নৌবাহিনীতে এ বছরই আসছে দুটি সাবমেরিন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর তিনটি যুদ্ধজাহাজের কমিশনিং অনুষ্ঠানে বলেছেন, চলতি বছর নৌবাহিনীতে দুটি সাবমেরিন অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে একে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরিত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঘাঁটি বিএনএস ঈশা খাঁয়ে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগৃহীত বানৌজা স্বাধীনতা, বানৌজা সমুদ্র অভিযান ও বানৌজা প্রত্যয়-এর কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ শিপইয়ার্ডে নিজস্ব প্রযুক্তিতে সাবমেরিনের জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া আমাদের সরকার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দেশে যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম ড্রাই ডকে যুদ্ধজাহাজ তৈরির পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারের আমলে নৌবাহিনীতে মেরিটাইম হেলিকপ্টার এবং মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফট সংযুক্ত হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি দ্বি-মাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’ নৌবাহিনীকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে আরও দুটি করভেট চীনে নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবস্থান আরও সুসংহত এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার উদ্দেশ্যে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে নৌবাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’ বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে আধুনিক ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে বলেও তিনি জানান।
স্বাধীনতা পদক প্রাপ্তিতে প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীর সদস্যদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান এবং দেশের জলসীমায় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালনের জন্য এই বছর বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্বাধীনতা পদক প্রাপ্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। আমি নৌবাহিনীর সব সদস্যকে এ জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে অমিত সম্ভাবনার দেশ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘বিশ্বের বুকে একটি শক্তিশালী ও গতিশীল অর্থনীতি হিসেবে জেগে উঠার সব সহায়ক পরিবেশ ও ক্ষমতা আমাদের রয়েছে।’ ক্রমাগত সম্পদ আহরণের ফলে বিশ্বের স্থলভাগের সম্পদ আজ সীমিত এবং সারা বিশ্বের নজর এখন সমুদ্র সম্পদের দিকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারও ব্লু ইকোনমির মাধ্যমে সমুদ্র সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের উদ্যোগে আজ বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের রয়েছে সুনির্দিষ্ট সামুদ্রিক এলাকা। দেশের এই বিশাল সমুদ্র এলাকায় বাণিজ্য পরিচালনা ছাড়াও আছে মৎস্য, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও অন্যান্য খনিজ পদার্থসহ মূল্যবান সম্পদ।’ জাতীয় অর্থনৈতিক জীবনে এই সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে তিনি ভৌগোলিক অবস্থান এবং কৌশলগত কারণে বাংলাদেশের এই জলসীমা ও তার সম্পদ রক্ষায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য বলেও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সাগরের মতো আপনাদের আছে গভীর দেশপ্রেম। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমুদ্র সম্পদের বিরাট ভূমিকা কাজে লাগানোর গুরুদায়িত্ব আপনাদের ওপর ন্যস্ত।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাহাজের কমান্ডিং অফিসারের কাছে জাহাজের কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রী সকালে নৌবাহিনীর ঘাঁটি ঈশা খাঁয়ে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন আহমেদ এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আকতার হাবিব তাঁকে স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, উচ্চপর্যায়ের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং কূটনৈতিক মিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ফ্লাইপাস্ট এবং বিভিন্ন নৌজাহাজের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত মহড়াও দেখেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদবিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকবির ম্যুরাল থেকে কালি মুছে দিল উপজেলা প্রশাসন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি দিয়ে মুখবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ইউনূস–মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন