প্রতারণার বড় ধরনের ফাঁদ এখন মোবাইল ফোন
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ এখন যোগাযোগরে মাধ্যম হিসাবে মোবাইল ফোন এর প্রতি অনেকখানিই নির্ভরশীল হয়ে গেছে। কিন্তু এই মোবাইল ফোনকে ব্যবহার করে এখান চলছে নানা রকম প্রতারনা। মোবাইল ফোনে কথা বলার ছলে সখ্যতা গড়ে, আবার অসহায় অবস্থা দেখিয়ে সাহায্য চেয়ে নিজেদের এলাকায় নিয়ে আটকে মুক্তিপণ আদায়- এভাবে নারীর ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা ঘটছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নগরীতে তারা এ ধরনের বেশ কয়েকটি প্রতারক চক্রের সন্ধান পেয়েছেন। আগে মাঝে মাঝে এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও সম্প্রতি নগরীতে এদের উৎপাত বেড়ে গেছে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চক্রগুলো সাধারণ লোকজনকে জিম্মি করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আদায় করে।
“তাদের দাবি করা টাকার পরিমাণ থাকে সাধারণত ২০/৩০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত। পুলিশকে না জানিয়ে তাদের দাবি করা অর্থ দিয়ে অনেকেই বের হয়ে আসেন।”
আর যারা টাকা দিতে পারেন না তারাই সাহায্যের জন্য পুলিশের কাছে আসেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এই চক্রগুলো মানুষকে লক্ষ্যবস্ত করে তার মোবাইলে মিসড কল দেয়। ফোন করলে অন্য প্রান্ত থেকে কোনো এক নারী বলেন, “সরি ভুলে কল চলে গেছে।”
কিছুদিন পর সে নম্বর থেকে আবার ফোন আসে। এভাবে আলাপ এবং এক পর্যায়ে দেখা করার প্রস্তাব আসে। আর দেখা করলেই জালে আটকা পড়েন মানুষ। আবার এই চক্রের কিছু নারী জনবহুল কোনো স্থানে দাঁড়িয়ে নিজের অসহায়ত্বের কথা বলে সাহায্য করার অনুরোধ করে। অনুরোধে সাড়া দিয়ে মেয়েটির কথা মতো কোনো জায়গায় গেলে তাকে আটকে ফেলে কয়েকজন।
তখন কোনো এক স্থানে নিয়ে আটকে রেখে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে হুমকি দেওয়া হয় ব্ল্যাকমেইলের। ছবি প্রচার করার হুমকি দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয় টাকা।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এই সব চক্রের নারীরা সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের টার্গেট করে। আটকে রেখে ৩০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দাবি করে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা তানভীর বলেন, গত ১৫ দিনে এ ধরনের ছয়টি প্রতারক চক্রের সন্ধান পেয়েছেন তারা। এভাবে প্রতারণার শিকার হওয়া এক শিপ ইয়ার্ড ব্যবসায়ীকে গত ৩০ জুন বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ওই ঘটনায় হেলাল ও রিপন নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সপ্তাহখানেক আগে মহেশখালীর এক ব্যবসায়ীকে একইভাবে অপহরণ করে আরেকটি চক্র। এসময় আপহরণকারীরা বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে সাতটি নম্বর দেয়।
সবগুলো নম্বর সিলেটের কুলাউড়া এলাকার জানিয়ে আরাফাত বলেন, “আমাদের ধারণা এইসব চক্রের সদস্যরা চট্টগ্রামের বাইরেও বিভিন্ন জেলায় সক্রিয়।”
এর আগে গত ১৫ মে হালিশহর শান্তিবাগ এলাকায় এক যুবককে আটকে রেখে ও বিবস্ত্র অবস্থায় ছবি তুলে টাকা আদায়ের সময় এক তরুণীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছিল খুলশী থানা পুলিশ।
তাদের জানা মতে নগরীতে এই ধরনের আট থেকে ১০টি চক্র আছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সন্তোষ চাকমা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই সব চক্রের পুরুষ সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে ধরা পড়লেও নারীদের সহজে ধরা যায় না।”
নগরীর হালিশহর, বায়েজিদ, আকবর শাহ, পাহাড়তলী, চান্দগাঁও, কর্ণফুলী থানা এলাকায় এই চক্রগুলো সক্রিয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মূলত এক সময় নগরীর বিভিন্ন হোটেলে ডিজে পার্টি করা মেয়েরাই এই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।” আগে বিভিন্ন হোটেলে ডিজে পার্টি হলেও পুলিশের তরফ থেকে এখন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা এখন এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন বলেও ধারণা পুলিশ কর্মকর্তাদের।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন