রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

ধর্ষণের পর সালিশির জেরে আত্মঘাতী তপনের স্কুলছাত্রী

পালাগান শুনতে গিয়ে ধর্ষিত হল অষ্টম শ্রেণির তিন কিশোরী। পরের দিন তা নিয়ে বসে সালিশি সভা। সেখানে ‘মিটমাট’ করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলে এক কিশোরী সেই রাতেই আত্মহত্যা করে। আর এক কিশোরী বিষ খেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। শুক্রবারই বালুরঘাট হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে সে।

ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পরে এ দিনই দুই অভিযুক্তকে পুলিশ ধরলে বিষয়টি সামনে আসে। এই ঘটনা কামদুনি, কাকদ্বীপের পাশে টেনে আনল দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের নাম। একই সন্ধ্যায় মাজিখণ্ডা এলাকার তিন স্কুলছাত্রীর ধর্ষণের ভয়াবহতাকে আরও তীব্র করল পুলিশ ও স্থানীয় নেতাদের মদতে সালিশি সভার অভিযোগ। মৃত কিশোরীর বাবার অভিযোগ, ধর্ষণের নালিশ করতে থানায় গেলে তৃণমূলের নেতা, পুলিশ-সহ অনেকে তাঁকে সালিশিতে মিটিয়ে নেওয়ার চাপ দেয়। তাঁর দাবি, সুবিচার না পাওয়ায় ভেঙে পড়ে তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। দোষীদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।

তৃণমূলের নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির অন্যতম কর্মাধ্যক্ষার স্বামী হোসেন মণ্ডল সালিশির কথা অস্বীকার করেননি। তবে তাঁর দাবি, গ্রামের মানুষের দাবিতেই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটমাট করতে উদ্যোগী হন তিনি। আর পুলিশের বক্তব্য, ধর্ষণের পরেই কিশোরীদের আত্মীয়েরা থানায় গেলেও, মামলা না করার আর্জি করেন তাঁরাই। সালিশির কথা অবশ্য তিনি জানেন না বলেই দাবি জেলার পুলিশ সুপারের।

শরীরে-মনে বিধ্বস্ত দুই নির্যাতিতা কিশোরীকে ‘চাইল্ড লাইন’-এর তত্ত্বাবধানে রেখে কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে। ধৃত দুই অভিযুক্ত একাদশ শ্রেণির ছাত্র। আদালতের নির্দেশে তাদের জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়েছে। তৃতীয় জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

কী ঘটেছিল মাজিখণ্ডায়? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১১ ডিসেম্বর ওই এলাকায় পালাগানের আসর বসেছিল। সেখানে ওই তিন কিশোরীও গিয়েছিল। তিন অভিযুক্ত কিশোর ওই কিশোরীদের বাইকে তুলে ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে তারা তিন কিশোরীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ওই সময়ে তাদের আর্তনাদ শুনে এলাকার লোকজন ছুটে যান। অভিযুক্তেরা মোটরবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়।

পর দিন ১২ ডিসেম্বর এলাকায় সালিশি বসে। সেখানে টাকা নিয়ে ঘটনাটি মিটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁরা জানান, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষার স্বামী হোসেন মণ্ডলই সালিশিতে মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনিই মেয়েদের ভবিষ্যতের প্রশ্ন তুলে বিষয়টি আপসে মেটানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।
হোসেনের অবশ্য দাবি, ‘‘অভিযুক্ত ও অভিযোগকারিণীরা পূর্ব পরিচিত। ফলে বিষয়টি লোক জানাজানি হোক চাননি কিশোরীদের পরিবার। গ্রামের অনেকেই চেয়েছিলেন, আলোচনায় বিষয়টি মিটে যাক। কেউ সমস্যায় ডাকলে জনপ্রতিনিধি হিসেবে যেতেই হয়। কাজেই সালিশি সভা ডেকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।’’

সালিশির পরে সেই রাতেই ওই তিন নির্যাতিতা ছাত্রীর এক জন গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়। আর এক ছাত্রী বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তপন ও পরে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পরই মৃতার বাবা তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তপন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার পরে ফাঁড়িতে নির্যাতিতাদের বাড়ির লোকজন গেলেও অভিযোগ না নিয়ে কেন সালিশি সভা করা হল? কেনই বা তৃণমূল নেতাদের কথায় টাকা নিয়ে বিষয়টি মেটানোর পক্ষে পুলিশও সায় দিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠছে? দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘থানায় সকলে গিয়েছিলেন। কিশোরীদের বাড়ির লোকজন মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা জানিয়ে গোড়ায় মামলা না করতে অনুরোধ করেছিলেন বলে শুনেছি। সালিশি সভা হয়েছিল বলে অভিযোগ বাড়ির লোকজন করেননি। তবে অভিযোগ যখন উঠছে তখন নিশ্চয়ই খোঁজ নেব।’’ তিনি বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ শুনেও পুলিশ তা নথিভুক্ত করে পদক্ষেপ না করে থাকলে সেটা অন্যায়। তেমন হলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

তপনের তৃণমূল বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা দাবি করেছেন, ধর্ষণের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তাঁর সাফাই, ‘‘অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে আজকাল যা হয়, তেমনই ঘটনা হয়েছিল। সিভিক পুলিশ মেয়েদের উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে গেলে উভয় পক্ষের ছেলেমেয়ের অভিভাবকেরা এসে বিষয়টি মিটিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।’’ তবে এক ছাত্রী কেন আত্মহত্যা করল? এবং অন্য জন আত্মহত্যার চেষ্টা করল? বিধায়কের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘নির্যাতিতাদের তরফে
তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছিল। ওই টাকা না পেয়ে ঘটনার চার দিন পর অর্থাৎ ১৬ ডিসেম্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।’’

মৃতার বাবা তাঁর লিখিত অভিযোগে তাঁর মেয়ে ও তার দুই বন্ধুর উপর ধর্ষণ, ও তারপর অপমানে আত্মহত্যার অভিযোগ করেছেন। টাকা চাওয়ার অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর যুক্তি, ‘‘একে মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। তার উপরে সালিশি সভায় চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে ঘাবড়ে গিয়ে অভিযোগ করতে দেরি করে ফেলেছি।’’ আরও বলেন, ‘‘মেয়ে বাড়ি ফিরে সব জানানোর পর দিনই থানায় যাই। সেখানে অনেকে এসেছিলেন। তৃণমূলের নেতা, পুলিশও ছিল। তাঁদের অনেকে মিটিয়ে নিতে নির্দেশ দেন। আমরা ঘাবড়ে যাই। ওই রাতে আমার মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সুবিচার না পাওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে মেয়ে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আমি মেয়ের অপমৃত্যুর জন্য দায়ী সকলের শাস্তি চাই।’’

কংগ্রেসের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের দাবি, ‘‘সালিশি সভায় জড়িত তৃণমূল নেতা ও পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘটনার তদন্ত চেয়ে আন্দোলনে নামব।’’ তপন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মুকুল দে বলেন, ‘‘অভিযোগ গুরুতর। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের

টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন

আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?

ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন

  • বিকিনি ছবি পোস্ট করে আলোচনায় আসার চেষ্টা!
  • অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে কঠোর হচ্ছে ভারত
  • ফাঁকা ঘরে একা পেয়েছিলেন নিজের বউদিকে, অতঃপর যা ঘটল তা কল্পনার বাহিরে ….
  • মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে নগ্ন করে পিটিয়ে হত্যা
  • দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান, যে ৫ কারণে ‘চ্যাম্প’ দেখবেন
  • নিজের ছেলের সঙ্গে ছবি তুলে মিডিয়ার ‘ট্রোল’ হচ্ছেন শ্রাবন্তী
  • বিয়ের পরেই শ্বশুরবাড়িতে এমন কাজ করলেন নববধূ যে, লজ্জায় পড়লেন পরিবারের সকলে
  • দুই সন্তানের জীবন বাঁচাতে পুলিশের দ্বারস্থ মা
  • বন্ধক রাখা ছেলেকে ছাড়ানোর টাকা জোগাড় করতে গিয়ে নিখোঁজ মা
  • স্ত্রী’কে বের করে দিয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে লাগাতার ধর্ষণ করল শিক্ষক
  • আবুল খায়ের গ্রুপে আকর্ষণীয় পদে চাকরির সুযোগ
  • ঘুম থেকে ডেকে না দেওয়ার ‘অপরাধে’ রেলকে ৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ