পুলিশের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও পালাক্রমে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
এবার খোদ রাজধানীতে রামপুরা থানা পুলিশের ৩ কর্মকর্তাসহ ৪ সদস্য ও ২ সোর্সের বিরুদ্ধে ডাকাতি, পালাক্রমে গৃহকর্ত্রী ও তার বোনকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মতিঝিল জোনের উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা। অভিযোগে জানা গেছে, রামপুরা থানার ৭৮/৭/এ পূর্ব রামপুরা, বউবাজারে গৃহকর্ত্রী জেসমিন আক্তারের বাসায় গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কলিং বেল দেয়। এসময় গৃহকর্ত্রী জেসমিন আক্তার বাসার গেট খোলার সাথে সাথে রামপুরা থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ৪জন পুলিশ সদস্য ও দুইজন সোর্স জোর পূর্বক ঘরে প্রবেশ করে।
তারা হলেন, এসআই রফিকুল ইসলাম, এএসআই মিলন, এএসআই খালেক, কনস্টেবল আসাদ ও পুলিশ সোর্স মাইনুল এবং রিপন। এরপর তারা গৃহকর্ত্রীর মায়ের বেডরুমেও প্রবেশ করে। পুলিশের দুই সোর্স অনুমুতি ছাড়া ওয়্যারড্রপ খুলে তল্লাশি করে। এ সময় গৃহকর্ত্রী তল্লাশির কারণ জানতে চাইলে, তারা গৃহবধূকে নিয়ে টানাহেচড়া করে একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর এএসআই খালেক ও সোর্স মাইনুল এবং রিপন বাসার দু’টি ওয়্যারড্রপ ও সুকেচ তচনছ করে।
এরপর তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। আর সোর্স মাইনুল বেডরুমে থাকা অপর এক ওয়্যারড্রপ খুলে তা থেকে ৬ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, ১০ আনা ওজনের ২ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল নেয়। পরে আমার ব্যবহৃত একটি সিমফোনি মোবাইল সেট নিয়ে পুলিশের হাতে দেন।
জেসমিন আক্তার অভিযোগ করে আরো বলেন, আমার মোবাইল সেটে ০১৯২৭৯৩১৮৩০ ও ০১৭২৪৬৯৬৭৬৬ নম্বরের সীম ব্যবহৃত হচ্ছে। এরপর পুলিশ ও সোর্স আমার বৃদ্ধ মা, আমার বড় বোন নিলুফাসহ আমাদের জোর করে গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুনরায় এএসআই খালেক আমার বান্ধবী শাহিনুরের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা নেয়। পরে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক এএসআই খালেক, এসআই রফিক, কনস্টেবল আসাদ ও সোর্স মাইনুল একটি রুমে নিয়ে দরজা আটকাইয়া টানাহেচড়া করে। তারা আমার ও আমার বান্ধবীর ওড়না টেনে ফেলে দিয়ে এসআই রফিক আমাদের জড়িয়ে ধরে। পর্যায়ক্রমে সোর্স মাইনুল ও এসআই রফিক আমার বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানী করে ও অনেক খারাপ আচরণ করে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
অভিযোগকারী শাহিনুর জানান, বিনা কারণে চার পুলিশ সদস্য ও সোর্সরা ঘরে ঢুকে প্রায় ৩ ঘণ্টা বাসায় তচনছ ও লুটপাট চালিয়েই ক্ষ্যন্ত হয়নি। তারা আমাদের শারীরিক ও মানুসিকভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়েছেন। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার অভিযোগ নেই বা অবৈধ কোনো জিনিসও তারা আমার ঘরে পাননি।
একপর্যায়ে পুলিশ সদস্য ও সোর্সরা বাসা থেকে চলে যাওয়ার সময় আমাদের হুমকি দিয়ে গেছে, আমরা যাতে কোথাও কারো কাছে কোনো অভিযোগ না করি। যদি অভিযোগ করা হয়, তাহলে আমাকে ইয়াবা দিয়ে মামলায় জেল খাটানোর হুমকি দিয়ে গেছেন এবং বলেছেন জীবনে আর সূর্যের আলো দেখবো না।
স্থানীয় অপর এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রামপুরা থানার এসআই রফিক ও সোর্স মাইনুল ও রিপন মিথ্যা অভিযোগে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে গিয়ে একই কায়দায় হয়রানী করে। তাদের বে-আইনী কর্মকাণ্ড এলাকার বাসিন্দারা প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।
জেসমিন আক্তার আরো জানান, এ ঘটনার পর আমরা সামাজিক ও মানষিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনদের সাথে আলোচনা করে মতিঝিল জোনের উপ-পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এই অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ এখন আমার মোবাইলটি ফেরত দিতে চাচ্ছেন। কিন্তু স্বর্ণালঙ্কারগুলোর ব্যাপারে অস্বীকার করছেন।
এ ব্যাপারে রামপুরা থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, সিনিয়র অফিসারদের কাছে অভিযোগ করা হলে তাদের কাছ থেকেই জানুন। আর অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তো আমার কথাই আমি বলবো। তার পরও যদি জানতে চান, তাহলে আমি বলবো বিষয়টি আপনারা তদন্ত করুন।
রামপুরা থানার এএসআই খালেক জানান, এ অভিযোগ মিথ্যা। আমি এই ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই- এছাড়া, আর কোন কথা বলতে পারবো না। এরপর কনস্টেবল আসাদ বলেন, আপনারাতো জানেন, আমরা কনস্টেবল, স্যারেরা যেখানে আমাদের ডিউটিতে নেন, সেখানেই আমাদের যেতে হয়। আমাদের করার কিছুই থাকে না। কয়েক দিন আগে ওসি স্যার ডেকে এই ঘটনাটির ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন। তিনি বিষয়টি জানেন। তাই তার সঙ্গেই কথা বলেন। এরপর রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তার ফোনটি রিসিভ করেনি।
এব্যাপারে মতিঝিল জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ এখনো আমার কাছে আসেনি। আমি অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তবে নির্যাতিত শাহিনুর জানান, গত ২ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে মতিঝিল জোনের এডিসি’র হাতে হাতে লিখিত অভিযোগের কপি দেওয়া হয়েছে। এরপর তা রিসিভ করে রেখেছেন। আগামীকাল আবার তার কাছে যাবো বলে জানান তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন