শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

নবীগঞ্জে ত্রিভুজ প্রেমের কারণে কলেজ ছাত্রী তন্নীর মৃত্যু !

নবীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্রী তন্নী হত্যাকান্ড নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে তোলপাড় চলছে। হত্যার নেপথ্যে ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী কিনা এ নিয়েও থেমে নেই বিতর্ক। বর্তমান অবস্থায় তদন্তে ও বিভিন্ন আলামত সংগ্রহে প্রাথমিক অনেকেই ধারনা করছেন রানু রায়ই মূল হত্যাকারী।

গতকাল শুক্রবার পুলিশ রানুর রায়ের ঘরের তালা ভেঙ্গে তল্লাশী কালে কিছু ডিস লাইনের তার, ছটের খালি বস্তা এবং ঘরের সন্দেহজনক একটি তোষক আলামত হিসেবে জব্দ করে নিয়ে আসা হয়েছে। জব্দকৃত বস্তা ও ডিস লাইনের তারের সাথে মৃত তন্নী’র উদ্ধারের সময় ব্যবহৃত বস্তা ও তারের মিল রয়েছে। তবে জব্দকৃত সরঞ্জামাধি রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরন করা হবে বলে জানাগেছে। কিন্তু নিখোঁজের ৭ দিন ও লাশ উদ্ধারের ৪ দিন অতিবাহিত হলেও হত্যাকান্ডে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। যদিও হন্য হয়ে খুজেঁও কোন সন্ধান মিলছে হত্যাকারীদের, এমন দাবী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার। কারন ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে তার দীর্ঘ মেয়াদী প্রেমিক রানু রায়।

তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ২টি বন্ধ, কিন্তু তার কল লিষ্ট সংগ্রহ করে তদন্ত হচ্ছে। রানুর সাথে তন্নীর এয়ারটেল টু এয়ারটেল সিম দিয়ে ৪শত বার মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। সর্বশেষ ১৭ তারিখ দুপুর ১টার সময় রানু তন্নীকে কল দেয়, অনেক সময় আলাপও হয় তাদের। রানু রায় গ্রেফতার হলে হত্যার সাথে কারা কারা জড়িত এবং মূল রহস্য উদঘাটন হবে বলে মনে করছেন সুশিল সমাজের লোকজন।

এদিকে লাশের বস্তায় মোড়ানো ছিল ডিস লাইনের তার, এএসকে কোম্পানির ওই তারের অবশিষ্ট অংশ রানু ঘর থেকে উদ্ধার করা পর হুবুহবু মিল পাওয়া গেছে। প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত রানুর ঘরে থাকা এই তার হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়াও রানুর পিতা একজন সবজি বিক্রেতা। একটি সবজির (আলুর) বস্তার ভিতরে তন্নীর লাশ ছিল নদীতে। লাশের বস্তা ও রানুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা বস্তারও হুবুহুবু মিল রয়েছে। এতেই অনেকটা প্রমান হয় রানু হত্যায় জড়িত। গত বৃহস্পতিবারে পুলিশ তন্নীর লাশের সাথে বস্তায় ব্যবহৃত ছামিন কোং ইট জয়নগর এলাকায় সৈয়দ জাহির মিয়ার বাড়ির নির্মাণ কাজের ব্যবহার কালে জব্দ করেছে।

নির্মম এ হত্যাকান্ড নিয়ে এখনো আলোচনার রেশ কাটেনি। লোকমুখে নানা জল্পনা কল্পনা রয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নং ২২ তাং-২১/০৯/২০১৬ইং দায়ের করেন নিহতের পিতা বিমল রায়। ঘটনার পর পরই পুলিশ এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে হানা দিয়েও তন্নীর প্রেমিক রানু রায় ও পরিবারের কোন সদস্যকে না পাওয়ায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোবারক হোসেন। পুলিশ এ পর্যন্ত তন্নীর বান্ধবী কান্তা রায়, আইসিটি সেন্টারের প্রিন্সিপাল ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও প্রশিক্ষিকা নাজনীন আক্তার এবং রানু রায়ের খালাতো ভাই ও ঘনিষ্ট বন্ধু রিংকু রায়’কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। কান্তা রায় তন্নীর ঘনিষ্ট বান্ধবী ও পাশের বাসার কাজল রায়ের মেয়ে।

আইসিটির প্রশিক্ষিকা নাজনীন আক্তার কুর্শি ইউপির বাজকাশারা গ্রামের আব্দুর রহিমের মেয়ে। সে দীর্ঘদিন ওই সেন্টারে টেইনার হিসেবে কর্মরত। সেই সুবাধে তন্নীর সাথে তার ঘনিষ্টতা। রিংকু রায় শিবপাশা এলাকার রথী রায়ের ছেলে এবং তন্নীর প্রেমিক রানু রায়ের খালাতো ভাই। যার সাথে গভীর সর্ম্পক রয়েছে রানু’র। স্থানীয় লোকদের অভিমত তন্নী বন্ধুদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে একাধীক সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল একটি সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধনে অংশ নেন হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক ডাঃ মুশফিক হোসেন চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, আওয়ামীলীগ নেতা শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজীসহ অনেকেই। এসময় তারা তন্নীর হত্যাকারীদের ৭২ ঘঁন্টার মধ্যে গ্রেফতারের জন্য আল্টিমেটাম দেন।

সুত্রে জানা যায়, তন্নী রায়ের পিতা বিমল রায়ের বাসায় ভাড়াটে থাকতেন রানু রায় ও তার পরিবার। সেই সুবাধেই একে অপরের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় মাস দেড়েক পুর্বে জয়নগর এলাকায় নতুন বাড়ি করে রানু রায় ও তার পিতা কানু রায় তন্নীর বাসা ছাড়েন। কললিষ্ট সুত্রে জানাযায়, কলেজ ছাত্রী তন্নী নিখোজের আগের দিন অথাৎ ১৬ই সেপ্টেম্বর রাতে রানু রায় তন্নীর সাথে প্রায় ৪৫ মিনিটেরও বেশী সময় কথা বলেন। সর্বশেষ তন্নীর মোবাইল নম্বারে প্রেমিক রানু রায় ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১.১৩ মিনিটে ফোন দিয়ে কথা বলে। আর তন্নী ওই দিনই দুপুর দেড়টার দিকে বাসা থেকে বের হয় আইসিটি কম্পিউটার সেন্টারে যাওয়ার কথা বলে। তবে প্রিন্সিপাল ফয়সল তন্নী আইসিটি ক্লাশে আসেনি বলে তার পিতাকে জানান। ফয়সল‘র সাথে আলাপকালে শতবাগ নিশ্চিত করে বলেন তন্নী ওই দিন ক্লাসে আসেনি। এমনকি অপরিচিত কেউ কল দেয়নি। এছাড়া তন্নীর ঘনিষ্ট বান্ধবী কান্তা রায়ে ভাষ্য মতে প্রেমিক রানু রায় তন্নীর অন্য কারো সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন সন্দেহ করে আসছিল। যা হয়তো স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারেনি প্রেমিক রানু।

ধারনা করা যাচ্ছে, এসব কারনেই রানু রায় তন্নী রায়কে ফোনে ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে ডেকে আনে এবং তন্নী’কে তার নিয়ন্ত্রনে রেখে তন্নীর পরিবার যাতে বুঝতে না পারে সে জন্য ওই দিন বিকালে তন্নীদের বাসার আশপাশে ঘুরাঘুরি করে বলে সুত্রে প্রকাশ। এদিকে তন্নী রায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো তা একমাত্র ঘনিষ্ট বান্ধবী কান্তা রায় ব্যতিত তার পিতা-মাতা এমনকি ভাই জানতো না। তন্নী নিখোজ হওয়ার পর কান্তা সে তথ্য তন্নীর পরিবারকে দেয়। নিখোজের দিন রাতেই তন্নীর পরিবার রানু রায়ের বাসায় যায়। সেখানে ওই সময় তন্নীকে পাওয়া যায় নি। কিন্তু পুলিশ মোবাইল কল লিষ্টের সুত্রধরে রানু রায়’কে ওই দিন গ্রেফতারের উদ্যোগ নিলে মানসম্মানের দিক বিবেচনায় তন্নীর পিতা তাতে সায় দেন নি বলে সুত্রে জানাগেছে। কে জানতো ভালবাসার মূল্য দিতে গিয়ে কলেজ ছাত্রী তন্নী রায় এমন নির্মম বলির শিকার হবে। অনেকের মতে ঘাতকরা তন্নী রায়’কে শারীরিক পাশবিক নির্যাতনের পর তাকে শ্বাসরোদ্ধ করে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বরাক নদীতে ফেলে দেয়। এর আগে তার হাত-পা ডিস লাইনের তার দিয়ে বেধেঁ বস্তায় বন্দি করে ছামির কোম্পানীর ইট ব্যবহার করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোবারক হোসেন জানান, প্রেমিক রানু রায়’কে গ্রেফতারের জন্য সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তার ব্যবহৃত ফোন বন্ধ থাকায় অবস্থান সম্পর্কে জানা যাচ্ছে না। তবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারসহ তাকে গ্রেফতারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে। এক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। অভিজ্ঞ মহলের দাবী রানু রায়’কে গ্রেফতার করলেই কলেজ ছাত্রী তন্নী রায় হত্যার নেপথ্যে কারণসহ থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে। এছাড়া রানু রায়ের পরিবারের লোকজনসহ তার ঘনিষ্ট আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের প্রতি নজরদারী রাখছে পুলিশ। এদিকে নিরীহ কলেজ ছাত্রী তন্নী রায়’র নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার পুর্বক দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবী করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী মরহুম জননেতা দেওয়ান ফরিদ গাজীর সুযোগ্য সন্তান দেওয়ান শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী। গতকাল শুক্রবার বিকালে তন্নীর বাসায় গিয়ে তার পিতাসহ পরিবারের লোকজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করে মিলাদ গাজী তন্নী হত্যাকান্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বেলা দেড় টার দিকে তন্নী রায় ইউ.কে আই,সিটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেড় হয়ে আর ফিরেনি। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করার ৩ দিনের মাথায় উক্ত কলেজ ছাত্রী তন্নী রায়ের বস্তাবন্দি লাশ নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের ৪ দিন অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেফতারের কোন খবর পাওয়া যায় নি। তবে পুলিশের দাবী জড়িতদের গ্রেফতারের জোর তৎপরতা চলছে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

বানিয়াচং উপজেলায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে, ৩ জনে মৃত্যু

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রেবিস্তারিত পড়ুন

হবিগঞ্জে ট্রাক-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে ৫ জন নিহত

হবিগঞ্জের মাধবপুরের হরিতলা বাদশা গেইট এলাকায় ট্রাক ও প্রাইভেটকার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন

‘ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে’ গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ‘ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে’ এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করাবিস্তারিত পড়ুন

  • অমতে বিয়ে ঠিক করায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
  • পাকা ফসল হারিয়ে কৃষকদের মাঝে হাহাকার
  • হবিগঞ্জের আলোচিত বাক প্রতিবন্ধী প্রেমিক জুটির বিয়ে
  • হবিগঞ্জে শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করলো জামাই, শাশুড়িসহ জখম ৪
  • আলহামদুলিল্লাহ… বোয়াল মাছে আল্লাহু
  • হবিগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহত ৫
  • হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনা, অজ্ঞাত পরিচয় বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
  • ৪৫ বছরেও স্বীকৃতি পাননি হবিগঞ্জের প্রথম শহীদ সালেহ উদ্দিন আহমদ
  • হবিগঞ্জের ট্রেনে কাটা পড়ে দুইজনের মর্মান্তিক মৃত্যু
  • ফেসবুকে ধর্মীয় উসকানির অভিযোগে হবিগঞ্জে কলেজছাত্র আটক
  • হবিগঞ্জে আবারো স্কুলছাত্রের গলা কাটা লাশ উদ্ধার
  • হবিগঞ্জে নির্মাণাধীন ফটক ভেঙে ১০ শ্রমিক আহত