নিজ হাতে তাজমহল গড়লেন পোস্টমাস্টার (ভিডিও)
ভালোবাসার মানুষকে কখনো ভোলা যায় না। ভালোবাসার মানুষের স্মৃতি ধরে রাখার এক অনন্য নজির তাজমহল। যেটা তৈরি করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন সম্রাট শাহজাহান। স্ত্রী মমতাজের জন্য সম্রাট শাহজাহানের তৈরি এই স্থাপনা আজও অনেকের মনে বিস্ময়ের উদ্রেক করে।
সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশের অবসরপ্রাপ্ত হতদরিদ্র পোস্টমাস্টার ৮০ বছর বয়সী ফাইজুল হাসান কাদরি তার স্ত্রীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য তৈরি করলেন আরও একটি তাজমহল। যদিও এটি মাত্র ১৫ ফুট উচ্চতার এবং সাধারণ ইট দিয়ে তৈরি। তবে স্ত্রীর প্রতি তার ভালোবাসার এই অনন্য বহিঃপ্রকাশ সাড়া ফেলেছে। আপ্লুত হয়েছে সকলের হৃদয়। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার স্মরণীয় এই ঘটনা নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে। যেটা প্রকাশ করা হয়েছে ইউটিউবের ১০১ ইন্ডিয়া নামক চ্যানেলে।
হতদরিদ্র ওই পোস্টমাস্টার ডকুমেন্টারিতে বলেন, ‘আমার স্ত্রী তাজমুলাই বেগম খুবই ফর্সা ছিল। আমার মায়ের ভাইয়ের মেয়ে ছিল সে। অর্থাৎ সম্পর্কে আমার মামাতো বোন। তাকে দেখার পরই আমি বলেছিলাম, আমি ওকেই বিয়ে করবো এবং ১৯৫৩ সালে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সে রুটি ঠিকমতো বানাতে পারতো না। আমি তাকে দেখিয়েছিলাম কীভাবে রুটি তৈরি করতে হয়। এরপর সে সুন্দর রুটি বানাতো!
ছোটবেলায় সে ঘরে কোরআন শরীফ পড়েছিল। এর বাইরে আমার মামা তাকে অন্য কোথাও পড়ায়নি। বিয়ের পরে আমি তাকে ছোট ছোট গল্পের বই থেকে কাহিনি শুনিয়েছি, পড়া শিখিয়েছি। ফলে আমার স্ত্রী পড়াটা জানতো কিন্তু লিখতে পারতো না। যতদিন সে আমার সঙ্গে ছিল দিনগুলো খুব হাসি-খুশিতে কেটেছে। কখনো কোনো কিছু নিয়ে আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়নি।
ও যখন পরিণত বয়সে ছিল, তখন যেহেতু কোনো বাচ্চা ছিল না, তাই সেটা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন থাকতো। বলতো, আমাদের মৃত্যুর পর কে আমাদের কথা বলবে, কে আমাদের মনে রাখবে?
আমি সে সময় তাকে বলেছি, তোমার যদি মৃত্যু হয়, তাহলে বাড়ির সামনের এই ক্ষেতেই আমি তোমাকে দাফন করবো এবং এমন একটি স্মৃতি নির্মাণ করবো, যাতে সারাজীবন সবাই তোমাকে মনে রাখে। আজ আমি আমার কথা রেখেছি। আমি এখন পর্যন্ত ওর স্মৃতিসৌধ হিসেবে এই তাজমহল নির্মাণে কারো কাছ থেকে ১টি পয়সাও সাহায্য নেইনি। আমি আমার সব সঞ্চয় দিয়ে এটি নির্মাণ করেছি। স্ত্রীর মৃত্যুর পর দাফনের যাবতীয় কাজ আমি একাই করেছি। তার কাফনের কাপড় কেনার জন্য আমি নিজেই বাজারে গিয়েছি।
এই তাজমহলের মধ্যে আমার স্ত্রীর কবর রয়েছে। তার পাশেই যে খালি জায়গাটা রয়েছে, ওটা আমি আমার জন্য রেখেছি। যাতে আমার মৃত্যুর পর তার পাশেই আমি এখানে থাকতে পারি।
আমাদের বিয়ের পর একটাই দুর্ভাগ্য যে, আমাদের সন্তান হয়নি। ওর গর্ভাশয়ে টিউমার ছিল। ডাক্তারদের পরামর্শে তা কেটে ফেলতে হয়। ফলে এটা নিশ্চিত ছিল যে, আমাদের বাচ্চা আর হবে না। তাই আমার বোনেরা ও স্বজনেরা সবাই বলেছিল যে, আরেকটি বিয়ে করতে। কিন্তু আমি তা করিনি।
একটা কষ্টের বিষয় হচ্ছে, ২০১১ সালে মৃত্যুর আগে তার গলায় ক্যান্সার হয়েছিল। সে কথা বলতে পারতো না। সে সব সময়ই কিছু বলতে চাইতো, কিন্তু আমি বুঝতে পারতাম না। সে ইশারায় আমাকে কত কথা বলতো, কিন্তু আমি তার সব কথা বুঝতে পারতাম না, এই কষ্টটা আমি আজও বয়ে বেড়াচ্ছি। আমি এখনও ভাবি, ও আমাকে কী বলতে চেয়েছিল?
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সবাইকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেবিস্তারিত পড়ুন

সংঘাতের মাঝেও তেহরানের বায়ুমান ঢাকার চেয়ে ভালো
সোমবার রাত থেকেই দফায় দফায় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।বিস্তারিত পড়ুন

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেবিস্তারিত পড়ুন