নতুন ভোগান্তি নগরীর বুকে উড়াল সড়ক জুড়ে!
যানজটের নগরী ঢাকায় ভোগান্তি কমানোর প্রত্যাশা নিয়ে সপ্তাহখানেক আগে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের সব দ্বার খুললেও নতুন নতুন জায়গায় যানজটে হতাশা দেখা দিয়েছে চলতি পথের যাত্রীদের। রাজারবাগ, শান্তিনগর, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, ওয়্যারলেস গেট ও বাংলামোটরে খোলা নতুন র্যাম্পগুলো দিয়ে উঠে অন্য কোনো র্যাম্প দিয়ে নামার সময়ই পড়তে হচ্ছে যানজটে। যানজট তৈরি হচ্ছে ফ্লাইওভারের নিচের সড়কেও।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বলছে, রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক উড়াল সড়কের কারণে বাংলামোটর ও কাকরাইলে যানজট আগের চেয়ে বেড়েছে। মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলামোটরে যেখানে উড়াল সড়ক শেষ হয়েছে, সেখানেই যানবাহনের জট। সেখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, এটা ভিআইপি রোড। এখানে রাস্তাটা সবসময় সচল রাখতে হয়। আগে মৌচাক-মগবাজারের দিক থেকে অল্পকিছু গাড়ি আসত। কিন্তু ফ্লাইওভার চালুর পর গাড়ির চাপ বেড়ে গেছে। গাড়ি দীর্ঘসময় আটকে থাকে।
তিনি আরও বলেন, প্রায়ই উড়াল সড়কের যানজট মৌচাক ছাড়িয়ে যায়। তারা হিমশিম খাচ্ছেন এ পয়েন্টের যানজট সামলাতে।
বাংলামোটরে গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকানি তাহের মল্লিক বলেন, উড়াল সড়ক হওয়ার আগে কেউ বুঝতে পারেনি কী সমস্যা হতে পারে। এখানে বাংলামোটর ও সোনারগাঁও লিংক রোডে প্রচুর রিকশা চলাচল করে। এমনিতেই যানজট লেগে থাকে।
যানজটে ক্ষুব্ধ অটোরিকশা চালক আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘ফ্লাইওবার তো আর আমারে জিগায়া বানায় নাই। আমারে জিগাইলে কইতাম ফ্লাইওভারটা বাংলামোটর সিগন্যালটা পার কইরা দিত। হেইপারে নিয়া একটা মুখ সোজা সোনারগাঁও রোড আরেকটা মুখ ডানে হোটেল সোনারগাঁওয়ের দিকে দিবার কইতাম। এইপারে আইটকা থাকা লাগত না। এইখানে নামাইয়া কোনো কাম হয় নাই।’
উদ্বোধনের পর থেকে ফ্লাইওভারটির বিভিন্ন পয়েন্টে চলাচলের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, শুধু বাংলামোটরের দিকে নয়, হলি-ফ্যামিলির সামনে যানজটে পড়তে হয়। এছাড়া রামপুরা, মগবাজার থেকে এসে রাজারবাগ নামার পথেও পড়তে হয় যানজটে।
ফ্লাইওভারে এসে বাংলামোটরে নামলে যানজটে পড়তে হয় বলে এখন আর ফ্লাইওভারে ওঠেন না গোড়ানের বাসিন্দা মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ ভূঁইয়া। বাংলামোটরের একটি ব্রোকারেজ হাউজের এ কর্মকর্তা বলেন, সবগুলো র্যাম্পের মুখে সিগন্যাল এই ফ্লাইওভারের একটি বড় দুর্বলতা। আমি যেখানে নামব সেখানেই জ্যাম লাগে, যেদিক দিয়ে উঠব সেখানেও জ্যাম লাগে। এ কারণে উঠি না। এ ফ্লাইওভারটার মূল সমস্যা হলো যেসব জায়গায় ওঠা-নামার ব্যবস্থা সেসব জায়গা খুবই ক্রাউডি। নেমেই সিগন্যালে পড়তে হয়।
ফ্লাইওভার দিয়ে আসা গাড়ির চাপের পাশাপাশি সড়কের পাশের গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকানগুলোতে আসা যানবাহন সড়কে পার্ক করার কারণে এই এলাকায় যানজট বাড়ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার রিফাত রহমান শামিম বলেন, যে গাড়িগুলো রাজারবাগ-মৌচাক হয়ে ৩/৪টি সিগন্যাল পেরিয়ে বাংলামোটর পর্যন্ত আসত সেগুলো এখন ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে সিগিন্যাল ছাড়াই অল্প সময়ে বাংলামোটরের দিকে চলে আসছে। যে কারণে এখানে চাপ বেড়েছে ফলে যানজট তৈরি হচ্ছে।
উড়াল সড়কটির বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং প্রকল্পের পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল বলেন, ফ্লাইওভারের সবগুলো নামার পথে তেমন একটা যানজট নেই। তবে বাংলামোটর সিগন্যালের আগ পর্যন্ত যানজট কিছুটা সৃষ্টি হচ্ছে। এটা আসলে ফ্লাইওভারের জন্য নয়। বাংলামোটরের সিগন্যালটি খুবই ব্যস্ত সিগন্যাল। এখন ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াতের সুবিধার কারণে চাপ আরও বেশি হয়েছে। যে কারণে যানজট দেখা দিচ্ছে।
ফ্লাইওভার হলেই যে যানজট কমে যাবে এটা ঠিক নয়, যানজট কমানোর জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপের মধ্যে ফ্লাইওভার একটি পদক্ষেপ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভারতের সঙ্গে গোপন চুক্তি প্রকাশের আহ্বান হাসনাতের
আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ভারতের সব গোপন চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশেরবিস্তারিত পড়ুন
দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেবিস্তারিত পড়ুন
দেশবাসীকে সংযম দেখানোর আহ্বান তারেক রহমানের
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনারবিস্তারিত পড়ুন