দেশে টাকা পাঠানো নিয়ে আতঙ্কে প্রবাসীরা
নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি অ্যাকাউন্ট থেকে এখনো বেহাত থাকা আটশো কোটি টাকা পুরোপুরি ফিরে পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে ব্যাংকে। কর্মকর্তারা বলছেন, লুট হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বত্মক চেষ্টা চলছে। এর পেছনে কাজ করছে শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা।
এদিকে ব্যাংকের টাকা লুট হয়ে যাওয়ায় আতঙ্ক কাজ করছে প্রবাসীদের মধ্যে। ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানো নিয়ে সংশয় এবং সন্দেহে ভুগছেন তারা। দেশে টাকা পাঠানো নিয়ে সংশয় বোধ করছে সৌদি আরবে থাকা সোলেইমান নামে এক প্রবাসী।
এ ব্যাপারে তিনি জানান, গলদটা বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভারেরই। হ্যাকাররা দেশের বাইরে থেকে এ সার্ভারের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নামেই অর্থ নিজেদের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছে। যদি আমরা দেশে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাই তাহলে সেটা আবার হ্যাকাদের হাতে চলে যেতে পারে। মাঝখানে বিপদে পড়বো আমরা (প্রাবাসীরা)।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির কারণে মূলত আমাদের ভিতরে এ সংশয় কাজ করছে। তাছাড়া আমরা অন্য উপায় বেছে নিয়েছি। তা হলো বিদেশে বসে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাবো এতে করে টাকা অন্যদের হাতে না যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকছে। হুণ্ডি ব্যক্তিদের কিছু কমিশন দিয়ে দিলে সব কিছু মিটমাট হয়ে যায়। এবং হুণ্ডি ব্যক্তিরা টাকা বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দেয়।
প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসির ডায়লগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জানান, একজন রেমিটার বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠাবে সেই জন্য তার নিজস্ব অর্থের অনেক ঝুঁকি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এ ব্যাপারে ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রতিনিয়ত আইটি বা সাইবার সেক্টরের প্রতি কড়া নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী সব রাষ্ট্রয়াত্ত্ব ব্যাংক এবং প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর প্রতি সব সময় এ আইটি সেক্টর যেন ঝুকি মুক্ত থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রবাসী ব্যক্তিরা দেশে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া যেটি ধারণা করছে সেটি আমলে অমূলক। হুণ্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে সেটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির সম্ভবনা থাকে। সামগ্রীক ভাবে এ ধরনের সমস্যা কাটানোর জন্য সঠিক পন্থায় সঠিক ভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানো উচিত। তাছাড়া হুণ্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানোর পিছনে ব্যয় অনেক বেশি। তবে সরকারি চ্যানেলে টাকা পাঠানোটাই অনেক বেশি নিরাপদ এবং ঝুঁকির পরিমাণও কম বলে তিনি মনে করেন।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক কয়েক জন ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে এ প্রসঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা হ্যাকারদের মাধ্যমে লুট হয়ে যাওয়ায় প্রবাসীদের ভিতরে এ ধরনের সংশয় কাজ করছে। তবে আশা করছি অতি শীগ্রই তাদের এ ধরনের মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটবে।
তারা জানান, প্রাবাসীরা হুণ্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠালে এতে করে সরকারের রেমিটেন্স কমার আশঙ্কা আছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় হতে পারে। তবে আমরা আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব প্রবাসীরা এ সংশয় থেকে বেড়িয়ে আসবে। এবং দেশে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দেশের কল্যাণ বয়ে আনবে।
তারা আরো বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে সচল রাখার পিছনে প্রবাসীদের বিরাট অংশগ্রহণ ও ভূমিকা অনেক বেশি। একটি দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তিই হলো তারা। তবে আমরা চাই প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাবে এবং দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখবে। হুণ্ডির কথা চিন্তা না করে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে উৎসাহ বাড়াতে হবে। এতে টাকা লুট হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকবে না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
যে কারনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সম্মেলন স্থগিত
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে মাত্র এক সপ্তাহের নোটিশে যুক্তরাজ্য বিএনপিরবিস্তারিত পড়ুন
ইউরোপ থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে বাড়ছে চাপ !
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিদের ফিরিয়েবিস্তারিত পড়ুন
বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার শ্রমিক নেবে সৌদি আরব
চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পেশার প্রায় ৩ হাজারবিস্তারিত পড়ুন