বুধবার, নভেম্বর ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

নেত্রকোণার রাজাকার তাহের-ননীর ফাঁসি

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোণার রাজাকার কমান্ডার মো. ওবায়দুল হক তাহের (৫৫) ও তার সহযোগী রাজাকার আতাউর রহমান ননীর (৫৮) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিরস্ত্র মানুষকে অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ এবং হত্যার অভিযোগে এই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। এর আগে গত ১০ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

এক ও দুই নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, তিন ও পাঁচ নং অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড সাজা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া চার ও ছয় নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই দুই অভিযোগ থেকে তাদেরকে খালাস দেয়া হয়।

আসামিদের দণ্ড কার্যকরের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে এর মধ্যে তিন ও পাঁচ নম্বর অভিযোগে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। একই সঙ্গে তাদেরকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে রায় কার্যকরের বিষয়ে সরকারকে আদেশ দেয়া হলো।’

এ সময় আসামি ননী ও তাহের ট্রাইব্যুনালের আসামির ডকে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় তাদেরকে ট্রাইব্যুনালের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

তাহের-ননীর বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে চারটিই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে বলা হয়।

প্রথম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৭ আগস্ট তাহের ও ননীর নেতৃত্বে রাজাকাররা নেত্রকোণা জেলার বারহাট্টা থানার বাউসী বাজার থেকে ফজলুল রহমান তালুকদারকে অপহরণ করে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় নিযাতনের পর ত্রিমোহনি ব্রিজে হত্যা করে। একই সঙ্গে ৪০০ থেকে ৪৫০টি দোকানের মালামাল লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ৪ অক্টোবর জেলার বারহাট্টা রোডের শ্রী শ্রী জিউর আখড়ার সামনে থেকে তাহের ও ননী কৃতী ফুটবলার দবির হোসেনকে অপহরণ করেন। পরে নির্যাতনের পর মোক্তারপাড়া ব্রিজে গুলি করে হত্যা করা হয় দবিরকে।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর তাহের ও ননীর নেতৃত্বে বারহাট্টা থানার লাউফা গ্রাম থেকে মশরফ আলী তালুকদারসহ ১০ জনকে অপহরণ করে ঠাকুরাকোনা ব্রিজে নিয়ে ৭ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, ১৫ নভেম্বর তাহের ও ননী বিরামপুর বাজার থেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বদিউজ্জামান মুক্তসহ ৬ জনকে অপহরণ করে লক্ষ্মীগঞ্জ খেয়াঘাট ও মোক্তারপাড়া ব্রিজে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন।

মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট থেকে ২৬৮ পৃষ্ঠার রায় দেয়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ের প্রথম অংশ পড়েন বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী। রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়েন অন্য সদস্য বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম। সবশেষে রায়ের মূল অংশ ও সাজা ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক।

এর আগে সকাল ১০টার পরে তাহের ও ননীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এনে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় এনে রাখা হয়। সাড়ে ১০টার দিকে হাজতখানা থেকে তাদেরকে তোলা হয় ট্রাইব্যুনালের আসামির কাঠগড়ায়। এর ৫ মিনিট পরে এজলাসে বসে রায় দেয়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।

ননী-তাহেরের রায়কে কেন্দ্র করে সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের মৎস ভবন গেইট, প্রধান ফটক এবং মাজার গেইটে মোতায়েন করা হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এর মধ্যে ট্রাইব্যুনাল সংলগ্ন মাজার গেইটে নিরাপত্তাকর্মীদের আধিক্য লক্ষ করা যায়। এমনকী এখানে একটি সাঁজোয়া যানও রাখা হয়।

গত ৬ জানুয়ারি থেকে মোট চার কার্যদিবসে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল ও প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নী এবং আসামিপক্ষে তাহের-ননীর আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার ও গাজী এম এইচ তামিম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

প্রসিকিউশন যুক্তিতর্কে দাবি করেন, অভিযুক্ত ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। এজন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার আরজি জানানো হয়।

অন্যদিকে আসামিপক্ষ দাবি করেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেননি প্রসিকিউশন। তাই এসব অভিযোগ থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়ার আর্জি জানানো হয়।

গত ১৩ আগস্ট এ দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্র্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।

গত ১২ আগস্ট এ দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ট্রাইব্যুনালের আদেশের ভিত্তিতে নেত্রকোণা পুলিশ তাদেরকে একই দিনে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত ছয়টি অভিযোগের ওপর বিচার কার্য পরিচালনা করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এ মামলার আসামি ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননী অভিযুক্ত হয়েছেন হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, দেশান্তরকরণ, বাড়িঘরে আগুন ও লুটপাটের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে। এর মধ্যে রয়েছে ৪২ জনকে অপহরণের পর নির্যাতন করে হত্যা-গণহত্যা, দুই পরিবারকে বাড়ি দখল ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে দেশান্তরকরণ এবং প্রায় সাড়ে ৪শ’ বাড়ি ঘরে লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ।

তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে থাকা চারটি অভিযোগ থেকে দু’টি বাড়িয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে (ফরমাল চার্জ) ছয়টি অভিযোগ দাখিল করেছিলেন প্রসিকিউশন। ওই ছয়টি অভিযোগকেই আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।

ওবায়দুল হক তাহের নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার ভোগাপাড়ার শুনই এলাকার মৃত মঞ্জুরুল হকের ছেলে। তিনি নেত্রকোনা পৌর শহরের তেরীবাজারে থেকে ব্যবসা করেন। অন্যদিকে আতাউর রহমান ননী (৫৮) একই জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কচন্দরা এলাকার মৃত আহছান আলী ওরফে আছান আলী ওরফে হাছেন আলীর ছেলে। ননী পৌর শহরের মোক্তারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও একজন সাবেক ফুটবলার।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন

ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর

সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ

দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন

  • কোকেনের সবচেয়ে বড় চালানে জড়িতদের নাম পেয়েছে ডিএনসি
  • বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদকের ৭২ কর্মকর্তার চাকরি ছাড়ায় নানা আলোচনা
  • মূল্য ৭ কোটি: পঞ্চগড়ে কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধার
  • নারায়নগঞ্জে কলেজ ছাত্রী যৌন হয়রানি ও লাঞ্চনার শিকার
  • বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট নিয়ে আদেশ
  • জাতীয় শোক দিবসে রাজধানীতে বাড়তি নিরাপত্তা
  • মানবতাবিরোধী অপরাধ: আজহার-কায়সারের আপিল শুনানি ১০ অক্টোবর
  • নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলা: হাইকোর্টের রায় ২২ আগস্ট
  • আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ড পাওয়া রাজাকার হাফিজ গ্রেপ্তার
  • সেলিম ওসমান অসুস্থ, চার্জ শুনানি হল না
  • স্ত্রী-শাশুড়িসহ তুফান ফের রিমান্ডে
  • এই রায়ে আমি ব্যথিত: অ্যাটর্নি জেনারেল