নিহত সাত জঙ্গির একজন শনাক্ত : ‘ভোরে নামাজ পড়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয় ইব্রাহিম’
চলতি বছরের ৮ই আগস্ট পরিবারের সবাইকে ঘুমে রেখে খুব ভোরে পুরান ঢাকার বাসা থেকে বের হন মো. ইব্রাহিম। বাসার নিচে নিরাপত্তাকর্মীকে বলেছিলেন ফজরের নামাজ পড়তে যাচ্ছেন। এরপর আর ফেরেননি। দুই মাস পর গাজীপুরে জঙ্গি আস্তানায় মিলেছে ১৯ বছরের এই তরুণের লাশ।
৮ অক্টোবর গাজীপুরের পাতারটেকে এক জঙ্গি আস্তানায় পুলিশ অভিযান চালায়। সেখানে সাতজনের মধ্যে একজন হলেন ইব্রাহিম (১৯)। বাবার নাম মো. আজিম উদ্দিন। তাঁদের বাসা ঢাকার পুরানা মোগলটুলীতে।
গতকাল সোমবার ওই বাসায় গেলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা ইব্রাহিমের লাশ শনাক্ত করার কথা জানান। তাঁদের দাবি, ইব্রাহিম কখন যে গোপন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, পরিবার তা আগে টের পায়নি।
মঙ্গলবার সকালে ইব্রাহিমের বড় ভাই মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘৮ আগস্ট ভোরে নামাজ পড়ার কথা বলে ইব্রাহিম রাজধানীর মোগলটুলীর বাসা থেকে বের হয়। সে টঙ্গীর গাজীপুরায় তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে এ বছর আলিম (এইচএসসি সমমান) পাস করেছে। আলিম পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই বাড়ি ছাড়ে ইব্রাহিম। ইব্রাহিম অনুপম সাংস্কৃতিক সংসদের শিল্পীও ছিলেন। পাঁচ ভাই, চার বোনের মধ্যে সে ষষ্ঠ। টঙ্গীতে পারিবারিক ব্যবসাও রয়েছে। কিন্তু ইব্রাহিম কখন যে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তা পরিবারের কেউ জানত না।’
মোহাম্মদ বলেন, ইব্রাহিম বাড়ি ছাড়ার পর আর ফেরেননি দেখে পরদিন তাঁরা বংশাল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর র্যাব, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এবং বিশেষ শাখাকেও (এসবি) জানান। কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় নিখোঁজ বিজ্ঞাপনও দেন। তিনি বলেন, গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট থেকে তাঁর বাবাকে ডাকা হয়। তখনো পরিবারের কেউ কিছু জানতেন না। গতকাল আবারও পুলিশ বাবাকে ডেকে নিয়ে লাশের ছবি দেখালে তাঁরা নিশ্চিত হন ইব্রাহিম মারা গেছেন।
বংশাল থানায় করা জিডিতে বলা হয়েছে, বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ইব্রাহিমের পরনে ফুলপ্যান্ট ও সাদাকালো গেঞ্জি পরা ছিল। তাঁর উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। তিনি পুরান ঢাকার উচ্চারণে কথা বলেন।
ফেসবুকে ইব্রাহিম বিন আজিম নামে ইব্রাহিমের একটি আইডি রয়েছে। গতকাল ওই আইডিতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর ওয়ালজুড়ে অনুপম সাংস্কৃতিক সংসদের বিভিন্ন গান এবং তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ছবি শেয়ার করা রয়েছে।
ইব্রাহিমের ভাই মোহাম্মদ বলেন, বছর দেড়েক থেকে ইব্রাহিম অনুপম সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীতে যাওয়া, গান করা বন্ধ করে দেন। তাঁর কোনো বন্ধুবান্ধবও ছিল না। সারাক্ষণ মোবাইল ফোন নিয়ে থাকতেন। কারও সঙ্গে তেমন মিশতেনও না। এ ছাড়া আর কোনো পরিবর্তন তাঁরা দেখেননি। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই ছাত্র ভালো ছিল। বিজ্ঞান বিভাগে পড়ত। দাখিলে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আলিমে পেয়েছে জিপিএ-৪.৮০। আলিমের রেজাল্ট পাওয়ার আগেই সে বাড়ি থেকে চলে গেল।’
প্রশ্ন করা হলে মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘ইব্রাহিমের লাশ পেলে দাফন করা হবে।’ কিন্তু ইব্রাহিম কীভাবে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়লেন সেটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খুঁজে বের করার অনুরোধ জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ উপপুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমিও শুনেছি ইব্রাহিমের কথা। কিন্তু তার পরিবারের লোকজন এখনো কোনো যোগাযোগ করেনি।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন