পরিকল্পনা মতো সবকিছু এগোচ্ছিল। দেবরের সঙ্গে মিলে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে স্বামীকে খুন করা হলো। লাশ ভরে রাখা হয় ট্রাঙ্কে। সুযোগমতো অজ্ঞাত স্থানে লাশটি ফেলে দিলেই কর্ম সম্পন্ন।

কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। লাশ সরানোর সুযোগ মিলছিল না। আগেই ছড়িয়ে পড়ল দুর্গন্ধ। আর তাতেই ধরা পড়ে যান স্বামী হন্তারক স্ত্রী।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্ডালের খান্দরায় নীলকণ্ঠ ভুঁইয়াপাড়ায় এমন নৃশংস ঘটনা ঘটে। খবর আনন্দবাজার’র।

পুলিশ জানায়, গত রোববার সকালে ভুঁইয়াপাড়ার ওই বাড়িতে একটি ট্রাঙ্ক থেকে ৪২ বছর বয়সী দেবানন্দ বাউরির লাশ উদ্ধার হয়। পরেই প্রতিবেশীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তার স্ত্রী লালমন্তিদেবীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাতে তার আগের পক্ষের দেবর অমরজিৎ ভুঁইয়াকেও আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, লালমন্তির প্রথম পক্ষের স্বামী সুরেশ ভুঁইয়া অন্ডালের বাঁকোলা কোলিয়ারিতে কাজ করতেন। তিনি ছিলেন নিরসার বাসিন্দা। ২০১১ সালে লালমন্তি বিয়ে করেন নিরসারই বাসিন্দা দেবানন্দকে।

প্রতিবেশীরা জানায়, কয়েক দিন আগে লালমন্তির আগের পক্ষের দেবর অমরজিৎ নিরসা থেকে খান্দরায় আসে। শনিবার সকালে লালমন্তি পড়শীদের কাছে দাবি করেন, আগের রাতে একটি ঘরে দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। অন্য ঘরে মদ্যপান করেন অমরজিৎ ও দেবানন্দ। সকাল থেকে দুজনেরই খোঁজ নেই।

কিন্তু রোববার সকালে দুর্গন্ধ ছড়ালে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে বাড়িতে একটি ট্রাঙ্ক থেকে দেবানন্দের লাশ উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় তার স্ত্রী লালমন্তিকে।

পুলিশের জেরায় লালমন্তি জানান, দেবানন্দ কাজকর্ম বিশেষ কিছু করতেন না। তাই রোজগার ছিল না। এনিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই তাদের মধ্যে অশান্তি চলছিল। লালমন্তিই অমরজিৎকে ডেকে পাঠান খান্দরায়।

শুক্রবার রাতে দেবানন্দ ও অমরজিৎ একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। মাঝ রাতে সেখানে যান লালমন্তি। পরে দুজনে মিলে দেবানন্দের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে লাশ ট্রাঙ্কে ভরে রাখেন।

লালমন্তি পুলিশকে জানান, পরে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার নাম করে ট্রাঙ্কটি গাড়িতে তুলে নিয়ে অন্য কোথাও ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আগেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে ঘটনা সামনে চলে আসে।

সোমবার দুজনকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়। তাদেরকে ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন আদালত। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।