পান্তা-ইলিশের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের কি সম্পর্ক?

বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য চড়া দামে ইলিশ কেনার প্রতিযোগিতায় সামিল হওয়া কতটা সমীচীন তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে বাংলাদেশে।
এই প্রথম এভাবে ইলিশ কেনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রচারণায় নেমেছেন বাংলাদেশের একদল সংস্কৃতি কর্মী।
তারা বলছেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্যের সঙ্গে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার কোন সম্পর্ক নেই।
ঢাকার কাঁচা বাজারগুলোতে এখন সবচেয়ে দুস্প্রাপ্য পণ্য হয়ে উঠেছে ইলিশ।
পহেলা বৈশাখের আগে অনেকেই এক জোড়া ইলিশ মাছ কেনার জন্য মরিয়া। আর মাছ বিক্রেতারাও এর সুযোগ নিচ্ছেন পুরোদমে।
ঢাকার হাতিরপুল বাজারের এক বিক্রেতা দাবি করলেন, সবোর্চ্চ এক লাখ টাকা দামে তিনি ৪টি ইলিশ বিক্রি করেছেন। এগুলোর ক্রেতা কারা তা তিনি বলতে চাননি। এছাড়া ৫শ থেকে তিন/চার হাজারে মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
মাকসুদ: বৈশাখের সঙ্গে ইলিশের কোন সম্পর্ক নেই
দাম বেড়ে যাবে এমন আশংকায় অনেকে অবশ্য আগে-ভাগেই মাছ কিনে রেখে দিয়েছেন ফ্রিজে।
ধানমন্ডির বাসিন্দা সাহনাজ পারভিনের কাছে পহেলা বৈশাখে ইলিশ একেবারে অপরিহার্য।
“গরমের কারণে পান্তা খেলে অনেকে মনে করে শরীর ঠাণ্ডা থাকে । আমারও ওইরকমই মনে হয়। তাছাড়া আমরা মাছে-ভাতে বাঙ্গালি, তাই পান্তার সাথে নববর্ষে ইলিশই পছন্দ করি”।
কিন্তু নববষে ইলিশ মাছ খাওয়া কতটা জরুরি? আর বাংলার ঐতিহহ্যের সাথে তার সম্পর্কই বা কতটা? এমনই প্রশ্ন এখন তুলছেন অনেকেই।
ইলিশের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় পহেলা বৈশাখে ইলিশ বর্জন করে মাছ বাঁচানোর আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বেশ ভালোভাবেই চলছে এমন প্রচারণা।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এই প্রচারে শামিল হয়েছেন ব্যান্ড সঙ্গীতের জনপ্রিয় একজন শিল্পী মাকসুদুল হক। তিনি মনে করেন, গ্রাম বাংলায় পহেলা বৈশাখ উদযাপনের যে ঐতিহ্য তার সাথে ইলিশের কোন সম্পর্ক নেই।
“ বৈশাখের সাথে ইলিশের কোনও সম্পর্ক নেই। গ্রামবাংলায় গিয়ে দেখবেন সেখানে এখন ইলিশ নেই। তাদের খাওয়ার সামর্থ্যও নেই। আর আমরা কি খাচ্ছি মাছও খাচ্ছি, ডিমও খাচ্ছি। ভবিষ্যতের ইলিশগুলোকে শেষ করে দিচ্ছি”।
বাংলার ঐতিহ্য নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন অধ্যাপক ও বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। কিন্তু ইলিশ খাওয়ার সাথে বাংলা নববর্ষের কি আদৌ কোন যোগাযোগ আছে? জানতে চাইলে মিস্টার খান বলেন বাঙ্গালির নববর্ষ উদযাপনের চিরায়ত সংস্কৃতির সাথে ইলিশের কোন সম্পর্ক নেই।
“বৈশাখে যখন খরার মাস যখন কোনো ফসল হতো না তখন কৃষকদের হাতে পয়সাও থাকতো না। সুতরাং তাদের পক্ষে ইলিশ কিনে খাওয়া সম্ভব হতো না। সুতরাং এটা মোটেও সত্যি নয় যে, কৃষকরা নববর্ষ উদযাপনে পান্তা ইলিশ খেয়ে বছর শুরু করতো। গ্রামবাংলায় নববর্ষের উৎসবই ছিল খুব ছোট আকারে। কৃষাণী আগের রাতে একটি নতুন ঘটে কাঁচা আমের ডাল ভিজিয়ে রাখতো, চাল ভিজিয়ে রাখতো। সকালে কৃষক সেই চাল পানি খেত, এবং শরীরে কৃষাণী পানিটা ছিটিয়ে দিত। তারপর সে হালচাষ করতে যেত। দুপুরবেলায় পান্তা খেতে পারতো কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ দিয়ে। কখনো কখনো একটু শুটকি, একটু বেগুণ ভর্তা ও একটু আলু ভর্তা দিয়ে খেত”।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

দেশের কয়েকটি অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে সতর্কতা
দেশের সাতটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টিবিস্তারিত পড়ুন

শিবির সভাপতি: অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করতে পারেনি
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকার পুরোপুরি ব্যর্থবিস্তারিত পড়ুন

মহাকাশে কতগুলো স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, শীর্ষে কোন দেশ?
এখন পর্যন্ত পৃথিবীর কক্ষপথে মোট ৩০ হাজারের বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণবিস্তারিত পড়ুন