নিজ ঘরে আগুনে পাঁচ মৃত্যু: নাশকতার ইঙ্গিত
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে আগুনে দগ্ধ হয়ে পুলিশ সদস্য ও তার পরিবারের চার জনের মৃত্যুর ঘটনা নাশকতা বলে সন্দেহ করছেন স্থানীয়রা। একই ধারণা করছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। আগুন লাগার সময় তাদের ঘর বাইরে থেকে তালা দেয়া ছিল বলে তদন্ত কমিটির কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন মরদেহ উদ্ধারকারীরা।
গত মঙ্গলবার পীরগঞ্জের ভোমরাদহ ইউনিয়নের জনগাঁও গ্রামে নিজ বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনায় খরেশ চন্দ্র, তার স্ত্রী কেয়া রানী, শ্যালিকা সন্ধ্যা রানী ও দুই শিশু সন্তান নির্ণয় ও নাইসের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল ইসলামকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বুধবার সকালে কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ সময় খরেশের ভাই তরেশ চন্দ্র, স্থানীয় হিরালাল মাস্টারসহ প্রতিবেশীরা তাদের বক্তব্য দেন। তাৎক্ষণিকভাবে বৈদ্যতিক সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের ধারণা করা হলেও পরে দেখা যায়, বাড়ির বিদ্যুতের ফিউজ কাটেনি। অথচ বিদ্যুতের কোনো গোলযোগে ফিউজের তার কেটে যাওয়ার কথা বলে জানান বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে কমিটির প্রধান আশরাফুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘অনেকগুলো বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনই কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাবে না।’
স্থানীয়রা জানান, রাত একটা পর্যন্ত বাড়ির পাশের পূজা ম-পে আরতি দেখেছিলেন খরেশের স্ত্রী সন্তানরা। এরপর তারা বাড়িতে এসে ঘুমান। ভোরে সবাই যখন গভীর ঘুমে, তখনই লাগে আগুন।
প্রথমে ঘরের সিলিংয়ে আগুন লাগে। এরপর সবকটি ঘরে একই সঙ্গে আগুন জ¦লতে থাকে। অপর একটি ঘরে খরেশের মোটর সাইকেলটি বিস্ফোরিত হওয়ায় আগুনের তীব্রতা বেড়ে যায়। নিহতরা যে ঘরে ঘুমিয়েছিলেন সেটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় তারা ঘর থেকে বের হতে পারেনি। পরে জানালা দিয়ে তার ঘরের চাবি দিয়ে বাঁচানোর আকুতি জানালে খরেশের ছোটভাই তরেশসহ অন্যরা প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকেন।
কিন্তু আঙিনায় বিদ্যুৎ লাইনের তারে আগুন জ¦লতে দেখে তাদের উদ্ধার করতে পারেনি। খরেশের ভাই ও প্রতিবেশীরা ঘরের দক্ষিণ পাশের ইটের দেয়াল ভেঙে খরেশ চন্দ্র, নাইস ও নির্র্ণয়কে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে হাসপাতালে পাঠান।
খরেশ চন্দ্র দিনাজপুর শহরে ট্রাফিক লাইনে চাকরি করতেন। সেখানেই থাকতেন স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে। তার ছেলে নির্ণয় প্রথম শ্রেণিতে ও মেয়ে নাইস ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো।
পূজার ছুটিতে সোমবার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে এসেছিলেন তার খরেশের শ্যালিকা সন্ধ্যা রানী। তিনি সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন।
যে বাড়িতে খরেশ সপরিবারে নিহত হন সেটি বেশিরভাগ সময় তালাবদ্ধ থাকতো। সেখানে কেউ থাকতেন না। প্রতিদিন খরেশের বাবা সন্ধ্যায় বাতি জ্বালিয়ে আসতেন এবং সকালে সে বাতি নেভাতেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
বিয়ের প্রলোভন তারপর ধর্ষণ, এখন অন্তঃসত্ত্বা ৭ম শ্রেণির ছাত্রী
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা চিলারং ইউনিয়নে ধর্ষণের পর ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বাবিস্তারিত পড়ুন
ঠাকুরগাঁওয়ে নারীকে নগ্ন করে নির্যাতনের অভিযোগ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে একবিস্তারিত পড়ুন
মৃত্যুর কাছে হেরে গেল ‘নষ্ট মোল্লা’
১২ ঘন্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরেবিস্তারিত পড়ুন