প্রধান শিক্ষককে জঙ্গি মামলায় জড়ানোর হুমকি
সাতক্ষীরার এক প্রধান শিক্ষককে জঙ্গি মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে ওই শিক্ষকের ওপর শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন আশাশুনি উপজেলার খাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাহাজ্জাহান আলী।
খাজরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগ নেতা শাহনেওয়াজ ডালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে রাহাজ্জাহান আলী বলেন, চেয়ারম্যান ও তাঁর বাহিনীর ভয়ে তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন দুইদিন ধরে এলাকায় যেতে পারছেন না। ফলে স্কুল ছেড়ে কার্যত পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাঁকে। স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের গুম করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ঘটনায় মামলা করে নতুন বিপদে পড়েছেন বলে দাবি করেন রাহাজ্জাহান আলী। তিনি বলেন, তাঁকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আগে মামলা তুলবি তারপর স্কুলে আসবি। না হলে তোকে জঙ্গি মামলায় পুলিশে দেওয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে রাহাজ্জাহান আলী বলেন, ‘চেয়ারম্যান ডালিম বলেছেন, তুই আমার কথা শুনিসনি, তাই তোর রক্ষা নেই।’
ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক রাহাজ্জাহান আলী জানান, খাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। স্থানীয় অসিত ঘোষকে কমিটিতে বিদ্যোৎসাহী হিসেবে দেখতে চান না এলাকার মানুষ। কিন্তু তাঁকেই সভাপতি করতে চান খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগ নেতা শাহনেওয়াজ ডালিম। তারপরেও এলাকার লোকজনের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থানীয় সংসদ সদস্যের সম্মতির জন্য পরিতোষ ঘোষের নাম বিদ্যোৎসাহী সদস্য করার প্রস্তাবনা পাঠান রাহাজ্জাহান আলী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১৭ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে প্রথমে টেলিফোনে চেয়ারম্যান তাঁকে গালাগাল করেন। কিছুক্ষণ পর স্কুল থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের লোকজন। চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে রাহাজ্জাহান আলীর ওপর নির্যাতন চালান চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাড়াটে সন্ত্রাসী রিপন সরদার, নওয়াব আলী, অসিত বরণ ঘোষ, লাভলু গাজী, পংকজ ঘোষ, কবির মেম্বার, আনিস, সলেমান, আনারুল, সাইফুল, ইকবাল, মাসুদ, আমিরুলসহ কয়েকজন। এ সময় বারবার তাঁকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘তোকে জামায়াতের জঙ্গি মামলায় দেওয়া হবে।’
এ সময় রাহাজ্জাহান আলীর কাছ থেকে বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এরপর প্রথমে তাঁর কাছে দশ লাখ টাকা চাওয়া হয়। তিনি দিতে রাজী না হওয়ায় এক পর্যায়ে চাঁদার অঙ্ক ১০ হাজারে এসে নামে। এই টাকা না দেওয়া পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারছেন না বলে জানান রাহাজ্জাহান আলী। এমনকি স্থানীয় বাজারেও যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাহাজ্জাহান আলী আরো জানান, ঘটনার রাতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে তিনি জিম্মি হয়ে আছেন এই খবর পেয়ে আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুধাংশু শেখর তাঁকে উদ্ধার করে রাত ৩টার দিকে স্কুলে পৌঁছে দেন। এরপর তিনি থানায় চেয়ারম্যান ডালিমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম জানান, রাহাজ্জাহান আলী শিশুদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাছাড়া কমিটি গঠন নিয়ে নিজের ইচ্ছামতো গোপনে এমপির কাছে সুপারিশের জন্য পাঠিয়েছেন। এসব ঘটনা ধামাচাপা দিতে তাঁর ওপর দোষ চাপাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি। রাহাজ্জাহান আলীকে তুলে নিয়ে জিম্মি করা কিংবা নির্যাতন করার কোনো অভিযোগই সঠিক নয় বলে দাবি করেন চেয়ারম্যান।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহ উদ্বোধন
আমের গুণগত মান বজায় রেখে নিরাপদে আম বাজারজাত করতে সাতক্ষীরাবিস্তারিত পড়ুন
সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু
ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও গ্রামবাসী একত্রে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
কোটি টাকার স্বর্ণসহ ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী সীমান্ত থেকে ৯ পিছ স্বর্ণের বারসহবিস্তারিত পড়ুন