নিষেধাজ্ঞা শেষ: এবার সময় শুধু আম খাওয়ার!
রাজশাহী: আম ছাড়া মধু মাস যেন চিনি ছাড়া মিষ্টি। বছর ঘুরে এই আমের জন্য অপেক্ষায় থাকে সবাই। রসালো এ ফলের জন্য অবশ্য অপেক্ষার পালা এবার শেষ হয়েছে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে আম পাড়া। এর আগে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমের রাজধানীতে এতোদিন আম পাড়া বন্ধ ছিল। তাইতো নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরে প্রথম ধাপে গোপালভোগ ও গুটি জাতের আম পাড়তে শুরু করেছেন বাগান মালিকরা।
আম পাড়া ও বাজারজাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বুধবারের আগে নিষেধাজ্ঞা ছিল। রাজশাহীতে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও কেউ যেন অপরিপক্ক আম না পাড়তে পারে সেদিকে বিশেষ নজর রেখেছিল প্রশাসন। বুধবার থেকে এ বিধি আরোপ উঠে যেতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে আম চাষী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা।
আম চাষীরা জানান, গাছেই আম পাকতে শুরু করেছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা আম পাড়তে পারেনি। বিশেষ করে গোপালভোড় ও গুটি আমের অবস্থা খারাপ। তারা জানান, অন্তত পাঁচ দিন আগেই এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হতো প্রশাসনকে। আম দ্রুত বাজারজাত করতে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাদের। আমের দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আম চাষী নূরুজ্জামান জানান, এক সপ্তাহ আগে গাছ থেকে আম পাড়তে নিষেধ করেছিল স্থানীয় প্রশাসন। এ কারণে তারা আম পাড়তে পারেনি। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় বুধবারই ট্রাকে করে আমের চালান পাঠানো হয়েছে ঢাকাতে।
একই উপজেলার মিলিকবাঘা এলাকার আম চাষী জসিম জানান, এবার প্রচণ্ড গরমের পরপরই বৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা আগেভাগে পেকেছে গোপালভোগ আর গুটি জাতের আম। কিন্তু প্রশাসনের বাধা-নিষেধ থাকায় কোনো কিছু করার উপায় ছিল না তাদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম গবেষণা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২৫ হাজার হেক্টর বাগান থেকে আম সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাশের জেলা রাজশাহীতেও ১৬ হাজার ৫১৯ হেক্টর জমিতে আমের বাগান আছে। সাধারণ মানুষের কাছে বিষবিহীন আম তুলে দেয়ার জন্যই প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গোপালভোগ ও গুটি আম পাড়া শুরু হলেও ক্ষীরসাপাত ও লক্ষণভোগ আম পহেলা জুন, ল্যাংড়া ও বোম্বাই ১০ জুন, ফজলি ২৫ জুন, আম্রপালি পহেলা জুলাই এবং আশ্বিনা ১৫ জুলাই থেকে পাড়তে ও বাজারজাত করতে পারবেন চাষীরা। পরবর্তীতে নাবি জাতের ফজলিসহ অন্যান্য আম বাজারে আসবে।
ঢাকা থেকে রাজশাহীতে আম কিনতে আসা ব্যবসায়ী আবু বক্কার জানান, দেশের অন্য জায়গায় রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের কদর বেশি। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে ইতোমধ্যেই ঢাকার আমের বাজার দখল করে নিয়েছে সাতক্ষীরাসহ কয়েক জায়গার আম। চাষীদের কাছ থেকে গোপালভোগ কেজি প্রতি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং গুটি আম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে কেনার জন্য বলা হয়েছে।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘কেমিকেলমুক্ত আমের বাজারজাত নিশ্চিতে আমরা খুবই সচেতন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম পাড়ার ক্ষেত্রে সময় বেধে দেয়া হলেও রাজশাহীতে তা করা হয়নি। তবে অপরিপক্ক আম গাছ থেকে নামিয়ে কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে বাজারে ওঠা ঠেকাতে জেলার প্রতিটি উপজেলায় সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছিল। তারা সেই বিষয়গুলো দেখেছেন।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমের রাজধানী কিন্তু একটাই, আর সেটা হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। বুধবার থেকে আম পাড়া ও বাজারজাতকরণ শুরু হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিরাপদ আম সারা দেশে যাবে, কেউ যাতে অপরিপক্ক আম বাজারজাত করতে না পারে সেই লক্ষে আমরা আম পাড়ার সময়সীমা বেধে দিয়েছিলাম। আগামীতে অন্যজাতের আমের ক্ষেত্রেও এই বিষয়গুলো আমাদের নজরে থাকবে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো আম মৌসুমে নজরদারি করবো। কোনো অপরিপক্ক আম বাজারে কেউ যাতে না উঠাতে পারে সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখবো।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন