পৃথিবীর সবচাইতে পুরাতন গাছ
গাছের সাথে মানুষের সখ্যতা সেই জন্ম থেকে শুরু। নিঃশ্বাসের বাতাস প্রদান, চলার পথের ক্লান্তি নিরাময়, ক্ষুধা নিবারণ- যুগে যুগে গাছের কাছে আরো হাজারটা কারণে ঋনী আমরা।
বলা যায় গাছ একরকম বন্ধুই আমাদের। এদের প্রতি যতটা না রয়েছে আমাদের ভালোবাসা, ততটাই রয়েছে আগ্রহ। আর প্রতিনিয়ত গাছের প্রতি জন্ম নেওয়া আমাদের এই আগ্রহই গবেষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে পৃথিবীর সবচাইতে পুরোনো আর বয়স্ক গাছকে খুঁজে বের করতে। পৃথিবীর শুরু থেকে এখন অব্দি এর জলবায়ু ও পরিবেশ তৈরিতে প্রচন্ড রকমের ভূমিকা রেখেছে গাছেরা।
তাদের কার্বন ডাইঅক্সাইড নিয়ে অক্সিজেন ছাড়বার ক্ষমতা না থাকলে কোন প্রাণীরই হযতো পৃথিবীতে প্রথম পা রাখার সুযোগ হতো না। সুতরাং এটা ধরে নেওয়াই যায় যে এই গাছেরাই ছিল পৃথিবীর প্রথম বাসিন্দা। তবে কোন গাছটা? ওয়াটেজিয়া নামক প্রায় ৩৯৭ মিলিয়ন বছর পুরোন একটি গাছের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যেটা বর্তমান গাছগুলোর সাথে অনেকটাই সাদৃশ্যপূর্ণ।
এদের সর্বোচ্চ বেড়ে ওঠার ক্ষমতা ছিল ১০ মিটার অব্দি। পৃথিবীতে এসেই নিজের বংশকে সবখানে ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছিল এরা। ২০০৪ সালে নিউ ইয়র্কে ১৮০ কিলোগ্রামের ফসিল খুঁজে পাওয়া যায় ওয়াটিজাদের। কিন্তু সবচাইতে পুরোন গাছ হলেও ওয়াটিজা গাছ বর্তমানে বিলুপ্ত ।
তাহলে প্রশ্ন ওঠে বর্তমান পৃথিবীর সবচাইতে বেঁচে থাকা পুরোন গাছ কোনটি? এ প্রশ্নের উত্তর রয়েছে মোট দুইটি। যদি শিকড়ের কথা ধরা হয় তাহলে পৃথিবীর সবচাইতে পুরোন আর বয়স্ক গাছ হিসেবে উল্লেখ করা যায় ২০০৪ সালে খুঁজে পাওয়া সুইডেনের ক্রিসমাস ট্রি এর কথা। এর শিকড়কে বরফ যুগের বলে মন্তব্য করেন অনুসন্ধানীরা।
কিন্তু সুইডেনের মাটি যেখানে অনেকটা সময়ই বরফে ঢাকা থাকে সেখানে এতদিন অব্দি বাঁচলো কি করে গাছটি? খুব কঠিন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাওয়া যায় এক অদ্ভুত ব্যাপার। আর সেটা হচ্ছে এই বয়স্ক গাছটির শিকড় মাটির নীচ অব্দি গত ৯,৫৫০ বছর ধরে টিকে থাকলেও বাইরের ৪ মিটার অংশটি কিন্তু পাল্টেছে বহুবার।
আর এর কারণ হচ্ছে গাছটির শিকড় থেকে জন্ম নেওয়ার প্রবণতা। একটি গাছ মরে যাওয়ার সময়ই একই শিকড় থেকে আরেকটি গাছ জন্ম নেয় এক্ষেত্রে (ন্যাশনাল জিওগ্রাফি)। ফলে শিকড় হিসেবে বর্তমান পৃথিবীর সবচাইতে পুরোন গাছ সুইডেনের এই ক্রিসমাস ট্রি। তবে যদি আগাগোড়া কোন গাছকে এই আখ্যা দিতে চাওয়া হয় সেটার হিসেব গড়াবে হোয়াইট মাউন্টেইন পর্যন্ত।
লাইভসায়েন্স অনুসারে এই গাছটিকে আবিষ্কার করে প্রথম রকি মাউন্টেইন ট্রি রিং গবেষণা দল। তারাই সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে খুঁজে পায় সাদা পাহাড়ের ওপর প্রায় ৫,০৬২ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা পি. লঙ্গাইভা গাছটিকে। এর আগে অবশ্য ২০১৩ সাল অব্দি ৪,৮৪৫ বছর বয়সের মেথুসিলাহ ছিল পৃথিবীর সবচাইতে পুরোন আর বয়স্ক গাছের তালিকায়।
প্রতিদিন মানুষ নিজেকে উন্নত করছে। উন্নত করে তুলছে তার প্রযুক্তিকে। আর তাই বর্তমানে অতীতের শিকড়কেও খুঁজে ফেলতে সক্ষম হয়েছে তারা। চমকে দিতে পেরেছে প্রকৃতিকে। তবে ব্যাপারটা কেবল একপক্ষীয় নয়। কে জানে, সামনে হয়তো প্রকৃতি আরো হাজার বছরের পুরোন কোন গাছকে উপহার দিয়ে আবার চমকে দেবে মানুষকে। সেই চমক পাওয়ার অপেক্ষাতেই আজ অব্দি গাছের ওপর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন