পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে কিশোর হত্যা : আদালতে স্বীকারোক্তি
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এক কিশোর শ্রমিকের পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সহকর্মী রায়হানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত শ্রমিকের পিতা মো: শাহজাহান বাদি হয়ে আজ বৃহস্পতিবার সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। রায়হান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
গতকাল বুধবার রাত ১০টায় উপজেলার মৈষটেক এলাকার বিআর স্পিনিং মিলে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম মো. ইয়ামিন (১৫)। সে বিআর স্পিনিং মিলের ফিনিশিং শাখার রিং রানার শ্রমিক।
এদিকে আটককৃত রায়হানকে ওই মামলার আসামি করে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত রায়হানকে বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মোহাসিনের আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারা স্বাকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
অন্যদিকে নিহত ইয়ামিনের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে আজ বৃহস্পতিবার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
নিহতের লাশ আড়াইহাজারের নিজ গ্রামে জানাযা শেষে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মৈষটেক এলাকায় অবস্থিত এমআর গ্রুপের সুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিআর স্পিনিং মিলের ফিনিশিং শাখার রিং রানার পদে শ্রমিক ইয়ামিন। ইয়ামিন গতকাল বুধবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মিলের ওয়ার্কশপে কাজ করছিল। রাত ১০টার দিকে কাজ শেষে বাতাসের মেশিনের সামনে শরীরে থাকা তুলা পরিস্কার করে। ধারণা করা হচ্ছে, দুষ্টুমির ছলে ওই সময়ই ইয়ামিনের সহকর্মী ফিনিশিং শাখার রিং লাইনম্যান পদে কর্মরত রায়হান ইয়ার কম্প্রেসরের পাইপ ইয়ামিনের পায়ুপথে চেপে ধরে। এক পর্যায়ে ইয়ামিন অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে পড়ে কাতরাতে থাকে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইয়ামিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে রাতেই পুলিশ ওই কারখানা থেকে রায়হানকে আটক করেছে।
নিহত ইয়ামিন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বগাদি শাহজাহান মিয়ার ছেলে। ওই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত রায়হান সোনারগাঁওয়ের জামপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের নুরুল হকের ছেলে।
বিআর স্পিনিং মিলের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে কাজ করার সময় রায়হান নামের এক শ্রমিক কম্প্রেসার মেশিন দিয়ে ইয়ামিনের পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে দিলে সে গুরুতর অসুস্থ হয়। তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল, পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রফিকুল আরও জানান, রায়হানকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে কী কারণে রায়হান এ কাজ করেছে তা জানাতে পারিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিন ওই কারাখানা এলাকা গিয়ে দেখা যায়, মৈষটেক এলাকার বিআর স্পিনিং মিল ও এর চারপাশ এলাকায় বিপুল সংখ্যক র্যাব, পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কারাখানা এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে রেখেছে আইনশংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় কারখানার কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছিল।
পুলিশের দাবি শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে এমন আশংকায় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নিয়েছে।
নিহত ইয়ামিনের পরিবারের দাবি, এ হত্যাকান্ডের পর আমাদেরকে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ। তার মা শাহনাজ বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে তার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ মো: মঞ্জুর কাদের পিপিএম জানান, কিশোর হত্যার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আসামী রায়হানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন