দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ আদায়
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে শুক্রবার দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে। ভোলা, মৌলভীবাজার, পিরোজপুরের চাঁদপুর, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, পিরোজপুর, মুন্সীগঞ্জ, বরিশাল, লালমনিরহাটসহ দেশের কয়েকটি স্থানে সকালে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর এক দিন পরই মূলত আমাদের দেশে পালন করা হয় ঈদ। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কিছু পীরের অনুসারীরা সৌদি আরবকে তীর্থভূমি মনে করে তাদের সঙ্গে একই দিন ঈদ পালন করে থাকেন।
ভোলা
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ভোলার পাঁচ উপজেলার ২০ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রামের ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায় জেলার বোরহানউদ্দিনের টগবী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামে। সেখানে পাঁচ শতাধিক মুসল্লি জামাতে শরীক হন।
এ ছাড়া সুরেশ্বর দরবারে পীর, মাইজ ভান্ডারীয়া ও সাতকানিয়া অনুসারীরা পৃথক পৃথকভাবে ভোলা জেলা সদরের ইলিশা, তজুমদ্দিনের শিবপুর, সম্ভুপুর, লালমোহন পৌর এলাকা এবং চরফ্যাশনের জিন্নাগর ইউনিয়নের মোট ২০টি গ্রামের মানুষ ঈদ উযদাপন করেন।
এদিকে, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট মেলার পরসা বসিয়েছেন এলাকাবাসী। ঈদুল ফিতর উদযাপন ঘিরে এসব এলাকায় চলছে উৎসবের আমেজ।
বোরানউদ্দিনের সুরেশ্বরী এলাকার অন্যতম মৌলভী মজনু মোল্লা বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবের মক্কা, মদিনার সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও রোজা ও ঈদ পালন করেছি।’
মৌলভীবাজার
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করলেন জেলার শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা। নামাজ শেষে তারা দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে মোনাজাত করেন। মোনাজাতে ইমামতি করেন আলহাজ আব্দুল মাওফিক চৌধুরী (পীর সাহেব উজান্ডি)।
শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের সার্কিট হাউস এলাকার আহমেদ শাবিস্তা নামক বাড়ির ছাদে এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে বিভিন্ন এলাকার নারী-পুরুষ অংশ নেন।
বৃষ্টিতে ভিজে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। এ ছাড়া জেলার কুলাউড়া, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গলেও পৃথক পৃথক ঈদের নামাজ আদায় করার খবর পাওয়া গেছে।
নামাজ শেষে আলহাজ আব্দুল মাওফিক চৌধুরীর (পীর সাহেব উজান্ডি) অনুসারী হাফেয মাজেদুল হক সজীব দ্য রিপোর্টকে জানান, গত ৭ বছর ধরে তারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখেই এই নামাজ আদায় করছেন।
চাঁদপুর
চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে শুক্রবারউদযাপন করা হচ্ছে ঈদুল ফিতর। জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলীপুর, বলাখাল, মনিহার, ভোলাচোঁ, জাক্নি, প্রতাপপুর, সোনাচোঁ ও বাসারা; ফরিদগঞ্জ উপজেলার উভারামপুর, উটতলি, মূলপাড়া, বদরপর, মুন্সিরহাঁট, আইটপাড়া, বালুথুবা, কাইতাপাড়া, সুরঙ্গচর, নূরপুর, ষোলা, সাচনমেঘ, হাঁসা ও গোবিন্দপুর; মতলবের দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী ও শাহরাস্তি এবং কচুয়ার কয়েকটি গ্রামে শুক্রবারঈদ উদযাপিত হয়।
১৯২৮ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পীর আল্লামা ইসহাক এ এলাকায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন শুরু করেন।
চট্টগ্রাম
দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৩০টি গ্রামে শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে। সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে অন্যান্য বছরের মতো এবারও আগাম ঈদ পালন করছে। তারা এক দিন আগে থেকে রোজা রাখাও শুরু করেন।
শুক্রবার সকাল ৯টায় ঈদের নামাজ আদায়ের আয়োজন করে দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ। পীর হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আরেফুল হাইয়ের ছেলে নামাজে ইমামতি করেন।
চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা মির্জাখীল দরবারের অনেক মুরিদ ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য দরবার শরীফে আসেন। সাতকানিয়ার মির্জাখীল, গাটিয়াডেঙ্গা, পশ্চিম বাজালিয়া, মাদার্শা, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিরজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, শেখের খীল, ডোংরা, ছনুয়া, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, লোহাগাড়ার পুটিবিলা, কলাউজান, বড়হাতিয়া, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, রাউজান, ফটিকছড়ির কিছু এলাকাসহ চট্টগ্রামের ত্রিশটি গ্রামের মানুষ শুক্রবারঈদুল ফিতর উদযাপন করছে।
এ ছাড়াও বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও হ্নীলার বেশ কয়েকটি গ্রামের কিছু লোক একই সময়ে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।
বরিশাল
বরিশাল বিভাগের প্রায় ২০ হাজার পরিবার শুক্রবার ঈদ উদযাপন করছে। এসব পরিবার চট্টগ্রামের চন্দনাইশ কাঞ্চননগর পশ্চিম এলাহাবাদ জাহাগীরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী।
মুন্সীগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আনন্দপুর, শিলই, নায়েবকান্দি, আধারা, মিজিকান্দি, কালিরচর ও বাঘাইকান্দির একাংশসহ সাত গ্রামে শুক্রবার ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। শিলই ঈদগাঁহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের নামাজ।
লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দ্রাহবি মৌজার হাড়িশ্বরের মুন্সিপাড়া, চন্দ্রপুরের বালাপাড়া ও পানি খাওয়ার ঘাট গ্রামে আলাদাভাবে শুক্রবার পালন করা হচ্ছে ঈদুল ফিতর। কয়েকবছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করছেন কিছু মতানুসারী।
এ ছাড়া দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থান যেমন- চিরিরবন্দর, খানসামা ও বীরগঞ্জ উপজেলায়ও শুক্রবার সকালে ঈদের জামাত অনু্ষ্ঠিত হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন