প্রথম বাংলা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ‘পতাকা’
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে প্রোগ্রামিং। উন্নত দেশগুলোতে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদেরও খেলার ছলে প্রোগ্রামিং ধারণা দেওয়ার নজির রয়েছে।
বাংলাদেশে মাধ্যমিক স্তরে আনা হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নামের একটি বই। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা যখন নিজের মায়ের ভাষায় খেলতে খেলতে প্রোগ্রামিংয়ে হাত পাকাচ্ছে, তখন বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থীর কাছেই এটি বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাথায় ঢুকছে না কিছুই, লক্ষ্য শুধুই পরীক্ষার ফল, আর সেজন্য চলছে না বুঝেই মুখস্থের চেষ্টা। কিন্তু এর মূল কারণ কী?
প্রথমবারের মতো বাংলায় তৈরি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ‘পতাকা’ নির্মাতা দলের দলনেতা ইকরাম হোসেন জানিয়েছেন, আমাদের তরুণদের প্রোগ্রামিংয়ে পিছিয়ে থাকার মূল কারণ ভাষা সমস্যা। নতুনদের কাছে কোডিং জিনিসটি কঠিন বা ঘোলাটে লাগতেই পারে। আইসিটি বিষয়টিতে কোডিংয়ের কিছু জিনিস রয়েছে, যা প্রথমবারের মতো অনেক ছাত্রছাত্রী সহজে নিতে পারে না। নাম্বারের জন্য হয়তো মুখস্থ করে যায় পুরোটাই কিন্তু কোডিংয়ের আসল মজাটাই তারা পায় না। এর মূল কারণ হিসেবে উপযুক্ত ‘সহযোগিতার’ অভাবকেই চিহ্নিত করেন তিনি। এই দলের সদস্যরা হলেন ইকরাম হোসেন, ওসমান গণি নাহিদ ও রাকিব হাসান অমিয়।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সফটওয়্যার প্রকৌশল নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ইকরাম হোসেন। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া পতাকার বেটা সংস্করণের পতাকা কোডের প্রতিটি লাইন হবে সম্পূর্ণ বাংলায়, মোটামুটি দৈনন্দিন ব্যবহৃত একটি বাক্যের মতো। কোড লিখার জন্য আছে কোড হাইলাইটিংসহ একটি চমৎকার কোড এডিটর। আপনার চিন্তাচেতনাকে প্রোগ্রামিং রূপ দেয়া এবং বাংলায় লেখার জন্য পতাকায় যেকোনো ইউনিকোড টুল (অভ্র /ইউনিবিজয়) ব্যবহার করতে পারবেন।
অভ্র/বিজয় পিসিতে ইনস্টল না থাকলেও সমস্যা নেই, এডিটর এ বিল্ট-ইন ফনেটিক বাংলা (অভ্র) লেখার সুবিধা রয়েছে। তাছাড়া এডিটরের ডানে থাকা কিওয়ার্ডগুলো ক্লিক করলেই তা ইনডেশনসহ অটো-টাইপ হয়ে যাবে, ফলে সিনট্যাক্স ভুলে যাওয়ার চিন্তা নেই।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা শেষে দেশের একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন পতাকা দলের আরেক সদস্য ওসমান গণি নাহিদ। তিনি বলেন, আমাদের কাজের লক্ষ্যই ছিল নিজেদের মাতৃভাষায় নতুনদের সহজে প্রোগ্রামিংয়ের সঙ্গে পরিচিত করে দেয়া। পুরো কাজ সম্পন্ন করতে আমাদের লেগেছে ছয় মাস। এর কেবল অনলাইন সংস্করণ হিসেবে চালু করা হয়েছে আপাতত। শিগগিরই তারা এর ডেস্কটপ সংস্করণ আর মোবাইল অ্যাপ হিসেবেও মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারব। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে একে আরো সমৃদ্ধ করতে চাই আমরা। আর তাই অনলাইনে ‘ওপেন সোর্স’ হিসেবেই রাখা হচ্ছে ‘পতাকা’কে। এ ছাড়াও এর সঙ্গে দেয়া গেইমিংয়ের নতুন কিছু লেভেল যোগ করবেন তারা, যার মাধ্যমে ছোটরাও খেলতে খেলতে পরিচিত হতে পারবে কোডিংয়ের নতুন এই জগতে।
ইউনিভার্সিটি অব কার্ডিফ থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী অমিয় জানান, নতুন এই বাংলা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ নবীনদের জন্য ভালো প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিতে পারবে বলে বিশ্বাস করছেন তরুণ প্রকৌশলী এই দলটি। নিজেদের এই কাজ একেবারেই অলাভজনক এবং বিজ্ঞাপনমুক্ত বলে দাবি করেন তারা। শুধু প্রথমবারের মতো বাংলা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ তৈরির ‘কৃতিত্ব’টুকুই চান তারা। আগামী ১৬ ডিসেম্বর ‘পতাকা’-এর মূল সংস্করণ মুক্তি দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আজকের যত আয়োজন ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছেবিস্তারিত পড়ুন
মোবাইল নম্বর ঠিক রেখেই অপারেটর পরিবর্তন করা যাবে: প্রক্রিয়া শুরু
মোবাইল ফোনের নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তন (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি-এমএনপি)বিস্তারিত পড়ুন
স্মার্টফোন কিনে লাখপতি হলেন পারভেজ
নির্দিষ্ট মডেলের ওয়ালটন স্মার্টফোন কিনে পণ্য নিবন্ধন করলেই মিলছে সর্বোচ্চবিস্তারিত পড়ুন