ধান কাটা শ্রমিকের হাতে কাজ নেই
এই সময়টায় হাওরে ধান কাটতে যান শ্রমিকেরা। কিন্তু হাওরে এবার ফসল নেই। তলিয়ে গেছে। তাই কিশোরগঞ্জের ধান কাটা শ্রমিকদের দুর্দিন যাচ্ছে।
হাওরাঞ্চলে ধান কাটতে কিশোরগঞ্জের সদর, পাকুন্দিয়া, হোসেনপুর, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী তাড়াইলসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শত শত শ্রমিক যান। হাওরাঞ্চলের ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলীসহ বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটেন তাঁরা। প্রতিদিন নৌকায় ও ট্রাকে তাঁদের যেতে দেখা যায়।
বছরের অন্যান্য সময় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন কৃষকেরা। কিন্তু এ সময় থাকে বাড়বাড়ন্ত। মজুরি পান ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এই সময়ের অপেক্ষায় থাকেন শ্রমিকেরা। তবে এবার দৃশ্যটা আলাদা।
কিশোরগঞ্জ জেলার শ্রমিক হাটগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালী বাজারের শ্রমিক হাট। এখান থেকেই ধান কাটার জন্য শ্রমিকেরা আশপাশের হাওরে যান।
সরেজমিনে গতকাল রোববার সকাল আটটার দিকে মরিচখালী বাজারের শ্রমিক হাটে গিয়ে ভিড় চোখে পড়েনি। কাজা না পেয়ে ৮-১০ জন শ্রমিক অসহায় হয়ে বসে আছেন।
সুলতানপুর গ্রামের শ্রমিকদের সরদার নূরুল হক বলেন, ‘ভাই, এবার কৃষকদের সঙ্গে আমাদেরও সর্বনাশ হয়ে গেছে। আজকে চার দিন ধরে আমি এখানে আসছি। এক দিনও কাজ পাচ্ছি না। পরিবারের সাত সদস্যকে নিয়ে আমি খুব কষ্টে দিন যাপন করছি।’
শ্রমিক জামাল মিয়া বলেন, ‘১৫-২০ দিন আগে পানি বাড়ার সময় ১০ হাজার টাকায় প্রতি কানি জমি কাটছি। এখন সমপরিমাণ জমি কৃষকেরা মাত্র দুই হাজার টাকা বলে।’
মো. ফখর উদ্দিন বলেন, ‘তিন দিন আগে কাজ পেয়েছিলাম। সেদিন সবার সঙ্গে আমার আড়াই শ টাকা রোজ পড়েছিল। গত পরশু ও গতকালকে কাজ না পেয়ে ঘুরে যাই। আজকেও মনে হচ্ছে ঘুরে যেতে হবে।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘তিন দিন পরে আজ আসছি। ঘরে আমার চাল নাই। আজকে কাজ না পেলে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে উপবাস থাকতে হবে।’
জাকির হোসেন নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘হাওরের ধান তলিয়ে যাওয়ার পর থেকে ৮-১০ দিন ধরে ঘুরছি। কোনো কাজ পাচ্ছি না। আজকেও লক্ষণ ভালো না।’
তবে এলাকার কৃষক আবদুর রাশিদ ও আশরাফ উদ্দিন বললেন ভিন্ন কথা। তাঁরা জানালেন, একেকজন ধান কাটা শ্রমিককে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা রোজ দিতে হয়। যেসব কৃষকের উঁচু এলাকায় কিছু ধান রয়েছে, তাঁরা এত খরচ দিতে চান না। একজন শ্রমিক সারা দিনে তিন থেকে চার মণ, অর্থাৎ এক কাঠা জমির ধানও কাটতে পারে না। শ্রমিকের মজুরির সঙ্গে অতিরিক্ত যোগ করতে হয় নৌকা, ট্রলি ভাড়াসহ ধান মাড়াইয়ের মেশিনের খরচা। সব মিলে কৃষকের খুব বেশি লাভ থাকে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকালের হিসাব অনুযায়ী জেলায় মোট ৬০ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে ক্ষতি হয়েছে ৮৫৮ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার ৪০০ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৬১।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন