ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর : ইতিহাসের সাক্ষী হল কাশিমপুর কারাগার
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। শনিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকার অদূরে গাজীপুরের কাশিমপুর-২ কারাগারে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
দণ্ড কার্যকর করতে তাকে ২০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখা হয়। এর মধ্য দিয়ে কলঙ্কমোচনের পথে এগিয়ে গেল দেশ। এ নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ছয় শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো। তবে কাশিমপুর কারাগারে এই প্রথম কোনো যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো। জেলার নাশির আহমেদ মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর প্রক্রিয়া কারাগারে ফাঁসির মঞ্চের পাশে উপস্থিত ছিলেন আইজি (প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন, অতিরিক্ত আইজি (প্রিজন) কর্নেল ইকবাল হাসান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ, সিভিল সার্জন ডা. হায়দার আলী খান, কাশিমপুর কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক, জেলার নাশির আহমেদ প্রমুখ।
নিয়ম অনুযায়ী দণ্ড কার্যকরের পর তারা সাক্ষী হিসেবে নির্দিষ্ট বইয়ে স্বাক্ষর করেন। ফাঁসি কার্যকরে দায়িত্বে ছিলেন চার জল্লাদ। এরা হলেন-শাহজাহান, রিপন, দীন ইসলাম ও শাহীন। ফাঁসির আগে জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে মঞ্চ ঘিরে শনিবার সন্ধ্যার পর দুই দফা মহড়া হয়। পরে মীর কাসেমকে জম টুপি পরিয়ে মঞ্চে তোলেন জল্লাদরা। এর আগে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসক ডা. মিজান ও ডা. কাউছার। ফাঁসি কার্যকরের খবর জানার পর কারাফটকে আনন্দ প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এদিকে শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ছয়টি মাইক্রোবাসে করে কাশিমপুর কারাগারের ফটকে উপস্থিত হন মীর কাসেমের স্ত্রী, মেয়ে, পুত্রবধূসহ মোট ৪৬ জন। তাদের মধ্যে ২৩ জনকে মীর কাসেমের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেয়া হয়। তারা সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।
শনিবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে অতিরিক্ত আইজি প্রিজন কর্নেল ইকবাল কবির কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলারের কাছে ফাঁসি কার্যকরের নির্বাহী আদেশের কপি হস্তান্তর করেন। এদিকে কাশিমপুর কারাগারের চারপাশে প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। রাত ৮টা ৫০ মিনিটের পর সেখানে নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়। জেলা পুলিশের সঙ্গে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের মজলিসে শুরার সদস্য মীর কাসেমকে ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ বছরের মার্চে আপিল বিভাগেও সেই রায় বহাল থাকায় তিনি রিভিউ আবেদন করেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ গত ৩০ আগস্ট কাসেমের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে পরদিন সকালে তা আসামিকে পড়ে শোনানো হয়। মীর কাসেম প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার একই প্রশ্ন করা হলে সময় চান তিনি। পরে কাশিমপুর কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক শুক্রবার বিকেলে জানান, মীর কাসেম তাদের জানিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে স্বাগতিক ওয়েস্টবিস্তারিত পড়ুন
রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইলের দোকানে চুরির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভবিস্তারিত পড়ুন
যে ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদেরবিস্তারিত পড়ুন