সম্পর্কে নারী-পুরুষ উভয়ই প্রতারণা করতে পারেন। তবে নারীদের জোর দাবি, পুরুষরাই বেশি প্রতারণা করেন। কে বেশি প্রতারণা করেন তা আলোচনার বিষয় নয়। তবে বিয়ে বিষয়ক কাউন্সিলর এম গ্যারি নিউম্যান তার গবেষণায় তুলে ধরেছেন, পুরুষরা কি কি কারণে প্রতারণা করেন। গবেষক প্রতারক হিসাবে চিহ্নিত ২০০ জন পুরুষকে নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। এমএসএন-এর এক গবেষণায় যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

১. গবেষণায় বলা হয়, ৪৮ শতাংশ পুরুষরা আবেগগত দিক থেকে অতৃপ্ত থাকায় প্রাথমিক অবস্থায় প্রতারণার আশ্রয় নেন। তবে একটা ভুল তথ্য বহুকাল থেকে প্রচলিত হয়ে আসছে যে, পুরুষরা কেবলমাত্র যৌনতার দিক থেকে অতৃপ্ত থাকায় প্রতারণা করেন। কারণ সকল পুরুষের যৌনজীবনে তৃপ্ত থাকাটা জরুরি। গবেষণায় উঠে এসেছে যে, প্রতারকদের ৮ শতাংশ যৌনজীবনে অতৃপ্ত থাকার কারণে প্রতারণার আশ্রয় নেন। তা ছাড়া যারা এ কারণে প্রতারণা করতে চান না, তাদের মাঝেও এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করে।

২. গবেষণার আরেকট অংশে বলা হয়, ৬৬ শতাংশ পুরুষ প্রতারণা করে দারুণ অনুতাপে ভোগেন। ভুক্তভোগী পুরুষরা সত্যিই দারুণ মনোকষ্টে থাকেন। প্রতারকদের ৬৮ শতাংশ জীবনে কখনো ভাবেননি যে তারা সঙ্গিনীর সঙ্গে প্রতারণা করবেন। তবে এই অনুতাপ পুরুষদের প্রতারণা প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আনতে যথেষ্ট নয়। মুহূর্তের আবেগ পুরুষরা ধরে রাখেন এবং পরে তার বিস্ফোরণ ঘটে। এ কারণে স্বামী যদি প্রতারণা করবেন না বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়ে থাকেন, তবুও ঘটনা ঘটে যায়।

৩. প্রতারক পুরুষদের ৭৭ শতাংশের এমন কোনো কাছের বন্ধু রয়েছেন যিনিও তার সঙ্গিনীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এ ক্ষেত্রে অসৎ সঙ্গে সর্বনাশের ঘটনা ঘটে।

৪. ৪০ শতাংশ প্রতারক পুরুষ কর্মক্ষেত্রে কোনো নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সাধারণত সেই নারী সহকর্মী বিভিন্ন কাজে সহায়তা করেন। তার কাজের প্রশংসা করেন। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এবং পারস্পরিক আবেগের লেনদেন ঘটে। এভাবে ধীরে ধীরে তারা ইতিবাচক পরিবেশে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।

৫. পুরুষদের ১২ শতাংশ জানান, নতুন সঙ্গিনী তার স্ত্রীর চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয়। আর এ কারণেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এ ক্ষেত্রে পুরুষরা ভেবে থাকেন, আরো রূপসী নারীর সঙ্গ সময়টা আরো ভালো যাবে। তাদের সঙ্গে সেক্স হবে আরো বেশি উপভোগ্য। তবে আকর্ষণবোধটাই বেশি কাজ করে। পরবর্তীতে যৌনতার কথা মাথায় আসে।

৬. সম্পর্কের প্রথম দিনই নতুন সঙ্গিনীর সঙ্গে যৌনকর্ম করেছেন ৬ শতাংশ প্রতারক পুরুষ। এদের ৭৩ শতাংশ কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগেও প্রায় ১ মাস ধরে নানা চিন্তা করে থাকেন। যৌনকর্মে জড়ানোর ক্ষেত্রে তাদের সময় অনেক বেশি।

সম্পর্কে ঝাগড়া-বিবাদ হবেই। সাধারণত পরিণতিতে মিল হবে, অথবা সমাধান ছাড়াই যন্ত্রণাদায়ক পরিণতির দিকে পরিস্থিতি এগোবে। অথচ যে বিষয়েই ঝামেলা লাগুক না কেন, আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে সব বিবাদের অবসান ঘঠতে পারে। এখানে এ বিষয়ে পরামর্শ নিন।

১. একটু ব্রেক এবং আবার শুরু : তর্ক-বিতর্কের শুরুটা যৌক্তিক থাকে। কিন্তু খুব বিগড়ে যায় পরিস্থিতি। যখনই দেখবেন পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে, তখনই বুঝবেন একে এগিয়ে নিলে যুদ্ধাবস্থা দেখা দেবে। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ড. বারখা চুলানি বলেন, ঠিক এ সময়টাতে সচেতনদের একটু ব্রেক নেওয়া উচিত। মুহূর্তেই মাথা ঠাণ্ডা হয়ে আসবে এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি সহজেই এড়িয়ে যেতে পারছেন।

২. অন্য কিছু উপভোগ করুন : বিতর্কের শেষ নাও হতে পারে। বিতর্ক শেষ না করে এগিয়ে নেওয়ার পথ খোলা রাখুন। তবে এর মাঝখানে বড় ধরনের ব্রেক নিন। এ সময়টাতে পছন্দের কাজ করুন। গান শুনতে পারেন, ঘুমিয়ে নিতে পারেন বা একটু ঘুরেও আসতেও দোষ নেই।

৩. কথা না বলে শুনতে থাকুন : ঝগড়ার সময় একের পর এক উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় দু’পক্ষ থেকেই ঘটতে থাকে। আপনি যেহেতু থেমে যাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন, কাজেই থেকে যান। অপরকে বলতে দিন। একতরফা যিনি বলছেন, তিনিও চুপ হয়ে যাবেন।