নকল ওষুধ তৈরির কারখানার খোঁজ, খুলনায় উদ্বেগ-বিভ্রান্তি

খুলনায় এসিআই, অফসোনিন, স্কয়ার, এসকেএফসহ বিভিন্ন কোম্পানির নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়ার খবরে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন খুলনা অঞ্চলের ওষুধ ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। জেলার রূপসা উপজেলায় শাহনেওয়াজ সি ফুডস লিমিটেডের (মাছ কোম্পানী) মধ্যে নামী দামী এসব কোম্পানির নকল ওষুধ তৈরি এবং এতে কাজী শাহনেওয়াজের মত শিল্পপতির জড়িত থাকার ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজকে মঙ্গলবার বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গত সোমবার বিকালে জেলার রূপসায় অবস্থিত শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজের মালিকানাধীন শাহনেওয়াজ গ্রুপের মাছ কোম্পানি ‘শাহনেওয়াজ সি ফুডস’ এর অভ্যন্তরে র্যাব-১ ও ৬ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এসিআই ও এসকেএফ কোম্পানির নাম ব্যবহার করা প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার পিস নকল এন্টিবায়োটিক “ফ্লুক্লক্স ক্যাপসুল”, এক বস্তা রেনিটিড ট্যাবলেট, ৪ বস্তা বিভিন্ন নামের ওষুধ, প্রায় আড়াই লাখ পিস ওষুধের খালি খোসা, নকল ওষুধের কাঁচামাল, চালের গুড়া, কসমেটিক, কেমিক্যাল, পাউডারসহ কয়েক কোটি টাকার উপকরণ উদ্ধার করা হয়।
এসময় শাহনেওয়াজ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খুলনা চেম্বারের সাবেক সহ-সভাপতি কাজী শাহনেওয়াজসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে খুলনায় বিশাল নকল ওষুধ তৈরির কারখানা আবিস্কারের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন খুলনার ওষুধ ব্যবসায়ী, ক্রেতা সাধারণসহ সকলেই। বাজারে তার কারখানার নকল ওষুধ রয়েছে কিনা এটাই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া র্যাব-১ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ফিরোজ আহম্মেদ জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ঢাকার মিটফোর্ডসহ বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে এই চক্রটির যোগাযোগ রয়েছে। তারা ওই সব হাসপাতাল থেকে অর্ডার নিয়ে গোপনে নকল ওষুধ তৈরি ও সরবরাহ করে। অভিযান শুরুর আগেই ওই চক্রের সবাই পালিয়ে যায়। র্যাব-৬-এর পরিালক রফিকুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, সমাজের এলিট শ্রেণির লোকেরা যদি এ ধরনের ভয়ঙ্কর কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়।
এ ব্যাপারে খুলনা চেম্বারের সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। কাজী শাহনেওয়াজের কাছ থেকে ওই নকল কারখানার মালিক ভবনটি ভাড়া নেন। এই বিষয়টি তদন্ত করছে র্যাব ও পুলিশ। তদন্ত শেষ না হলে কিছু বলা যাবে না।
খুলনার ড্রাগ সুপার মাহমুদ হোসেন বলেন, কাজী শাহনেওয়াজ নকল ওষুধ তৈরি ও সংরক্ষণ করে যে অপরাধ করেছেন তা’ আদালতে প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রয়েছে।
বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও খুলনা জেলা সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মোজাম্মেল হোসেন বলেন, নকল ওষুধের কারণে আমরা ব্যবসায়ীরা দারুণভাবে বিভ্রান্ত, বিব্রতকর ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছি। এ ধরনের নকল ওষুধ যে বা যারা সরবরাহ করে সাধারণ মানুষের জীবন সংকটাপন্ন করে তুলছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম লেন, কাজী শাহনেওয়াজকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে তিনি ছাড়াও এই মামলায় আরও ৬/৭ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে। আসামি শাহনেওয়াজকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, আদালত খুললে এব্যাপারে পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন

ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন

ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন