নাসির হোসেন নয় মাস পর
স্বল্পতেই চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে। আবির্ভাবের কয়েকটা দিনের মধ্যেই নয়নের মনি হয়ে উঠেছিলেন; নানারকম খেতাব জুটছিলো। কেউ বলছিলেন, বাংলাদেশের মাইক হাসি। কেউ আবার বলছিলেন, ক্রিকেটের নতুন ‘দ্য ফিনিশার’। এমন অবস্থায় অনেকেরই মাথা ঘুরে যায়।
ছেলেটির মাথা ঘুরায়নি। সেই অবস্থায় একদিন মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বসে বলছিলেন, ভাগ্যই পারে মানুষকে এমন ফর্মে রাখতে। আবার এই ফর্মেরও একটা উল্টো পিঠ আছে; সেই পিঠে শুধুই ফর্মহীনতার অপেক্ষা।
নাসির হোসেন মুদ্রার দুটো পিঠই দেখে ফেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেই চমকে দেয়া পারফরম করে সাফল্যের পিঠটা দেখেছেন। আবার গত প্রায় এক বছর ধরে দেখছিলেন ব্যর্থতার পিঠটা। সেই পালা ঘুচিয়ে বিশ্বকাপেই ফিরেছেন ওয়ানডে দলে।
দারুণ ফর্মে থাকলেও পুরো দলের ভালো পারফরম্যান্সের জন্য সেভাবে ব্যাটিং করার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। পাচ্ছিলেন না টেস্ট দলেও ডাক। অবশেষে সর্বশেষ টেস্ট খেলার প্রায় নয় মাস পরে আবার টেস্ট দলে ডাক পেলেন নাসির।
ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট দলে ডাক পেলেন নাসির অবশ্য একটা দুর্ঘটনার ফলে। গতকালই অনুশীলনে চোট পেয়ে তিন থেকে চার সপ্তাহের জন্য মাঠ থেকে ছিটকে গেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার বদলেই দলে ফিরেছেন নাসির। এখানেও সেই ভাগ্যের খেলা!
নাসির এই ভাগ্য ব্যাপারটায় খুব বিশ্বাস করেন। নিজের তুখোড় ফর্মের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে একবার বলছিলেন, ‘ভাগ্য বিরাট একটা ব্যাপার। দেখবেন ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছেন। ওনারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করতে পারেননি। কেন? যখন ডাক পেলেন, ওই সময়টাই হয়তো ফর্ম খারাপ ছিল। আমার ভাগ্য কত ভালো! জাতীয় দলে এলাম, তখন ফর্মটাও ভালো আছে। এই ফর্মটা ভালো থাকলেই আমি আছি।’
২০১১ সালে অভিষেকের পর থেকে ২০১৩ সাল অবদি পুরো দস্তুর ছিলেন নাসির। ওয়ানডে, টেস্ট; সব জায়গাতে সাত-আটে বাংলাদেশকে এনে দিচ্ছিলেন অসামান্য আনন্দের উপলক্ষ। ওয়ানডেতে বেশ কয়েকটা ম্যাচ টানটান অবস্থা থেকে বের করে এনে তো ‘ফিনিশার’ নামই পেয়ে গিয়েছিলেন। টেস্টেও দারুণ ব্যাট করছিলেন। কিন্তু ২০১৩ সালে শেষ থেকে নিজেকে একটু একটু করে হারিয়ে ফেলতে শুরু করলেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মোটামুটি পারফরম করতে পারলেও শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ব্যাটিং ছিলো একেবারেই হতাশাজনক। ফলে দল থেকেই বাদ পড়লেন। গত বছরের শেষ দিকেও নিশ্চিত ছিলো না, নাসির বিশ্বকাপে যেতে পারবেন কি না। বিশেষ করে তার বদলে দলে আসা সাব্বির রহমান রুম্মনের দুর্দান্ত ফর্ম আরও কঠিন করে দিলো নাসিরের জীবনটা। তারপরও নাসির ফিরলেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে এতোটাই দুর্দান্ত খেললেন যে, নাসির-সাব্বির দু জনকেই দলে রাখতে বাধ্য হলেন নির্বাচকরা। দু জন একসঙ্গে খেললেনও। সেটা ওয়ানডেতে। অপেক্ষা ছিলো টেস্টের। অবশেষে টেস্টে ফিরলেন নাসির। এবার লক্ষ্যটা কী হবে?
গতকাল নাসিরকে পাওয়া গেল না। তবে অনেক আগে একবার বলছিলেন, ‘আমি ছোট বেলায়, মনে হয় ১৩ বছর বয়সে বাচ্চাদের একটা ম্যাচে রান তাড়া করে দলকে জিতিয়েছিলাম। তখন খুব ভালো লেগেছিল।
সেই থেকে রান তাড়া করে দলকে জেতাতে, ওই সময় মাঠে থাকতে ভালো লাগে। এখনও আমি রান তাড়া করাটা দারুণ উপভোগ করি। আমার ধারণা আস্কিং রেট যত বাড়তে থাকে, আমি তত ভালো খেলি। এরকম পরিস্থিতিতে আমার সেরা ক্রিকেট বেরিয়ে আসে। আমি বারবার এরকম খেলে দলকে জেতাতে চাই।’ আমরাও তাই চাই। আমরা চাই, নাসির আবার সেই দল জেতানো ভূমিকায় ফিরুক।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন