‘পুরুষদের যৌনতার ফাঁদে ফেলে নগ্ন অবস্থায় ছবি তুলে ‘ফিটিং’ দেই’
‘মার্কেট, ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকান, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে মক্কেল খুঁজি। যার পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে মনে হয় টাকা-পয়সা আছে, টার্গেট করি তাকে। পরে তার মোবাইল ফোন নম্বর জোগাড় করে ফোনে প্রেমের সম্পর্ক করি। দুই-তিন দিনের মাথায় তাকে যৌনতার (ফিজিক্যাল রিলেশনের) জন্য আমাদের ভাড়া করা নির্ধারিত ফ্ল্যাটে নিয়ে যাই। পরে সেখানে নগ্ন অবস্থায় ওই ব্যক্তির ছবি তুলে ফিটিং (ব্ল্যাকমেইল) দেই।’
কথাগুলো ওই অভিনব প্রতারণার কাজে জড়িত যশোর জেলার নড়াইলের পলি আক্তার নামের এক নারীর।
গত মঙ্গলবার রাতে এক ব্যক্তিকে প্রতারণার জালে ফাঁসিয়ে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় পলিসহ চক্রটিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এলাকাবাসী। এ সময় স্থানীয় লোকজনের রোষের মুখে পলি সবিস্তারে জানান তাদের পাতা ফাঁদে পুরুষদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া ও কৌশল।
পরে পলি, তার বোন, সহযোগী নাজমুল ও প্রতারণার কাজে সহযোগিতার অভিযোগে ফ্ল্যাটের মালিক কামরুল হাসানকে আটক করে সাভারের আশুলিয়া থানার পুলিশ। পরদিন সকালে আটক চারজনসহ ওই চক্রটির পলাতক আরো দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
মঙ্গলবার রাতে আশুলিয়ার গোছারারটেক এলাকায় গ্রেপ্তার কামরুল ইসলামের বাড়ির তৃতীয় তলায় গত ছয় মাস ধরে প্রতারণার ফাঁদ পেতে রেখেছিল চক্রটি।
সূত্র জানায়, শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বিভিন্ন ফ্ল্যাট বাসায় প্রতারণার এই জাল বিছিয়ে রেখেছে একাধিক চক্র। এর মধ্যে কবরস্থান রোডে আমিন মডেল টাউন আবাসিক এলাকায় যশোর-নড়াইল এলাকার ইসমত আরা বিজলী নামের এক নারী ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে দীর্ঘ চার বছর ধরে এই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। মূলত ওই নারীই বিভিন্ন অসহায় মেয়েদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত করেন। আর পলাশবাড়ীর সিরাজুল ইসলামের বাড়িতেও বিজলীর কর্মী পলি ও তার বোন একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে একই কাজ করে আসছিলেন। এ ছাড়া বাইপাইল, নবীনগর, জামগড়া, পল্লীবিদ্যুৎ, জিরানীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ফ্ল্যাট বাসায় ‘মঞ্চস্থ’ হয় এই প্রতারণা রঙ্গ।
ব্লাকমেইল করার কৌশল সম্পর্কে সূত্রটি আরো জানায়, এই চক্রে আরো ৩০-৪০ জন নারী ও পুরুষ রয়েছেন। এসব নারীর প্রেমের ফাঁদে ফেলার জন্য মূল টার্গেট হিসেবে বিবেচিত হয় সরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীরা। তাদের প্রেমের জালে আটকে শারীরিক সম্পর্কের টোপ ফেলে ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর এই চক্রের চার-পাঁচজন পুরুষ সদস্য ডিবি ও সাংবাদিক পরিচয়ে হঠাৎ করে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে ওই ব্যক্তিকে বিব্রতকর অবস্থায় পায়। সেখানে জোরপূর্বক তার নগ্ন ছবি তুলে তা মিডিয়ায় প্রকাশ করার হুমকি দেয়া হয়। এটি বন্ধ করতে ন্যূনতম ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত দাবি করে চক্রটি। আর এসব কাজের সঙ্গে জড়িতরা কেউ নিজেকে পুলিশের সোর্স, কেউ বা সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেয়।
এলাকাবাসী জানায়, মঙ্গলবার রাতে সিরাজুলের বাড়ি থেকে পুলিশের হাতে আটক মো. নাজমুল নামের ব্যক্তিটি নিজেকে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক শাহাদাত হোসেন, শহিদুল ইসলামসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার সোর্স বলে পরিচয় দিতেন। মাঝেমধ্যে তিনি কোনো এক এসপির বডিগার্ড হিসেবেও নিজেকে জাহির করতেন। এ ছাড়া নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত সবুজ খান নামের এক ব্যক্তি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতেন, যদিও তাকে কখনো সাংবাদিকতা করতে দেখা যায়নি।
তবে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়দানকারী নাজমুল তাদের হয়ে সোর্সের কাজ করেন কি না জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক শাহাদাত হোসেন, শহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম (সম্প্রতি বদলি হয়ে গেছেন) জানান, নাজমুল নামে কাউকে চেনেন না তারা।
গত মঙ্গলবার রাতের ঘটনার ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিতের পর বাড়িওয়ালাসহ তিনজনকে আটক করি। পরে তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে পুরুষদের ফাঁদে ফেলে টাকা আত্মসাতের ব্যাপারটি। ওই রাতের ঘটনায় প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগী থানায় মামলা করেন।’সূত্র- ঢাকাটাইমস
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন