ফরেনসিক রিপোর্টে অভিযোগের তীর বিক্রমের দিকে
মডেল সোনিকা সিং চৌহানের মৃত্যুর এক মাস পর পুলিশ অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার অনিচ্ছাকৃত হত্যা মামলার ধারা যুক্ত করেছে। তবে বিক্রমের গাড়ির গতি যে অত্যন্ত বেশি ছিল, তা গাড়ির ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে।
বিক্রমের গাড়ির ফরেনসিক রিপোর্ট বলছে, দুর্ঘটনার সময় বিক্রমের গাড়ির গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১৫ কিলোমিটারের মধ্যে৷ দুর্ঘটনার ৪.৬ সেকেন্ড আগে গতি ছিল ১০৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা৷ ২.১ সেকেন্ড আগে গতি ছিল ৯৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা৷ দুর্ঘটনার ১.৬ সেকেন্ড আগে পর্যন্তও ব্রেক কষে গাড়ি দাড় করানোরও চেষ্টা করেনি বিক্রম৷ কী হতে চলেছে জেনেও বিক্রম ব্রেক কষে গাড়ি দাড় করানোর চেষ্টা করেনি৷ বিক্রম নিজে সিটবেল্ট বাধলেও সোনিকা সিটবেল্ট বাধেননি বলে জানিয়েছে ফরেন্সিক রিপোর্ট৷ পুলিশ মনে করছে, এজন্যই চালক হিসেবে নিজের দায় এড়াতে পারেন না বিক্রম৷ তাই তার বিরুদ্ধে নতুন ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে৷
সম্ভবত নিজের গাড়ির ‘ব্ল্যাক বক্স’ প্রযুক্তির ব্যাপারে জানতেন না অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়৷ দুর্ঘটনার রাতে বিক্রম মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠলেও তিনি দাবি করেছেন গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণেই ছিল৷ অথচ তাঁর গাড়িতে যে বিমানের ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর মতো ইভেন্ট ডেটা রেকর্ডার (ইডিআর) রয়েছে তা জানতেনই না বিক্রম, এমনটাই খবর তার ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে৷ ওই ইডিআর যন্ত্রেই দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত প্রতি সেকেন্ডে গাড়ির গতির হিসেব নথিবদ্ধ হয়েছে৷ সেই যন্ত্রের রিপোর্টের ভিত্তিতেই বিক্রমের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করার অনুমতি দিয়েছে আদালত৷
দুর্ঘটনার রাতে বিক্রম টয়োটা করোলা অল্টিস মডেলের গাড়ি চালাচ্ছিলেন৷ বিমানের ক্ষেত্রে যেমন ব্ল্যাক বক্স দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে পাইলটদের কথোপকথন রেকর্ড হয়৷ যা পরবর্তীতে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে সাহায্য করে৷ তেমনই বিক্রমের গাড়িতেও ইডিআর যন্ত্র ছিল৷ সেখানে দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত প্রতি মুহূর্তে গাড়ির গতিবেগ, গাড়িতে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কিনা, সিটবেল্ট বাধা ছিল কিনা-সহ সবরকমের তথ্য রেকর্ড হয়েছে৷ সেই রিপোর্টেই স্পষ্ট হয়েছে যে বিক্রম নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে৷ পুলিশ মনে করছে, বিক্রম তার গাড়ির ইডিআর প্রযুক্তির কথা জানতেন না বলেই বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছিল৷ এক অফিসার বলেন, ‘গাড়ির প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা থাকলে বিক্রম তার গাড়ির গতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ খুলত না বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিত না৷’
গতকাল কলকাতার আলীপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের আদালতে অনিচ্ছাকৃত খুনের অজামিনযোগ্য ধারা সংযোজন করে পুলিশ আবেদন করে। পরে বিচারক তা গ্রহণ করেন। দুর্ঘটনার পর অবশ্য পুলিশ বিক্রমের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে।
গতকাল পুলিশের হাতে বিক্রমের রক্ত পরীক্ষা ও সোনিকার পোশাক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে। এসব প্রতিবেদন পুলিশ আদালতে পেশ করবে।
গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় কলকাতার রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে লেকমলের কাছে গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েন সোনিকা-বিক্রম। শুরু থেকেই বিক্রম বলছিলেন, তিনি মদ্যপান করেননি। তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, ওই দিন রাতে বিক্রম দুটি পানশালায় প্রচুর মদ পান করেছিলেন। প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি চালিয়েছিলেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন