শুক্রবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৫

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

পৃথিবীর সব পারমাণবিক বোমা একই সময়ে বিস্ফোরিত হলে কী হবে?

পৃথিবীর সর্বকালের সবচাইতে ভয়াবহ অস্ত্র সম্ভবত পারমাণবিক বোমা। এদের ধ্বংসযজ্ঞের কথা চিন্তা করলেও শিউরে উঠতে হয়। সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ নিউক্লিয়ার ওয়েপন আছে, সেগুলো সব একসাথে বিস্ফোরিত হওয়া শুরু করলে কী হবে ভাবতে পারছেন? মোটেই ভালো কিছু হবে না, এটা জানি আমরা সবাই। কিন্তু বিজ্ঞান কী বলে?

চলুন আগে দেখে নিই বিভিন্ন দেশের ঝুলিতে কী কী পারমাণবিক অস্ত্র জমা আছে।

ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্টস এর ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে ১৪,৯০০ টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড আছে। এর মাঝে আমেরিকার আছে ৬,৮০০ টি, রাশিয়ার আছে ৭০০০ টি। কমের মাঝে ইংল্যান্ডের আছে ২১৫টি, ফ্রান্সের ৩০০টি, চীনের ২৬০টি, ভারতের ১২০টি, পাকিস্তানের ১৩০টি, ইসরায়েলের ৮০টির মতো, উত্তর কোরিয়ার ১০টি।

সবগুলো একই শক্তিমাত্রার, এমনটা নয়। আমেরিকা এবং রাশিয়ারগুলো একেবারে উন্নতমানের, হাইপার-পাওয়ারফুল থার্মোনিউক্লিয়ার প্রযুক্তির অস্ত্র। এদিকে কোরিয়ারগুলো একদম পুরনো আমলের প্লুটোনিয়াম ফিশনের ওপর নির্ভরশীল।

আমেরিকার সবচাইতে শক্তিশালী অস্ত্র হলো B83। হিরোশিমায় ফেলা “লিটল বয়” বোমার ৭৯ গুণ শক্তি রাখে এটি। ভাবুন কোনো কারণে আমেরিকার সাথে রাশিয়ার মন কষাকষিতে রাগ করে রাশিয়ার ওপরে এই বোমা ফেলে দিল আমেরিকা। এটা ভূপৃষ্ঠের ওপর বিস্ফোরিত হলে ৪২০ মিটার ব্যাসের এবং ৯২ মিটার গভীর একটা গর্ত তৈরি করবে ঐ এলাকায়। ৫.৭ বর্গকিলোমিটারের একটি বিশাল আগুনের গোলা তৈরি হবে সেখানে, আর তার তাপমাত্রা হবে ৮৩.৩ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস। কল্পনা করতে পারছেন?

শুধু তাপ নয়, এখানে বিশাল এক চাপ-প্রবাহও তৈরি হবে। বিস্ফোরণের ১৬.৮ বর্গ কিলোমিটারের মাঝে যত ভবন আছে সব চ্যাপ্টা হয়ে যাবে এই চাপে।

থার্মাল রেডিয়েশন থাকবে এদের সাথে। বিস্ফোরণের ৪২০ বর্গকিলোমিটারের মাঝে থাকা প্রতিটি মানুষের শরীরে থার্ড ডিগ্রি বার্ন দেখা দেবে। এর জন্য তাদের এক সেকেন্ডের বেশী কষ্ট হবে না, কারণ এই রেডিয়েশনে ধ্বংস হয়ে যাবে তাদের নার্ভ এন্ডিং।

বিস্ফোরণের পরেও যে পারমাণবিক বোমার প্রভাব দীর্ঘদিন থেকে যায়, তা আমাদের সবারই জানা। এক্ষেত্রে ঐ সময়ে যদি কোনো বায়ু প্রবাহ নাও থাকে, তারপরেও আশেপাশের ২০.৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা এত ভারী রেডিয়েশনের শিকার হবে যে সেখানের ৫০-৯০ শতাংশ মানুষ রেডিয়েশন সিকনেসে মারা যাবে।

এ তো গেল একটা মাত্র পারমাণবিক বোমার ধ্বংসযজ্ঞ। পুরো পৃথিবীর কী হাল হবে যদি এই ১৪,৯০০ টি পারমাণবিক বোমা একসাথে বিস্ফোরিত হয়? আচ্ছা, পুরো পৃথিবীর কথা বাদ দিন। শুধু আমেরিকা আর রাশিয়ার কাছে যেগুলো আছে, (১৩,৮০০টি) তাদের প্রতিটি B83 এর মতো শক্তিশালী ধরে নিই আসুন। এদের মিলিত শক্তি এতই বেশী, যে পুরো আমেরিকায় এত পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করতে পুরো একটা বছর লেগে যায়। সারা পৃথিবীতে সমানভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এসব বোমা বিস্ফোরিত করা হলে তাতে নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যাবে ৯৪ ঘন কিলোমিটার এলাকা। কিন্তু এখানেই তাদের ক্ষতি সীমাবদ্ধ নয়।

২৩২,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার ভবন ও অবকাঠামো উড়ে যাবে। সহজ করে বলতে গেলে নিউ ইয়র্ক সিটির মতো আকারের ২৯৫টি নগরী ধ্বংস হয়ে যাবে। এতে সৃষ্ট ৭৯,০০০ বর্গকিলোমিটার আকারের  আগুনের গোলা যা স্পর্শ করবে তাই বাষ্পীভূত করে ফেলবে। আর লন্ডনের আকারের ৩,৭০০টি শহরের মানুষ পুড়ে যাবে এর কারণে। সবশেষে, এইসব বিস্ফোরণের অবশিষ্টাংশ এবং রেডিয়েশনের কারণে সারা পৃথিবীর ২৮৪,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্রভাবিত হবে এবং এই এলাকার সবাইকেই রেডিয়েশন সিকনেসে আক্রান্ত করবে। কম করে হলেও মিলিয়ন, এমনকি বিলিয়ন মানুষ প্রথম এক ঘন্টার মাঝেই মারা যাবে। কিন্তু এখানেই ক্ষয়ক্ষতি শেষ নয়।

১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মাঝে আমেরিকার ২৩টি নিউক্লিয়ার এক্সপেরিমেন্ট করা হয় বিকিনি আইল্যান্ডে। ছবি: সংগৃহীত

এরপর কী হবে? আসবে শীত।

নিউক্লিয়ার উইন্টার একটি তাত্ত্বিক ঘটনা যা অনেকটা ভলকানিক উইন্টারের মতো। খুব শক্তিশালী আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছাই ও বস্তুকণা তৈরি হয় যা বায়ুমণ্ডলে ভাসতে থাকে ও সূর্যালোক প্রতিফলিত করে বাইরের দিকে পাঠিয়ে দেয়। ফলে পৃথিবী ঠান্ডা হয়ে আসে। ইতিহাস থেকে দেখা যায় এসব ভলকানিক উইন্টার কয়েক বছর অব্যহত থাকে। এমনকি পৃথিবীতে মানুষের আগমনের আগে কয়েক বার মাস এক্সটিংকশন (প্রাণীজগতের বিলুপ্তি) এর পেছনে কিছুটা হলেও এসব ভলকানিক উইন্টারের হাত ছিল। তারা পৃথিবীকে সম্ভবত কয়েকশ বছর পর্যন্ত ঠান্ডা করে রাখতো।

অনেকটা এই ধরণেরই হবে নিউক্লিয়ার উইন্টার। তবে এখানে বায়ুমণ্ডলে ভাসমান ছাইগুলো হবে রেডিওঅ্যাকটিভ। এই ছাই নিঃশ্বাসের সাথে বেশী পরিমাণে গ্রহণ করলে হবে মৃত্যু। এমন একটি নিউক্লিয়ার উইন্টার নিয়ে আসার জন্য সবগুলো পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ যথেষ্ট। এর ফলে সূর্যের প্রায় সবটা আলো থেকে বঞ্চিত হবে পৃথিবী, কয়েক বছরের জন্য। ফলে অন্ধকারে ঢেকে যাবে এই গ্রহ। খুব কম আলো আসার আশা করতে পারি আমরা। অল্প অল্প করে আলো ফিরে আসতে পারে কয়েক দশক এমনকি কয়েক শতক পর। এতে বন্ধ হয়ে যাবে জীবন ধারণের অপরিহার্য একটি প্রক্রিয়া, আলোকসংশ্লেষণ

বেশীরভাগ উদ্ভিদ মারা পড়বে এই নিউক্লিয়ার উইন্টারে। খাবারের অভাব আরেকটি মাস এক্সটিংশন দেখা দেবে। আমাদের মানব প্রজাতিটিও বিলুপ্ত হয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা আছে। আর যারা বেঁচে থাকবে, এই পৃথিবীর ধংসস্তুপের মাঝে প্রতিনিয়ন লড়াই করে বেঁচে থাকতে হবে তাদের।

হ্যাঁ, খুবই হতাশাজনক একটি পরিস্থিতি। তা জানার পরেও পৃথিবীর দেশগুলো বাড়িয়ে চলেছে পারমাণবিক বোমার মজুদ। তারা এগুলো বিস্ফোরিত করার মতো নির্বুদ্ধিতা করবে না, এটা আশা করা ছাড়া আর তেমন কিছু করার নেই আমাদের।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে স্বৈরাচারী শাসক বললেন ট্রাম্প

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি ছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পবিস্তারিত পড়ুন

ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল

আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন

মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬

ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন

  • ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
  • বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
  • একদিনে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৫৭ ফিলিস্তিনি 
  • কানে ব্যান্ডেজ নিয়ে সম্মেলনে ট্রাম্প
  • ওমানে বন্দুকধারীর হামলায় মসজিদের কাছে   ৪জন নিহত
  • ট্রাম্পকে গুলি করা ব্যক্তি দলের নিবন্ধিত ভোটার
  • প্রেসিডেন্ট মাসুদকে সতর্কতা ইরানিদের 
  • ভারতের সঙ্গে চুক্তিতে দেশের মানুষের আস্থা প্রয়োজন
  • ভারত আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু, চীন উন্নয়নের : কাদের
  • ইসরায়েলে মুহুর্মুহু রকেট হামলা ইসলামিক জিহাদের
  • প্রথম বিতর্কের পর ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছেন দোদুল্যমান ভোটাররা!
  • রেবন্ত রেড্ডি এবং চন্দ্রবাবু নাইডু বৈঠক নিয়ে নানা জল্পনা