পে-স্কেল অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উঠছে আজ
বহুল আলোচিত এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহুল প্রত্যাশিত নতুন পে-স্কেলের (বেতন কাঠামো) প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য সোমবার মন্ত্রিসভায় উঠছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড থাকা না থাকাসহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেওয়ায় অধিকতর যাচাই-বাছাইসহ অনুমোদনের জন্য পে-স্কেল মন্ত্রিসভায় উঠতে এত দেরি হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত পেকমিশন তাদের প্রতিবেদনে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড তুলে দেওয়ার সুপারিশ করলে তা নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধে। এর ফলে পে-স্কেল নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে হয়। সচিব কমিটির সুপারিশসহ প্রতিবেদনটি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড সংস্কার করা হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সচিব কমিটির সুপারিশ অর্থমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তরের পর নিয়ম অনুযায়ী তা অর্থ মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে। পরবর্তী সময়ে তা অর্থবিভাগের বাস্তবায়ন শাখায় পাঠানো হয়। এরই মধ্যে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড নিয়ে অসন্তোষের আশঙ্কা দেখা দেয়। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকরা এর বিরোধিতা করে। ফলে এর আগে দুবার অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা মন্ত্রিসভায় ওঠেনি।
সূত্র জানায়, সরকার যেহেতু স্থায়ী পে-কমিশন করার চিন্তা করছে, সেহেতু কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দিয়েই নতুন পে-স্কেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কারণ স্থায়ী পে-কমিশন হলে প্রতিবছর দেশের বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন-ভাতা কমানো-বাড়ানো হবে। কাজেই টাইমস্কেল আর সিলেকশন গ্রেড বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
নতুন পে-স্কেলে বর্তমান বেতন-ভাতার প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড একই সঙ্গে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এ দুটো রেখে কিছুটা সংস্কার করে পে-স্কেল চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উঠছে।
সূত্র আরো জানায়, মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হওয়ার পরও পে-স্কেল চূড়ান্ত হতে অনেকগুলো কাজ করতে হবে। সেগুলো শেষ হতে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত সময় লাগবে। তবে নতুন পে-স্কেল কার্যকর হবে জুলাই থেকেই।
সরকারি কোষাগার থেকে বেতন পান এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। এদের সবার জন্য বেতন নির্ধারণের ছক পূরণ করতে হবে। প্রতিটি ছকের জন্য ৩৩টি বিষয় আছে। এ ছাড়াও সরকারি, বেসামরিক, পুলিশ, বিজিবি, স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস, নার্সিং পেশায় নিয়োজিত ডিপ্লোমাধারীদের জন্য বেতন স্কেল সংক্রান্ত ৭টি বই তৈরি করতে হবে। তবে সেনাবাহিনীর বই তারা নিজেরাই তৈরি করবে। এসব কাজ সম্পন্ন করতে কমপক্ষে এক মাস লাগবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. হানিফ ভূঁইয়া বলেন, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। অর্থমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাদের বলা হয়েছে, খুব শিগগির পে-কমিশনের প্রতিবেদন মন্ত্রিসভায় উঠবে।
তিনি বলেন, পে-কমিশন ১৬টি গ্রেডের প্রস্তাব করলেও পর্যালোচনা কমিটি কর্তৃক ২০টি স্কেলের মধ্যে কর্মচারীদের জন্য ১০টি স্কেলের ব্যবধান ৪ হাজার ২৫০ টাকা, অপরদিকে কর্মকর্তাদের জন্য ১০ স্কেলের মধ্যে আর্থিক ব্যবধান ৫৯ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পর্যালোচনা কমিটি যে সুপারিশ করেছে, এর আগে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা এতটা বৈষম্যের শিকার হননি। আমরা মনে করি, এ ধরনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তাদের ন্যায্য ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। এ ছাড়া কমিটির সুপারিশে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রথা বাতিল হলে আমরা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হব। এ বিষয়গুলো বিবেচনা না করলে আমরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, সিলেকশন গ্রেডের মাধ্যমে উন্নীত হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্মানিত বোধ করবেন। এ ব্যবস্থা উঠিয়ে দেওয়া হলে তাদের সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হবে।
সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নতুন স্কেলের শুধু বেতন বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত ৫ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ খাতে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয় ২৯ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।
অষ্টম পে-স্কেলে সর্বোচ্চ বেতন হচ্ছে ৭৫ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা। নতুন কাঠামোতে বেতনের গ্রেড থাকছে ২০টি। তবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিবের বেতন ধরা হয়েছে ৯০ হাজার টাকা (নির্ধারিত) এবং জ্যেষ্ঠ সচিবের বেতন ৮৪ হাজার টাকা (নির্ধারিত)।রাইজিংবিডি
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীবিস্তারিত পড়ুন
হাইকোর্টে ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত
হাইকোর্ট বিভাগে ১২ জন বিচারপতিকে আপাতত প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেওয়াবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আঁকা গ্রাফিতি হেঁটে দেখলেন ড. ইউনূস
জুলাই ও আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়বিস্তারিত পড়ুন