পেটের দায়ে ভ্যানও চালিয়েছেন জনসন!
ক্রিকেটারদের জীবন এমনিতেই ঘটনাবহুল। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে মিশেল জনসন হয়তো আরও এক ধাপ এগিয়ে থাকবেন। পেস তাণ্ডব তো আছেই – এর বাদে ব্যাটসম্যান হিসেবে অনুশীলন, সংসার চালাতে ভ্যান চালানো – কি না করেছেন তিনি নিজের জীবনে। এ সব কিছু নিয়ে আমাদের এই আয়োজন।
১. মিশেল জনসনের প্রথম প্রেম ক্রিকেট নয়; টেনিস। পিট সাম্প্রাসকে রীতিমত আদর্শ মনে করতেন তিনি। এমনকি মাত্র ১৪ বছর বয়সে ব্রিসবেনে গিয়ে টেনিস ক্যারিয়ার শুরু করার প্রস্তাবও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, এর তিন বছর বাদে জীবনের ‘লক্ষ্য’টাই পাল্টে ফেললেন; স্বপ্ন বোনা শুরু করলেন ক্রিকেটকে ঘিরে। আর সেই স্বপ্নের কারিগর ছিলেন অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি পেসার ডেনিস লিলি। তার প্রথম দেখাতেই ভাল লেগে গিয়েছিল জনসনকে। ১৯৯৮ সালে ১৭ বছর বয়সী জনসনকে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ডেকে নেন। ক্রিকেটার হয়ে ওঠার ‘শুরু’টা ওখান থেকেই শুরু করেন জনসন। লিলির সাথে পরবর্তীতেও সখ্যতা ছিল জনসনের। ২০০৭ সালে ভারতের চেন্নাইয়ে এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনেও লিলির অধীনে ছিলেন তিনি। আর ২০১৩-১৪ মৌসুমের অ্যাশেজে জনসনের অনন্য প্রত্যাবর্তনের মূলেও ছিল লিলির টোটকা।
২. গ্লেন ম্যাকগ্রা, ব্রেট লি ও শন টেইটদের পেস আক্রমণে কখনওই মিশেল জনসন ‘অটোমেটিক চয়েস’ ছিলেন না। এর মধ্যে ইনজুরিও তার ক্যারিয়ারের বড় একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সে সময় কুইন্সল্যান্ডের সাথে চুক্তিও বাতিল হয়ে যায়। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে সংসার চালাতে ওয়াটার ভ্যান চালিয়েছেন। অবশ্য পাশাপাশি ব্রিসবেন ক্রিকেট ক্লাবে ব্যাটিং অনুশীলন চালিয়ে যান।
৩. ২০০৮ সালের পার্থের সেই টেস্ট হয়তো কখনওই ভুলতে পারবেন না জনসন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সে ম্যাচে জনসন সাত উইকেট পান মাত্র ১২ রান দিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানকে মাত্র দুই রানের মধ্যে ফিরিয়ে দেন তিনি। ৬১ রান দিয়ে মোট আট উইকেট নিয়ে শেষ করেন ম্যাচটি। এর এক বছর বাদে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সিরিজে জনসন সবাইকে অবাক করে দেন। তিন টেস্টের সিরিজের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। তিন ম্যাচে তিনি ১৬ উইকেট ও ২৫৫ রান করেন; তার গড় ছিলো ৮৫।
৪. জনসনের ক্রিকেটীয় জীবনের ‘মুকুটে’ পালক হয়ে যুক্ত হয়েছে একেকটা পুরস্কার। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটারের (স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স ট্রফি) পুরষ্কার পেয়েছেন। এর আগে মাত্র একজন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারই দু’বার এই পুরস্কার জিতেন। তিনি হলেন রিকি পন্টিং। এর বাদে টেস্টে মোট ৯ বার ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও দু’বার ম্যান অব দ্য সিরিজ পুরষ্কার পেয়েছেন এবং ওয়ানডেতে ছ’বার ও টি-টোয়েন্টিতে একবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন তিনি।
৫. মিশেল জনসনের মজার কিছু ডাক নাম আছে। সম্প্রতি আরেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার জশ হ্যাজেলউড তার নাম দিয়েছেন ওল’ ম্যান রিভার। পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বর্ষিয়ান বলেই তার এই নাম। তবে, বুড়ো হাড়েও যে জোর আছে সেটা বিশ্বের বড় বড় ব্যাটসম্যানরাও ভালই জানেন। বেশ কয়েকবার ব্যাটসম্যানদের আহত করে ছেড়েছেন জনসন। ২০০৯ সালে দু’বার দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথের হাত ভেঙেছে জনসনের বলে। এছাড়াও চোয়ালে বড় রকমের আঘাত পেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক ব্যাটসম্যান জ্যাক ক্যালিস।
৬. ২০১৩-১৪ মৌসুমের অ্যাশেজে হঠাৎ করেই এক কাণ্ড করে বসেন জনসন। হাজির হন দশাসই এক গোঁফ নিয়ে। পরে জানা যায়, ক্যানসার রোগীদের সমর্থনে ‘মভেম্বর’- ক্যাম্পেইনকে সমর্থন করতেই এই রূপে হাজির হন তিনি।
৭. ২০১২ সালে বাজে একটা ইনজুরির কারণে জাতীয় দল থেকে বাইরে যেতে বাধ্য হন জনসন। বেশ ভেঙ্গেও পড়েন তিনি। তখন পুরো সমর্থন যুগিয়েছিলেন স্ত্রী জেসিকা ব্র্যাটিচ। এর ঠিক এক বছর আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তারা। জনসনের স্ত্রী নিজেও তারকা। অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের মডেল ছিলেন; একই সাথে ব্ল্যাক বেল্টও আছে তার ঝুলিতে। রুবিকা অ্যান নামের ফুটফুটে কন্যাসন্তানও আছে তাদের। জনসন বলেন এই দু’জনই তার ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সমর্থক।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন