নাঈম আশরাফের ‘অপকর্মের’ খতিয়ান
বনানীর হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণ মামলায় আলোচিত চরিত্র নাঈম আশরাফ ওরফে হালিম। সাধারণ ফেরিওয়ালার ঘরে জন্ম নেয়া নাঈম আশরাফ নিজের অপকর্মের খতিয়ানের বয়ান নিজেই দিয়ে চলেছেন। রিমান্ডে থাকা নাঈম আশরাফ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে চমক লাগানো নানা তথ্য দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাঈম আশরাফের নানা অপকর্মের কাহিনী দিন দিন বের হয়ে আসছে। মূলত নারী সাপ্লাইয়ের মাধ্যমে প্রভাবশালী-বিত্তশালীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে তার। নায়িকা, মডেলদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণেই তার ডাক পড়তো বিভিন্ন স্থানে। প্রতি রাতেই বাসা কিংবা হোটেলে নারী সাপ্লাইয়ের কাজ করতো নাঈম আশরাফ।
নাঈমের নারী কানেকশন ছিল বিপুল। কম বয়সী, চলচ্চিত্রে-মডেলিংয়ে নতুন- এরকম শতাধিক নারী কানেকশন ছিল নাঈমের। ডাকলেই তারা সাড়া দিতো। এ ছাড়াও ইয়াবা আসক্তি রয়েছে তার।
এর আগে নাঈম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে সাফাত জানিয়েছিলেন, বন্ধু নাঈম আশরাফের মাধ্যমেই সুন্দরী মডেলদের ডাকতেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই বন্ধুর মাধ্যমে তিনি সুন্দরী তরুণীদেরও সংগ্রহ করতেন। এরপর কোনো না কোনো হোটেলে পার্টির আয়োজন করতেন। আর সেখানেই রাতভর ফূর্তিতে মেতে উঠতেন তিনি। এসব পার্টি চলত গভীর রাত পর্যন্ত। কখনো কখনো ভোরের আলোয় ভাঙত তাদের সেই মিলনমেলা। সুন্দরী মডেল-আইটেম গার্লরা ছাড়াও মাঝে মধ্যে বিদেশি অতিথিদের আনা হয় এসব জলসায়।
জানা গেছে, এ রকম অনেক মডেল, নায়িকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি পাওয়া গেছে নাঈমের। নাঈম রিমান্ডে যাওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন তারা। এমনকি ওই নারীদের সান্নিধ্য যারা পেয়েছেন তাদেরও আতঙ্কের শেষ নেই। নাঈমের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল প্রতিষ্ঠিত অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিচ্ছেন যে, তার বিষয়ে কোনো তথ্য দিয়েছে কি-না।
জানা গেছে, অনেক নায়িকা, মডেলরা সহজেই তার প্রস্তাব লুফে নিতো। শুরুটা নিজইে করতো নাঈম। বন্ধুতার সুযোগ নিয়ে মিশতো। পরে কৌশলে নিয়ে যেত রাতের আড্ডায়। তারপর শুধু নিজে একা না। অন্যের মনোরঞ্জনের জন্য ব্যবহার করা হতো এ নারীদের। এজন্য নগদ টাকা থেকে দামি গিফটের ব্যবস্থাও থাকতো।
নাঈমের দেয়া তথ্যমতে, অনেক নায়িকা, মডেলরা পেশাগত কাজ করে যে টাকা আয় করেন তার চেয়ে বেশি টাকা আয় হতো তার অ্যাসাইনমেন্টে। টাকার জন্য তারা নিজেরা স্বেচ্ছায় নাঈমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তবে ব্যতিক্রমও ঘটেছে কয়েক নারীর ক্ষেত্রে। নাঈমের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তারা সরে গেছেন। তাদের একজন জনপ্রিয় একটি ফিল্মের নায়িকা। তিনি এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স করেছেন।
গত বছরের মার্চে তার সঙ্গে তুমুল আড্ডা দিয়েছিল নাঈম। একপর্যায়ে রাত কাটানোর প্রস্তাব দেয় তাকে। কিন্তু ওই নায়িকা চটে যান। রাজি হননি তিনি। শুরুতে নায়িকা-মডেলদের কাছে নিজেকে বিত্তশালী হিসেবে উপস্থাপন করতো নাঈম। এজন্য নিজের হালিম নাম পরিবর্তন করে নাঈম আশরাফ কখনও কখনও রোমান নামে পরিচয় দিতো। জীবনে অনেক কিছু করলেও এই মামলার আগে কোনো নারী তার বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ করেনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, মামলার তদন্তের প্রয়োজনে তাকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এই ঘটনা ছাড়াও নানা তথ্য দিয়েছে নাঈম আশরাফ। তার দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানান তারা।
উল্লেখ্য, গত ২৮শে মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গত ১৭ই মার্চ মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নাঈম আশরাফকে। পরদিন থেকে সাতদিনের রিমান্ডে আনা হয় তাকে। নাঈমের প্রকৃত নাম হালিম। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার গান্দাইল গ্রামের ফেরিওয়ালা আমজাদ হোসেনের পুত্র হালিম ঢাকায় এসে নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় নাঈম আশরাফ। প্রতারণা, নারী ও মাদক ‘সাপ্লায়ার’ হিসেবে অনেকের কাছে পরিচিত সে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন