‘প্লিজ আপনারা লাল-সবুজের জার্সি কলঙ্কিত করবেন না’
সাকিব-মাশরাফিরা যখন তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে তখন আবারও বাংলাদেশ ক্রিকেটে আঁচড় কাটল ভয়াবহ কলঙ্ক। নারীঘটিত কারণে কাঠগড়ায় উঠতে হল টাইগার স্পিনার আরাফাত সানিকে। নাসরিন সুলতানা নামের এক তরুণীর অভিযোগ আর সানির জেলে যাওয়া নিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় তুমুল আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে চলছে বিতর্কের ঝড়।
২০১০ সালে নাসরিন সুলতানার সঙ্গে সানির মন দেয়া-নেয়া। ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসা। ফেইসবুকে ফেইক আইডি খুলে নাসরিনের আপত্তিকর ছবি পোষ্ট। শেষমেশ একজন ক্রিকেটারের ১৪ শিকের ভেতর আবদ্ধ হওয়া। এসব ক্রিকেটের জন্য মোটেও সুখকর নয়। যদিও বিষয়টি এখন আদালতের অধীনে চলে গেছে, তাই এনিয়ে খুব বেশি নাক গলাচ্ছি না।
তবে এমন ঘটনা বাংলাদেশ ক্রিকেটে নতুন নয়। কেউ ধরা খেয়েছে, আবার কাউকে দেয়া হয়েছে শোধরানোর সুযোগ। এর আগে মাঠের বাইরে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছিল টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান এবং পেসার আল আমিন হোসেনকে নিয়ে। বিপিএল সিজন ফোরের চট্টগ্রাম পর্বে হোটেলে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন সাব্বির ও আল আমিন।
তাছাড়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডের পর নাকি ম্যানেজারের অনুমতি ছাড়া রাতে হোটেলের বাইরে গিয়ে অনেক রাত করে হোটেলে ফিরেছিলেন সাব্বির। আল আমিন ও সাব্বিরের বিরুদ্ধে আগেও মাঠের বাইরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বিশ্বকাপ চলাকালে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দেশে ফেরত পাঠানো হয় আল আমিনকে। এমন সব লঙ্কাকাণ্ডের খেসারত অবশ্য দিতে হয়েছে আল আমিন-সাব্বিরকে। গুনতে হয়েছে বড়সড় জরিমানা। সঙ্গে পেয়েছেন কড়া হুঁশিয়ারিও।
মূলত দেশের ক্রিকেটে এমন কলঙ্কের দাগ লেগেছিল পেসার রুবেল হোসেনের হাত ধরে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের আগে মডেল নাজনীন আক্তার হ্যাপির করা ধর্ষণ মামলায় আদালতের বারান্দায় যেতে হয় রুবেলকে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হ্যাপির সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়েন রুবেল, এমন অভিযোগ এনে রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন হ্যাপি। পরে একটা সময় সেই মামলা প্রত্যাহার করে নেন হ্যাপি। যাক সে যাত্রায় বাঁচলেন রুবেল। কিন্তু সবশেষ সানির বিষয়টি আবারও নাড়িয়ে দিল ক্রীড়াঙ্গনকে।
একের পর এক এমন ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। মাঠের বাইরের এই ব্যাপারগুলো ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারেও প্রভাব ফেলবে। শৃঙ্খলা কেবল ২২ গজে ধরে রাখলে হবে না, ব্যক্তিগত জীবনেও ক্রিকেটারদের সুশৃঙ্খল হতে হবে। না হয় একটা সময় ঝরে পড়া ছাড়া কোনো পথ খোলা থাকবে না। সময় থাকতে মনা হুঁশিয়ার।
কেউ দুধে ধোয়া তুলসী পাতা নয়, মানলাম। কিন্তু ক্রিকেটারদের এও ভুললে চলবে না, ক্রিকেট একটা জনপ্রিয় ক্ষেত্র। তাই ক্রিকেটারদের পেছনে মেয়েরা দৌড়াবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মেয়ে দেখলেই…। এটা খুবই লজ্জাজনক। অল্পদিনে খ্যাতি ও প্রচুর অর্থ হাতে পেয়ে যাচ্ছেতাই করে পার পাওয়া যায় না। আজ না হয় কাল কাটা পড়তে হয়।
যে জার্সি আপনাকে সম্মান দিয়েছে। আলাদা একটা পরিচয়ে দাঁড় করিয়েছে। সেই জার্সিতে কী করে কালো দাগ ফেলেন। শুরুটা করেছিলেন রুবেল হোসেন। শেষটা যে কবে হবে সেটা হলফ করে বলা মুশকিল। আশা করছি, ভবিষ্যতে আর কোনো ক্রিকেটার এমন নিগৃহীত কাজে নিজেকে জড়াবেন না।
মনে রাখবেন, ক্রিকেট ভালো মানুষের খেলা। এখানে নোংরামির কোনো স্থান নেই। যারা দেশের গর্ব তাদের এমন অবস্থা হলে, অন্যরা কী করবে। দয়া করে লাল-সবুজের জার্সি কলঙ্কিত করবেন না।
লেখক: ক্রীড়া সাংবাদিক
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন