প্রেমিকাকে দিয়ে অসংখ্য প্রেমের ফাঁদ পাতান প্রেমিক!
বিত্তশালীদের তালিকা আর তাদের ফোন নম্বর হাতে আসার পরেই শুরু হতো শারমিন আক্তার প্রিয়ার (২২) কাজ। মোবাইলের মাধ্যমে সর্ম্পক তৈরি, তারপর প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন। ফোন নম্বর গুলো চক্রের মাধ্যমে তার হাতে আসতো। প্রেমের একপর্যায়ে বাসায় ডেকে এনে অপ্রীতিকর অবস্থায় নিজের সঙ্গে ছবি তুলে ফেলতেন। এরপরেই হতো আসল কাজ। আদায় করা হতো লাখ লাখ টাকার মুক্তিপণ। কিন্তু পুরো কাজ তাকে করতে হলেও তার ভাগ্যে জুটতো মাত্র ৫ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার রাতে নগরীর চান্দগাঁও এলাকা থেকে শারমিনকে গ্রেপ্তার করার পর এসব জানান শারমিন। প্রতারক শারমিন আক্তার প্রিয়া লোহাগাড়া আজিজ নগর এলাকার শুক্কুর আলমের মেয়ে। তার দেয়া তথ্যমতে ভোরের দিকে পাঁচলাইশ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এ চক্রের আরো কয়েকজন সদস্যকে।
স্বীকারোক্তিতে শারমিন বলেছেন, আমি মায়ের সঙ্গে নগরীর অলংকার মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতাম। একবছর আগে ওই এলাকায় আনোয়ার রাজু নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়। চাকরি দেয়ার কথা বলে রাজু আমাকে এ পেশায় নিয়ে এসেছে। পরে এ পেশা থেকে বের হতে চেষ্টা করলেও রাজুর হুমকির কারণে পারিনি। এছাড়া পরিবারের আর্থিক অবস্থার কারণে বাধ্য হয়ে এ চক্রে থাকতে হয়েছে।
গত এক বছরে প্রায় ১৫ জনকে আটকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। শারমিন বলেন, আমি ছাড়াও অনেক মেয়ে আমাদের এ চক্রে কাজ করে। গত একবছরে আমার মাধ্যমে ১৫ জনের কাছ থেকে তারা টাকা আদায় করেছে। প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। তবে এই চক্রের সদস্যরা আমাকে প্রতিজনে ৫ হাজার টাকার বেশি দিতো না।
এ বিষয়ে নগর গোয়েন্দো পুলিশের এসআই রাজেশ বড়ুয়া বলেন, পরিচিত বিত্তশালীদের টার্গেট করে তালিকা অনুযায়ী সুন্দরী মেয়েদের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে জোরপূর্বক মুক্তিপণ আদায় করতো চক্রটি। বিভক্ত হয়ে চক্রটি নগরীর বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালাতো। এদের কাছ থেকে রক্ষা পেয়ে ভুক্তভোগী কয়েকজন পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেও অনেকে চক্ষু লজ্জায় তাও করেননি। এ ধরনের অপহরণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে নামে।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাস আগে টেরি বাজারের ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদকে এরকম প্রতারণার মাধ্যমে অপহরণ করা হয়। পাহড়তলী থানায় এই সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সদস্য শারমিনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মঙ্গলবার রাতে চান্দগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে ভোররাতে পাঁচলাইশ থানার বেবি সুপার মার্কেট এলাকার সালাম ভিলার একটি ফ্ল্যাট থেকে এই চক্রের মূল হোতো শাহাবুদ্দীন ও তার স্ত্রী শেলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসআই রাজেশ আরো বলেন, ‘নগরীরতে এই চক্রের আরো ১৫-১৬ জন রয়েছে। তারা পরিচিত বিত্তশালীদের তালিকা তৈরি করে চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে ফোন করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সম্পর্ক গড়ে তোলে। সুযোগ বুঝে তাদেরকে একটি বাসায় নিয়ে আসত চক্রটি। এরপর হাত-পা বেঁধে চালানো হতো নির্যাতন এবং করা হতো সুন্দরী মেয়েদের সঙ্গে ফটোসেশন। মুক্তিপণ হিসেবে পরিবারের কাছে দাবি করা হতো মোটা অংকের টাকা। টাকা দিলে অপহৃতদের ছেড়ে দেয়া হতো এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানালে ওই ছবি অনলাইনে ছেড়ে দেয়ার হুমকিও দেয়া হতো ভুক্তভোগীদের। কেউ কেউ থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালেও বেশিরভাগই সম্মানের ভয়ে তা এড়িয়ে যেতো।
এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরো বলেন, এই চক্রের সদস্য শারমিন মূল হোতা শাহাবুদ্দীনের দেয়া তালিকা অনুযায়ী টার্গেট করা বিত্তশালীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার কাজটি করতো। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার পর কোন রেস্টুরেন্টে দেখা করার পর পূর্বনির্ধারিত বাসায় নিয়ে যাওয়া হতো সেই ব্যক্তিকে। এরপর সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর প্রকাশ পেতো তাদের আসল রূপ। শুরু হতো তাদের নির্যাতন ও প্রতারণ নানা কৌশল।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- চক্রের প্রধান চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার বাগপুর বেপারি বাড়ীর মৃত দুদু মিয়ার ছেলে মো. শাহাবুদ্দিন ওরফে বাচ্চু (৪৫) ও তার স্ত্রী শেলি আক্তার (৩৪)
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন