পাকা কলা পুষ্টির বিশাল উৎস!
বছরজুড়ে সবচেয়ে সহজলভ্য এই ফলটি সস্তা ও স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। পাকা কলা পুষ্টির বিশাল উৎস। কলা এমনই একটি ফল যা সব বয়সের লোকেরাই খেতে পারে। কলা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এমনকি পাকা কলার খোসা দাঁতের হলুদ দাগ দূর করতে দারুণ কাজ করে।
কলায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল, যা আপনার ত্বক ও হাড়ের জন্য উপকারী। তাছাড়া এটি ক্যানসার, হৃদরোগ, অসটিওআর্থিরিটিসের রোগের ঝুঁকি কমায়। বয়স্কদের হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যা প্রতিরোধ করে কলা। প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলায় থাকে, পানি ৭০.১%, প্রোটিন ১.২%, ফ্যাট বা চর্বি ০.৩%, খনিজ লবণ ০.৮%, আঁশ ০.৪%,শর্করা ৭.২%। তাছারা খনিজ লবণ এবং ভিটামিন ক্যালসিয়াম ৮৫মিলিগ্রাম., ফসফরাস ৫০মিলিগ্রাম,আয়রন ০.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি, অল্প ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ৮ মিলিগ্রাম, মোট ক্যালরি ১১৬।
অবসাদ:
অবসাদে ভোগা কিছু মানুষেরা কলা খেলে ভাল বোধ করেন । কলায় থাকা ট্রিপটোফ্যান প্রোটিন মানুষের শরীরে পরিণত করে সিরোটোনিন হরমোনে। সিরোটোনিন হরমোন অব হ্যাপিনেস নামে পরিচিত। শরীরে এই হরমোনের মাত্রা বাড়লে মন ভালো থাকে, আরামবোধ করে। মুড অফ একটি অতি পরিচিত প্রি-মেন্সট্রয়াল সিনড্রোম। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৬ শরীরে গ্লুকোজের সামঞ্জস্য বজায় রেখে মুড ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
অ্যানিমিয়া:
কলার মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমাণ আয়রণ রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে। ফলে অ্যামিনিয়ার সম্ভাবনা কমে। এমনকি অ্যানিমিয়া সারাতেও সাহায্য করে কলা।
রক্তচাপ:
কলার মধ্যে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি এবং লবণের মাত্রা কম থাকায় উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা রুখতে পারে কলা।
মস্তিষ্ক:
টানা এক বছর ধরে গবেষণা চালানো হয়েছিল ইংল্যান্ডের টুইকেনহ্যাম স্কুলের ২০০ জন শিক্ষার্থীর ওপর। পরীক্ষার আগে টানা সকাল, দুপুর ও রাতের কলা খাওয়ানো হয় তাদের। কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম তাদের মনোসংযোগ বাড়ানোর ফলে অন্যদের থেকে পরীক্ষায় ভাল করেছিলেন ওই ২০০ জন শিক্ষার্থী।
কোষ্ঠকাঠিন্য:
কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।
হ্যাংওভার:
আগের রাতের অতিরিক্ত মদ্যপানের হ্যাংওভার কাটাতে বানান মিল্কশেকের কোনো তুলনা নেই। সঙ্গে যদি থাকে ১ চামচ মধু। কলা শরীরের অস্বস্তি কমায়, দুধ পেট ঠাণ্ডা করে ও মধু বজায় রাখে রক্তে শর্করার মাত্রা।
মর্নিং সিকনেস:
কাজের চাপ, মানসিক চাপে অনেক সময়ই সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ বোধ করি আমরা। রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকায় কম থাকে এনার্জির মাত্রাও। এই সময় কলা বজায় রাখে রক্তে শর্করার সঠিক মাত্রা।
মশার কামড়:
মশার কামড়ে ফুলে, লাল হয়ে ওঠা ত্বকের যত্ন নিতে ক্রিম বা অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করার আগে কলার খোসা ঘষে দেখুন ত্বকের ফুলে ওঠা অংশে।
স্নায়ু:
কলায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি যা স্নায়ুকে শান্ত করে। মানসিক চাপ কাটাতে ফ্যাটি ফুডের থেকে বেশি প্রয়োজনীয় কলা। কার্বোহাইড্রেটে পরিপূর্ণ হওয়ায় কলা রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রেখে স্নায়ুবিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
আলসার:
নরম ও মিহি হওয়ার জন্য পেটের সমস্যায় খুবই উপকারী খাবার কলা। অত্যন্ত খারাপ পেটের রোগেও কলাই একমাত্র ফল যা নির্বিঘ্নে খাওয়া যেতে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
অনেক দেশে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে কলা ব্যবহার করা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের জ্বর হলে ওষুধের বদলে খাওয়ানো হয় কলা। থাইল্যান্ডে গর্ভস্থ সন্তানের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে কলা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।
দাঁত সাদা:
ঘরোয়া উপায়ে দাঁত সাদা করতে চাইলে ব্যবহার করতে পারেন কলার খোসা। কলার খোসার ভেতরের দিকটা দাঁতে ঘষতে থাকুন ২ মিনিট ধরে। এরপর ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মেজে ফেলুন। মাত্র ৭ দিনেই দাঁত হয়ে উঠবে ঝকঝকে সাদা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন

রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন
কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন

জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন