নতুন পদ্ধতিতে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন তুলতে না পারার নেপথ্যে
এতোদিন গেজেট প্রকাশ নিয়ে দেরি হওয়ায় প্রশাসনে অসন্তোষ বাড়ছিল। নানা মারপ্যাচে আটকে যাচ্ছিল নতুন পে- স্কেল। ফলে সরকারি চাকরিজীবীরা ছিলেন হতাশায়। অবশেষে বহুল প্রত্যাশিত অষ্টম বেতন স্কেলের গেজেট প্রকাশ করে সরকার। গেল বছরের ৭ই সেপ্টেম্বর নতুন এ স্কেল ঘোষণার প্রায় তিন মাস পর এই গেজেট প্রকাশ পায়।
সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন কাঠামোয় ডিসেম্বরের বেতন পাওয়ার কথা। কিন্তু অনলাইনে পে-ফিক্সেশন নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় চাকরিজীবীদের বেশির ভাগই এখনো ডিসেম্বরের বেতন তুলতে পারেননি।
সূত্র জানায়, নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে। বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হলেও তা নিয়ে এখনো জটিলতা দূর হয়নি। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে।
একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিসহ বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারাও তাদের দাবি পূরণে আন্দোলন করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত অষ্টম পে-কমিশনের প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তরের পর তা পর্যালোচনা করা হয়। এরপর তা সচিব কমিটিতে পাঠানো হয়। সচিব কমিটির সুপারিশসহ নতুন পে-স্কেল মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে উপস্থাপনের পর তা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ে দেওয়ার আগে অর্থমন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন বিভাগে পাঠানো হয়।
সেখানে পে-স্কেল চূড়ান্ত করার পরিবর্তে বেশ কিছু জটিলতা সৃষ্টি করা হয়। এক পর্যায়ে অর্থমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখোনেও নানা অজুহাতে দেরি করানো হয়। এরই মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠির স্বার্থ সংরক্ষণের কারণে পে-স্কেল নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। আর এর পুরো দায় পড়ছে অর্থমন্ত্রীর ওপর। অথচ অর্থমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী নতুন পে-স্কেলে সব শ্রেণির সরকারি চাকুরজীবীর স্বার্থ সংরক্ষণ হওয়ার কথা।
সরকারি চাকরিজীবীরা অনলাইনে নতুন পে-স্কেল ফিক্সেশনের মাধ্যমে তাদের বেতন পাওয়ার কথা। কিন্ত অনলাইনে বেতন ফিক্সেশন করতে গিয়েও নানা জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছেন। বিশেষ করে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী বেতন ফিক্সেশন করার বিধান রাখা হয়েছে। আর এখানেই জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। চাকরিতে যোগদানের সময় ব্যক্তিগত যে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য, শিক্ষাগত সনদে নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখসহ অন্যান্য তথ্যের মিল না থাকায় এ জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে বেশিরভাগ চাকরিজীবী এখনো ডিসেম্বরের বেতন তুলতে পারেননি।
অনলাইনে ফিক্সেশন নিয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে অনলাইন ফিক্সেশন ব্যবস্থা উদ্বোধনের দিন অর্থসচিব সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অনলাইনে বেতন ফিক্সেশন করতে হবে এমন কথা আগে থেকেই অবহিত করা হয়েছিল। যাদের এমন সমস্যা রয়েছে- আশা করি তারা তাদের সব তথ্য সংশোধন করে নিয়েছেন।
তবে গত কয়েকদিন অনুসন্ধান করে দেখা গেছে বেশির ভাগ সরকারি চাকরিজীবীই তাদের জন্ম তারিখ এবং অন্যান্য তথ্যগত ক্রুটির জন্য বেতন তুলতে পারছেন না। এখন পর্যন্ত মাত্র ২০ ভাগ সরকারি চাকরিজীবী ডিসেম্বরের বেতন তুলতে পেরেছেন বলে জানা গেছে। বাকি ৮০ শতাংশ তথ্যগত জটিলতার কারণে নতুন পদ্ধতিতে বেতন তুলতে পারছেন না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
উপদেষ্টা মাহফুজ: সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন,“গণ-অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থেবিস্তারিত পড়ুন
বড় ব্যবধানে অ্যান্টিগা টেস্টে হারলো বাংলাদেশ
চতুর্থ দিনেই অ্যান্টিগা টেস্টের ফল কোন দিকে গড়াচ্ছে, তা নির্ধারণবিস্তারিত পড়ুন
কিশোরগঞ্জে মা-বাবা ও ২ সন্তানের মরদেহ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় একই পরিবারের চার জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেবিস্তারিত পড়ুন