নিজের অতীতের কথা সন্তানকে জানানো কি ঠিক?
আমাদের সন্তান যেন একই সময় ফিরিয়ে নিয়ে আসে আমাদের সামনে। যে শৈশব আমরা ফেলে এসেছি, যে কৈশোর হারিয়ে গেছে কালের অতল গভীরে তার সাথে যেন আবার আমরা মুখোমুখি হই। মেয়েটিই যেন মায়ের হারিয়ে যাওয়া জীবনের ছবি, ছেলেটি যেন তার বাবারই পূনর্জন্ম।
আমাদের চোখের সামনে যখন একই সময় কাটায় ছোট্ট শিশুটি তখন তাকে সতর্ক করার জন্য, বোঝানোর জন্য অনেক সময়ই নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরি আমরা। কখনো নিজেকে তার চেয়ে ভাল ছিলাম বলে দাবি করি, কখনো বা আরও কত খারাপ ছিলাম বলে সান্ত্বনা দিই। সন্তানকে নিজের অতীত জানানো কি আদৌ ঠিক? এতে কি সন্তানটির সামনে আপনার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে? জেনে নিন মনোবিজ্ঞানীদের মত-
আপনি কী বলছেন খেয়াল করুন
আপনার সন্তানের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেসব বিষয় যা আপন তার সামনে ইতিবাচক রূপে তুলে ধরবেন! আপনি যদি ছেলেবেলায় ভুতের গল্প শুনে কেমন ভয় পেয়ে যেতেন সে কথা তার সাথে শেয়ার করেন তাহলে তার ভয় আরও বেড়ে যেতে পারে। অথবা সে আপনাকে ভীতু ভাবতে পারে। তাই বলার আগে সিদ্ধান্ত নিন, আপনার গল্পটি তার উপর কিরূপ প্রভাব ফেলবে।
সংকোচকে বিদায় দিন
অনেক সময় আমরা দরকারি অনেক কথা শিশুদের বলি না। যেগুলো তাদের জানা খুবই জরুরী। আপনার শিশুটি ছেলে হোক বা মেয়ে শারীরিকভাবে এবিউজ হতে পারে যে কোন সময়। আপনি যদি তার সাথে এই ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করেন তাহলে হয়ত সে সতর্ক হবে এবং এই ধরণের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে। আমরা প্রায়ই সন্তানদের নিরাপত্তার চিন্তা থেকে ‘এটা কর না’, ‘ওখানে যেও না’ এসব নিষাধাজ্ঞা জার করি। ‘না’ সূচক কথা শিশুরা বুঝতে পারে না। এতে তারা বিরক্ত হয়। কিন্তু আপনি যখন নিজের অভিজ্ঞতা তাকে বলবেন তখন সে বিষয়টি বুঝতে পারবে।
শিশুকে হীনমন্যতায় ফেলবেন না
আমরা বাবা মায়েরা প্রায়ই শিশুকে বলি, ‘আমার রেজাল্ট তোমার চেয়ে অনেক ভাল ছিল”, ‘আমাদের সময় আমরা অনেক ভাল কাজ করতাম, এযুগের ছেলেমেয়েরা করে না’। এভাবে আমরা শিশুদের মাঝে একরকম হীনমন্যতা প্রবেশ করিয়ে দিই। তারা কখনো নিজেদের আলাদা স্বত্ত্বা ভাবতে শেখে না। তার পরিস্থিতি এবং আপনার সময়ের বাস্তবতার ভিন্নতা বোঝে না। তাকে ভিন্নভাবে উপদেশ দিন। বলুন, ‘তুমিও পারবে। তুমি বরং আমার চেয়ে ভাল পারবে’।
ভাল মন্দ চিনতে সাহায্য করে
আপনার সন্তানের উপর একটা বয়স পর্যন্ত আপনার প্রভাব থাকে সবচেয়ে বেশী। কিন্তু এক সময় বন্ধুবান্ধবের প্রভাব বাড়তে থাকে। তাকে নিজের জীবনের গল্প এমনভাবে বলুন যাতে অসৎ সঙ্গ তাকে বদলে দিতে না পারে। আপনি মা হয়ে ছেলেকে যখন কৈশোরে কিভাবে পারার ছেলেদের দ্বারা মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছেন সেই গল্প বলবেন, তখন আপনার কষ্ট দেখে আপনার সন্তান আরেকটি মেয়েকে টিজ করার আগে ভাববে। এভাবেই মানুষ মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে। শুধু গড়ে তোলার দায়িত্বটা সঠিকভাবে নিতে হয়।
আপনার সন্তান আপনার অংশ। তার কাছে মহৎ হওয়ার যেমন কিছু নেই তেমনি ক্ষুদ্র হওয়ারও কিছু নেই। তাকে গড়ে তোলাই মুখ্য। শুধু সেদিকেই মনোযোগ দিন। দেখবেন, আপনার মত শ্রদ্ধা সে আর কাউকে করবে না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কল-কারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিষ্ঠানিকবিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলের কিশোরী জোনাকির মরদেহ যশোরে উদ্ধার
যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে একটি পুকুর থেকেবিস্তারিত পড়ুন
শিশুর স্কুল থেকে শেখা বদভ্যাস থামাবেন যেভাবে
স্কুল থেকে শিশুরা জীবনের দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নিয়মকানুনবিস্তারিত পড়ুন