, মামলাবাজি বন্ধ করুন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন। বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করুন। যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামলার জন্য অনুমতি দিয়েছেন, একদিন তাদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যেভাবে সরকার মামলাবাজি শুরু করেছে তাতে প্রধান বিচারপতির নামে দেশদ্রোহিতার মামলা হলে মোটেও আশ্চর্য হবো না।’
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের মিথ্যা মামলাবাজি করে বাংলাদেশে কেউ পার পেয়ে যাবে না। এই সরকার শেষ সরকার নয়। সুতরাং এই দু:শাসনের হাত থেকে বাঁচতে হলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তুমুল গণআন্দোলনের মাধ্যমে এর জবাব দেওয়া হবে।’
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আইন প্রণয়নের উদ্যোগের সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আইন প্রণয়ন করে কোনো শ্রদ্ধা বা সম্মান পাওয়া যায় না। বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে আইন করতে যাচ্ছে তা অর্থহীন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাদের (আওয়ামী লীগ) কারো কথা পছন্দ না হলে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হবে, সে যদি মুক্তিযোদ্ধাও হয়।’
এই দেশে যেহেতু আইনের শাসন নেই, নির্বাচিত আইনসভাও নেই সেজন্য তাদের প্রত্যেকটি কথা অসাড় বলে গুরুত্ব দিতে চাই না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে মুক্তিযোদ্ধারা হতাশ। এখন তামাশা ছাড়া আর কিছু হচ্ছে না। গণতন্ত্র বিলুপ্ত আইনের শাসন নির্বাসনে, মানুষের অধিকার নেই।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুজ্জামান খোকন, জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি আবুুল বাশার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

সাবেক এমপি মিয়াজী যশোরের পার্ক থেকে আটক
ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক এমপি ও শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিববিস্তারিত পড়ুন

ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন