নিজের সবচেয়ে আদরের সন্তান গর্ভাবস্থাতেই মেরে ফেলা কতটা কঠিন!
বিবিসির হংকং সংবাদদাতা জুলিয়ানা লিউর জন্ম ১৯৭৯ সালে। তখন চীনে এক সন্তান নীতি। তার মা-বাবা দ্বিতীয় সন্তান নিতে পারলেন না। লিউর বাবা–মা দুজনেই তখন চাকরী করেন। তারা যদি দ্বিতীয় সন্তান নিতেন, তাহলে চাকরী হারাতে হতো। ‘আমার মা দু’বার সন্তান সম্ভবা হয়েছিলেন। কিন্তু দু’বারই তাকে গর্ভপাত করাতে হয়েছে। কারণ চীনে তখন এক সন্তান নীতি। সবাই সে আইন জানতো’। বিশেষজ্ঞদের মতে এক সন্তান নীতির কারণে চীনে ৪০ কোটি শিশুর জন্ম হয়নি। খবর- বিবিসি বাংলা।
জুলিয়ানা লিউ বলেন, ‘নিজের সবচেয়ে আদরের সন্তান গর্ভাবস্থাতেই মেরে ফেলার বিষয়টি কতটা বেদনার সেটি নিজে মা হয়ে আমি ভাবতেই পারি না’। চীনে অনেক পরিবারের এ ধরনের গল্প রয়েছে। লিউ শৈশবে যাদের সাথে কাটিয়েছেন তাদের কারো ভাই-বোন ছিল না। সবাই ছিল একমাত্র সন্তান। একমাত্র সন্তান হবার কারণে বাবা–মায়ের সব প্রত্যাশা ছিল তাকে ঘিরে। স্কুলে ভালো ফলাফল করা, ভালো চাকরী করা, সঠিক মানুষটিকে বিয়ে করা, এ ধরনের সব প্রত্যাশা। ‘এক কথায় সব কিছুতেই পরিপূর্ণ হতে হবে। কারণ আমি একমাত্র সন্তান’ চীন যখন এক সন্তানের নীতি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিলো তখন জুলিয়ানা লিউয়ের আনন্দে মন ভরে গেলো পাঁচজন থেকে একজন
বিবিসি চায়না বিভাগের ইউয়েন ইউ পাঁচ ভাইবোন ছিলেন। কিন্তু তার নিজের এক সন্তান। তিনি যখন সন্তান সম্ভবা তখন সেই সন্তান জন্মদানের জন্য কত প্রস্তুতি। কারণ সেই সন্তানই প্রথম এবং সেই সন্তানই শেষ। তিনি এক সন্তান নীতিকে সমর্থন করেছিলেন। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন চীনের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা রোধের জন্য ব্যক্তিগত কিছু ত্যাগ করতে হবে। কিন্তু জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার যদি আগে থেকেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতো, তাহলে হয়তো এক-সন্তান নীতির প্রয়োজন হতো না।
কমিউনিস্ট আমলে চীনের প্রথম আদমশুমারি হয় ১৯৫৩ সালে। সেখানে দেখা যায়, চীনের জনসংখ্যা তখন ৬০ কোটি। এর মধ্যে তার আগের চার বছরেই চীনের জনসংখ্যা বেড়েছে ১০ কোটি! পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাও ইয়েনচু অধিক জন্মহার নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। তিনি বিষয়টি চীনের নেতা মাও সেতুং-এর কাছে তুলে ধরেন।
কিন্তু জন্মহার কমানোর বিষয়টি মাও সেতুং পছন্দ করেননি। কারণ তখন চীনে মনে করা হতো অধিক জনসংখ্যা মানে অধিক কর্মক্ষম মানুষ। সেজন্য তখন পরিবারগুলোকে বেশি সন্তান নিতে উৎসাহ দেয়া হতো। সেজন্য ইউয়েন ইউ-এর বাবা-মায়ের পাঁচ সন্তান ছিল। কিন্তু এখন ইউয়েন ইউ-এর এক সন্তান।
তিনি বলেন ‘কিভাবে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে পরিস্থিতি বদলে যায়’! যদি তখন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হতো তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের উপর এক সন্তান নীতি চাপানোর প্রয়োজন হতো না।
এখন এক সন্তান হবার কারণে ইউয়েন ইউ-এর কন্যা অনেকটা স্বাবলম্বী। সে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে শিখেছে এবং কিভাবে বন্ধু তৈরি করতে হয় সেটিও সে জানে। তার মেয়ে স্বাধীন এবং পরিশ্রমী।
একমাত্র সন্তান হবার কারণেই ইউয়েন ইউ-এর কন্যা এভাবে গড়ে উঠেছে। ইউয়েন ইউ বলেন, ‘আমার মেয়ে যেভাবে বেড়ে উঠেছে তাতে আমি খুশি। কিন্তু আমার ইচ্ছে হয় – যদি তাকে একটি ভাই-বোন দিতে পারতাম’।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন