প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেলে কী করবেন?
‘দেবদাস’ থেকে শরদিন্দুর ‘সজারুর কাঁটা’ পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা উদাহরণ এই প্রজন্মেও যে বহমান, তার প্রমাণ কেবল শাহরুখ খান আর ব্যোমকেশ-ফিলিমে খুঁজলে চলবে না।
বাঙালির জীবনে ‘ক্ষত’-র অভাব নেই। একদিক থেকে দেখলে, এই জাত এক আশ্চর্য রকমের ‘সাফারিং’-কে সারা জীবন ক্যারি করতে চায়। তলিয়ে ভাবলে, বাঙালি পুরুষমাত্রেই দস্তয়েভস্কির নায়কসুলভ হ্যাংওভারে ভোগেন। হ্যাঁ, সেই শরৎবাবু-প্রমথেশ বড়ুয়ার ‘দেঁবদাঁস’ থেকে আজ পর্যন্ত এই সাফারিংয়ের পালা লাগাতার হয়ে রয়েছে। এই প্রতিবেদনে অবশ্য সাফারিংয়ের তালিকা পেশ করার কোনও অবকাশ নেই। বরং একটা বিশেষ সাফারিংয়ের দিকেই মুখ ফিরিয়ে থাকছে এই লেখা।
বাঙালি পুরুষের সবচেয়ে স্থায়ী সাফারিং বোধ হয় প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাওয়া। ‘দেবদাস’ থেকে শরদিন্দুর ‘সজারুর কাঁটা’ পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা উদাহরণ এই প্রজন্মেও যে বহমান, তার প্রমাণ কেবল শাহরুখ খান আর ব্যোমকেশ-ফিলিমে খুঁজলে চলবে না। মনে রাখবেন, ইএম বাইপাসে সদ্য গজিয়ে ওঠা একটি পানশালার নাম ‘দেবদাস’। এবং সেটা রমরমিয়ে চলে। কারা কী কারণে সেখানে মাল খান, সে খোঁজে যাওয়ার দরকার নেই। কেবল এটা মনে রাখলেই হবে, এই নামটা প্রেমিকা হাতা হয়ে যাওয়ার সঙ্গে একান্তভাবেই স্টাকচার্ড।
সেই রোম্যান্টিক উত্তমকুমার পর্বে সামনের বাড়ির সুচিত্রার বিয়ে হয়ে গেলে ‘সপ্তপদী’ দেখে হল্লাট হয়ে দাড়ি রাখতেন বাঙালি যুবক। কেউ কেউ ‘করুণাধারায় এসো’ বলে জাপটে ধরতেন মালের বোতল। কেউ সব কিছু ছেড়ে ‘রঙ দে গেরুয়া’ বলে পাড়ি দিতেন অধ্যাত্মলোকে। কমিউনিস্ট হয়ে যেতেন কেউ, কেউ প্যান্ট পরা ছেড়ে দিয়ে পাজামা-বিলাসী হয়ে কাটিয়ে দিতেন বাকি জীবন।
সেই দিন আর নেই। কিন্তু সাফারিং রয়ে গিয়েছে। কী করবেন এই বসন্তেই আপনার বুকে হাফসোল জাগিয়ে যদি বেজে ওঠে প্রেমিকার বিয়ের সানাই? এক ওয়েব-সমীক্ষায় এক সার্বজনীন খোঁজ করা হয়েছে এই বিষয়ে, তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই এই মুসাবিদা। বাঙালির ধাতে সইবে তেমন কতগুলো রেমিডিই আলোচিত হল নীচে।
• প্রেমিকার বিয়ে হবে জানতে পারলে ঝামেলা পাকিয়ে লাভ নেই। তাঁর বাড়ির সামনে সাইকেলবাজি করেও কিছু হবে না। বিয়ের আগে স্রেফ ধাঁ হয়ে যান। ঘাটশিলা থেকে পশ্চিমঘাট— যে কোনও জায়গায় বন্ধু-বান্ধব জুটিয়ে কেটে পড়ুন। ফিরুন দ্বিরাগমন-টমন কাটিয়ে।
• বিয়ের পরে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা হলে সহজ ব্যবহার করুন। এমন ভাব দেখান, কোনওদিন কিছুই যেন ঘটেনি।
• বিবাহিত প্রেমিকার কাছে কখনোই তার স্বামী বা নতুন সংসার নিয়ে প্রসঙ্গ তুলবেন না। উদাসী গাম্ভীর্য বজায় রাখুন।
• সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তাঁকে ব্লক করুন। না-হলে তাঁর প্রোফাইল দেখে দেখে বিস্তর সময় নষ্ট করে ফেলবেন।
• তিনি বিয়ে করেছেন বলে তড়িঘড়ি আপনিও ছাদনাতলায় ঝিলিক মারবেন বলে ধান্দা করবেন না। সময় নিন। বেশ কিছুদিন ব্যাচেলর থাকুন। আর আপনার সিঙ্গলহুডের খবরটা যাতে প্রেমিকার কাছে পৌঁছয়, তেমন একটা নেটওয়ার্ক অবশ্যই তৈরি রাখবেন।
• প্রেমিকার বিয়ের পরেও তাঁর সঙ্গে নিয়মিত দেখা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে নিজের চেহারা বদলান। চাইলে ফ্যাশনও। দেখবেন, জ্বালা আপনার একার নয়। ও প্রান্তেও চিড়িক দিচ্ছে ২২০ ভোল্ট।
• একাকিত্বকে এড়ান। কাজের সময়ের বাইরে একটু বেশি ঠেক মারুন।
• আত্মহনন-টনন জাতীয় প্যাঁও-কে একদম প্রশ্রয় দেবেন না। বরং বেশি করে গান শুনুন। প্রেমের কবিতা পড়ুন। পারলে শক্ত দর্শনের বই পড়ুন। তেমন সুবিধে থাকলে কঠিন অঙ্কও কষতে পারেন।
শেষ পর্যন্ত মনে রাখবেন জয় গোস্বামীর সেই অমোঘ লাইন— ‘‘কী হবে অতীত নিয়ে, চলো পুনর্বার প্রেমে পড়ি।’’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন