হামলায় আহত অনেকে হাসপাতালে ভর্তি
নৌকায় ভোট দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে আ.লীগ কর্মীরা

জেলার শার্শা ও চৌগাছায় ইউপি নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে হাজারো নেতাকর্মী প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বিজয়ী প্রার্থী ও বিএনপি-জামায়াতের লোকজন নৌকার সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং মারপিট করেছে। এসব ঘটনার ইন্ধন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার এনিয়ে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শার্শার ডিহি ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী একেএম ফজলুল হক বকুল।
লিখিত বক্তব্যে বকুল অভিযোগ করেন, আমি আওয়ামী লীগে মনোনয়ন পাওয়ার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন (এমপি) আমার বিরুদ্ধে জামায়াত-বিএনপি পরিবারের সদস্যকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেন। ডিহি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি (সদ্য বহিস্কৃত) সহ সভাপতি (সদ্য বহিস্কৃত) হোসেন আলীকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মদদ দেন। এমপির নির্দেশে আনারস প্রতীকে হোসেন আলী প্রার্থী হয়েছে। তাঁর পক্ষে নির্বাচন না করলে সব সহযোগিতা বন্ধ ও মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান প্রকাশ্যে সভায় আনারস মার্কায় ভোট চেয়েছেন।
গত ৪ জুনের নির্বাচনে হোসেন আলী চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কয়েকদিনের হামলায় ইউনিয়নের দড়ি দুর্গাপুরের কামরুজ্জামান, আবদুল কুদ্দুস, কৃষ্ণপুর গ্রামের আবদুল আলীম, মিজানুর রহমান, গোপীনাথপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম, পার্বতিপুর গ্রামের কবিরুন্নেছাসহ ১৫ জন হামলার শিকার হয়ে বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। হামলা ও মারপিটের ভয়ে আমার এক হাজারের অধিক নেতাকর্মী বাড়ি ছাড়া হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এবিষয়ে জানতে হোসেন আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন শার্শার ডিহি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, শার্শা উপজেলা যুবলীগের তথ্য গবেষণা সম্পাদক মঈনুল হক প্রমুখ।
এদিকে, সোমবার ও মঙ্গলবার নিজামপুর ইউনিয়নের কন্দপপুর গ্রামে রকিব উদ্দিন এবং গাতিপাড়া গ্রামের সেলিম রেজা সুমনকে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে। তারা দুই জনই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এবিষয়ে জেলা আ.লীগ নেতা আসিফ-উদ-দ্দৌলা সরদার অলোক বলেন, এমপি শেখ আফিল উদ্দিন শার্শা উপজেলায় ৫ জন বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়ে ছিলেন। নির্বাচনে সেসব প্রার্থী বিজয়ী হবার পর তাদের লেলিয়ে দিয়ে নৌকার সমর্থকদের ওপর একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করা লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।
অপরদিকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় সোমবার রাত ১০টার দিকে চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামে মেম্বর সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে নৌকার সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। পরাজিত ইউপি মেম্বর প্রার্থী আব্দুল মাজিদসহ অন্তত ৫০টি পরিবারের বাড়ি ঘরে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। এতে রাশেদ আলী, রেজাউল, আবদুর রশিদসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদেরকে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৯ জনকে আটক করেছে। এঘটনায় সোহরাব হোসেন বাদি হয়ে চৌগাছা থানায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩০/৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন বলেন, হামলার ঘটনায় জড়িত ৯ জনকে আটক করেছি। আটককৃতরা হলেন- বল্লভপুর গ্রামের জাহিদুল, চঞ্চল, মহসীন, জিনারুল, তারাচাঁদ, তবিবর মোল্লা, মাসুদ রানা, স্বপন, রবিউল। আটকের পর তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ভাস্কর সাহা। তিনি জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। হামলাকারীদের আটক করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপু বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের ক্যাডার বাহিনী জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা নির্যাতনের ঘটনা দুঃখজনক। এ বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করছি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

বেনাপোলের কিশোরী জোনাকির মরদেহ যশোরে উদ্ধার
যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে একটি পুকুর থেকেবিস্তারিত পড়ুন

শিশুর গলায় পিস্তল ঠেঁকিয়ে স্বর্ণালঙ্কার লুট
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ঝাউদিয়া গ্রামেবিস্তারিত পড়ুন

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘিরে অভিযান
জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে যশোর পৌর এলাকায় একটি দোতলা বাড়ি ঘিরেবিস্তারিত পড়ুন