প্রাণভিক্ষার সিদ্ধান্ত ঝুলিয়েই রাখলেন সাকা-মুজাহিদ
যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনও দেননি। বিষয়টি ঝুলিয়েই রেখেছেন তারা। দুই যুদ্ধাপরাধীর প্রাণভিক্ষার সিদ্ধান্ত জানার জন্য আজ শুক্রবার দুপুরের পর কারা কর্তৃপক্ষ ফের তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তারা কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। প্রায় এক ঘণ্টা তাদের সঙ্গে কথা বলেন কারাকর্তৃপক্ষ।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কি, না তা জানতে শুক্রবার দুপুরে কারাগারে যান সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির। এসময় সেখানে জেলার ও ডেপুটি জেলাররা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র আরো জানায়, সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির প্রাণভিক্ষার বিষয়ে প্রথমে সাকা চৌধুরী ও পরে মুজাহিদের কাছে জানতে চান। তারা (সাকা-মুজাহিদ) দুইজনই প্রাণভিক্ষার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি জানিয়ে বলেন, আইনজীবী ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানানো হবে। কিন্তু কারাবিধি অনুযায়ী আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করার আর কোনো সুযোগ নেই বলে জানান সিনিয়র জেল সুপার। তারপরও সাকা-মুজাহিদ বিষয়টি পরিষ্কার না করায় এক ঘণ্টা পর সুরাহা না করেই ফিরে আসেন জেল সুপার।
প্রাণভিক্ষার বিষয়টি জানতে ম্যাজিস্ট্রেট যাওয়ার নিয়ম থাকলেও সিনিয়র জেল সুপার সেই পদমর্যাদার অধিকারী হওয়ায় তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান সাকা-মুজাহিদের কাছে।
প্রাণভিক্ষার বিষয়ে সুযোগ না নেয়ায় কারাবিধি অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে কারাসূত্র।
আইনি সব বিষয়ের নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় এখন সাবেক এই দুই মন্ত্রীর সামনে কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগই বাকি আছে।
তারা আবেদন না করলে বা রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা না পেলে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ, যার সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিআইজি প্রিজন গোলাম হায়দার।
তিনি বলেন, কাল ট্রাইব্যুনাল থেকে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর আমরা তাদের পড়ে শুনিয়েছি। ক্ষমা চাইবেন কিনা জানতে চেয়েছি। উনারা বলেছেন, সিদ্ধান্ত পরে জানাবেন। উনাদের সিদ্ধান্ত জানার জন্য আজও আমরা তাদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু তারা বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেনি।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক হত্যা-নির্যাতনের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তিনি আপিল করলে চলতি বছরের ১৬ জুন চূড়ান্ত রায়েও ওই সাজা বহাল থাকে।
একাত্তরে চট্টগ্রামের ত্রাস সালাউদ্দিন কাদেরের রায় এসেছিল ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির রায় এ বছর ২৯ জুলাই আপিলের রায়েও বহাল থাকে।
তাদের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় একই দিনে, ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল দুজনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে এবং কারা কর্তৃপক্ষ ১ অক্টোবর তা দুই ফাঁসির আসামিকে পড়ে শোনায়।
এরপর দুই যুদ্ধাপরাধী ওই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বুধবার আদালত তা খারিজ করে দেয়।
কারাবিধিতে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সাত দিন সময়ের উল্লেখ থাকলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে তার কোনো সুর্নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া নেই। তবে এই আইনে কারাবিধি প্রযোজ্য হয় না।
কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের আগে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছিলেন, প্রাণভিক্ষা চাওয়ার জন্য আসামি ‘যৌক্তিক সময়’ পাবেন। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেছিলেন, একটি দরখাস্ত লিখতে যে সময় লাগে- ‘যৌক্তিক সময়’ তার চেয়ে বেশি হওয়া উচিৎ নয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন