প্রাইভেটকার যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে হত্যা!
কনে ফাতেমাতুজ জহুরা মনীষা। লালমাটিয়া মহিলা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী বয়স ২১ বছর। থাকেন উত্তরায় দক্ষিণখানে। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয় মনীষা। আর বর এস এম খালেকুজ্জামান তারেক। তিন ভাই বোনের মধ্যে সবার বড় তারেক। বয়স ২৭ বছর। পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠান করে বিয়ে হয় ২০১৬ সালের মার্চে। সুন্দরভাবে সংসার চলছিলো তাদের। মাত্র এক বছর পার হলো বিয়ের।
কি হলো এ একটি বছরের মধ্যে? কেনো মনীষাকে প্রাণ দিতে হলো অকালে? কি দোষই বা ছিলো মনীষার?এস এম খালেকুজ্জামান পেশায় ছিলেন ব্যাংকার। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক গুলশান শাখায় চাকরি করতেন তিনি। বিয়ের কয়েকমাস পর চাকরি ছেড়ে দেন খালেকুজ্জামান। চাকরি ছাড়ার পর মনীষাকে যৌতুকের জন্য মানসিক নির্যাতন করতে থাকে তিনি এবং তার পরিবারের লোকজন। যৌতুক হিসেবে খালেকুজ্জামান ও তার পরিবার দাবি করেন একটি গাড়ি এবং ঘর সাজানোর জন্য এসিসহ আরো বাহারি দামি জিনিস। এসব জিনিসের জন্য মনীষার স্বামী মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি শারিরীক নির্যাতন ও করতেন। মৃত্যুর আগে এমন অভিযোগ করে গিয়েছেলেন মনীষা তার পরিবারের কাছে।
দক্ষিণখান থানাধীন দেওয়ান বাড়ির ৩৮২ নম্বর তিন তলা একটি ভবন। এ ভবনটি আশেপাশের সবাই আক্তারুজ্জামানের বাড়ি নামেই চেনেন। ভবনের তৃতীয় তলায় থাকতেন মনীষা, তার স্বামী তারেক ও তার দেবর। আর দ্বিতীয় তলায় থাকেন তার বাবা-মা। এ বিষয়ে বাড়ির কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম আরটিভি অনলাইকে জানান, এ দুই পরিবার ছাড়া এ বাড়িতে অন্য কেউ আর থাকে না। কি হয়েছে সেদিন এমন প্রশ্ন তাকে করা হলে তিনি জানান, মনীষার দেবর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আমাকে এসে বললেন, তার ভাবী ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন।
এমন খবর শোনার পর আমি উপরে যাই। গিয়ে দেখি লাশটি নিচে নামানো।আরটিভি অনলাইনকে মনীষার বাবা ও ভাই অভিযোগ করেন, রাত ২টা ২০ মিনিটে মনীষার শ্বশুর বাড়ি থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, সে টয়লেটের ভেন্টিলেটরের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়েছে। পরে রাত ৩ টায় চিকিৎসার জন্য উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসেন শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পরে চিকিৎসকের নির্দেশক্রমে তাকে টঙ্গীর আহসানুল্লাহ সরকারি মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত ঘোষণার পরপরই তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন লাশ রেখে পালিয়ে যান।
মনীষার বাবা কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে যৌতুকের জন্য। কোনোভাবেই আমার মেয়ে আত্নহত্যা করতে পারে না। একটি প্রাইভেট গাড়ি যৌতুক দাবি করে আসছিল মনীষার স্বামী তারেক ও তার পরিবারের লোকজন। দুই-তিন মাস ধরে এর জন্য প্রচণ্ড চাপও সৃষ্টি করছিলেন তারা। কিছুদিন আগেও এসি কেনার জন্য এক লাখ টাকা দিয়েছি আমি। কোনভাবেই আমার মেয়ে আত্নহত্যা করতে পারে না। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
মামলা:
এ ঘটনায় শুক্রবার দক্ষিণখান থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলা নং- ১২। আর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন কবীর হোসেন।এদিকে উত্তরা জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে জানান, আমরা এ ঘটনায় থানায় মামলা নিয়েছি। তবে এটি হত্যা না আত্নহত্যা এখন পযর্ন্ত বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তদের রিপোর্ট আসলে আইনি ব্যবস্থা নেবো। এ ঘটনার পর থেকে যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তারা পলাতক রয়েছেন। তবে ঘটনা যাই হোক যদি এটি হত্যা হয়ে থাকে তাহলে আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুরতহাল রিপোর্ট
তবে প্রাথমিকভাবে সুরতহাল রিপোর্টে নিহত মনীষার লাশের থুতনি, গলায় ও থুতনির দুই পাশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যার মধ্যে গলার দুই পাশের চিহ্নটি হাতের আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া গেছে। তা থেকেই ধারনা করছে চিকিৎসকরা ধারণা করছেন তাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
শামীম ওসমান থাকার গুজবে রিসোর্টের সামনে মানুষের ভিড়, সেনাবাহিনীর তল্লাশি
মৌলভীবাজারের “গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ” নামের পাঁচ তারকাবিস্তারিত পড়ুন