পদত্যাগে প্রস্তুত গভর্নর
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজাল ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় দেশের স্বার্থে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করতে বাসা থেকে বেরিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন গভর্নর সচিবালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ এস এম আসাদুজ্জামান।
আসাদুজ্জামান আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী চাইলে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন গভর্নর।
ফিলিপাইনের ইংরেজি দৈনিক ইনকোয়ারারে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশের পর ঝড় বয়ে যায় বিশ্ব মিডিয়ায়। ৪ ফেব্রুয়ারি চুরি হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে। তবে তদন্ত দলের বরাত দিয়ে কেউ কেউ বলছেন এ চুরি হয়েছে ২৪ জানুয়ারি।
এমন একটি ঘটনার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এখনো দেশের বাইরে ছিলেন, এ নিয়েও উঠেছে ব্যাপক সমালোচনা। তিনি দেশে ফিরে পদত্যাগ করতে পারেন বলা হচ্ছিল এমনটাও। শোনা যাচ্ছে, বিদেশ সফর থেকে বিকেলে দেশে ফিরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে পদত্যাগপত্র দিতে পারেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বিকেলে দেশে ফিরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা না বলেই চলে যান। এতে বিষয়টি ঘোলাই থাকে। সে সময় এ এফ এম আসাদুজ্জামান সংবাদ কর্মীদের বলেন, ‘স্যার কোনো বিষয়ে এই মুহূর্তে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন।’
পরে বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে কালো কাচের কালো রঙের একটি গাড়িতে করে বের হয়ে যান ড. আতিউর রহমান।
এদিকে ঘটনায় গতকাল (১৪ মার্চ) মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকায় গভর্নরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
জালিয়াতির ঘটনা বিশ্ব মিডিয়া ও স্থানীয় মিডিয়ায় প্রকাশের পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা স্বীকার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চুরি যাওয়া কিছু ফেরৎ আনা হয়েছে। চুরি যাওয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৮১ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হয়েছে ফিলিপাইনের মাকাতি সিটির জুপিটার স্ট্রিটের রিজাল ব্যাংকের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে। বাকি ২০ মিলিয়ন পাঠানো হয় শ্রীলংকার একটি ব্যাংকে। প্রাপক সংস্থার নামের বানানে ভুল থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তারা ওই অর্থ আটকে দেয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা পাঠিয়ে দেয়।
গত শনিবার ফিলিপাইন সরকার ৮১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৬৮ হাজার ডলার বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত পাঠায়।
ব্যাংক জালিয়াতির ইতিহাসে বড় এ ঘটনা গোপন রাখার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর সেমিনারে যোগ দিতে চলে যান বিদেশে। জালিয়াতির দেড় মাসেও তা জানানো হয়নি অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়কে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এ ব্যাংকের প্রধান হিসেবে গভর্নরের নির্লিপ্ত এ আচরণ ক্ষিপ্ত করে অর্থমন্ত্রী তথা সরকারের নীতি-নির্ধারকদের। ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সোমবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন।
এদিকে রিজার্ভ অর্থ লোপাটের এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুহ-উল-আলম লেনিন।
ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে লেনিন বলেছেন, ড. আতিউর ‘ইউনূসের চ্যালা’। স্টাটাসে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরের পদত্যাগ চেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এ শীর্ষ এ নেতা। পুরো ঘটনার তদন্ত করে ড. আতিউরকে বিচারের মুখোমুখি করারও দাবি জানান তিনি।
গণমাধ্যমে চুরির এ ঘটনা প্রকাশের পর প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পক্ষ থেকেও একই দাবি করা হয়েছে। তথ্য গোপন ও চুরিতে সংশ্লিষ্টদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি করেছেন বিএনপি নেতারা। এসব ইঙ্গিতে বেশ স্পষ্ট হচ্ছে ড. আতিউর রহমানকে এবার পদত্যাগ করতে হচ্ছে। তবে এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য না পাওয়ায় সেটা সুনিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন