ফাঁস হলো ট্রাম্প প্রশাসনের মুসলিম ও শরণার্থীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এরইমধ্যে এ সংক্রান্ত খসড়া প্রণয়নেও মনোযোগী হয়েছেন তিনি। এরইমধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের প্রাক্কালে মুসলিম ও শরণার্থী বিষয়ক আক্রমণাত্মক প্রস্তাবনার নথিসহ বার্তা সংস্থা এপি’র ক্যামেরায় ধরা পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য সদস্য ক্রিস কোবাক।
এতে মুসলিম দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য জাতীয় নিবন্ধীকরণ প্রক্রিয়া চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে সিরীয় শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথাও বলা হয়েছে।
ক্রিস কোবাক বর্তমানে কানসাসের সেক্রেটারি অব স্টেটের দায়িত্ব পালন করছেন।
গত রবিবার তিনি নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের ব্যাডমিনস্টারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সম্ভাব্য নতুন প্রশাসন নিয়ে আলোচনা করতেই তারা সেখানে মিলিত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য মন্ত্রিসভার শর্টলিস্টে জোরেশোরে ক্রিস কোবাকের নাম শোনা যাচ্ছে। তার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুঞ্জন উঠলেও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর এ ছবিতে বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এই ছবির ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, ক্রিস কোবাক ট্রাম্প প্রশাসনে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের দায়িত্ব পেতে পারেন।
ছবিতে ক্রিস কোবাকের হাতে থাকা কাগজের দিকে ভালোভাবে তাকালে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম এক বছরের এই ‘কৌশলগত পরিকল্পনার’ বিষয়টি দৃশ্যমান হয়।
ক্রিস কোবাকের সুপারিশের তালিকার শীর্ষে রাখা হয়েছে ‘সম্ভাব্য সন্ত্রাসীদের প্রবেশ নিষিদ্ধের’ বিষয়টি। এছাড়া এতে মুসলিম দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীদের জাতীয় নিবন্ধীকরণ প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সিরিজ হামলার পর দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এ ব্যবস্থা চালু করেন। এর আওতায় বিশ্বের ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার’ বিভিন্ন ব্যক্তিদের ট্র্যাক করা হতো।
এটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ট্রি-এক্সিট রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এনএসইইআরএস) নামে পরিচিত। ওই সময়ে বুশ প্রশাসনের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে কর্মরত ক্রিস কোবাক ছিলেন এ কর্মসূচির একজন অন্যতম প্রধান স্থপতি।
টিম ট্রাম্প থেকে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের মুসলিম নিবন্ধীকরণের প্রস্তাবে সমর্থনের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। তবে ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণায় এমন ইঙ্গিত ছিল। সে সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সিরীয় শরণার্থীদের ডাটাবেজ তৈরির গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তবে বিভিন্ন সময়ে তিনি প্রশ্নের জবাবে মুসলিম নিবন্ধীকরণের কথা অস্বীকার করেন।
রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান রেইন্স প্রিবাসকে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রবিবার এক সাক্ষাৎকারে তিনিও স্পষ্টভাবেই মুসলিম নিবন্ধীকরণের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এনবিসি টেলিভিশনের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে রেইন্স প্রিবাস বলেন, ‘আমি কোনও কিছুই উড়িয়ে দিচ্ছি না। তবে আমরা ধর্মের ভিত্তিতে নিবন্ধীকরণ করতে যাচ্ছি না।’
ন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ট্রি-এক্সিট রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এনএসইইআরএস)-এর আওতায় ২৫টি মুসলিম দেশের ১৬ বছর অথবা তার চেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তিদের আঙুলের ছাপ, ছবি এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণসহ স্থানীয় অভিবাসন দফতরে নাম নথিভুক্ত করা হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রশাসনে এরইমধ্যে নাম উঠেছে কট্টর ইসলামবিরোধীদের। এ নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ-আতঙ্ক কাজ করছে মুসলিম বিশ্বে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে।
এদের মধ্যে রয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য মুখ্য নীতিনির্ধারক (চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট) স্টিভ ব্যানন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। তাদের কট্টর ইসলামবিরোধিতার অতীত নজির থাকায় বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ইসলামের বিরুদ্ধে একটা দীর্ঘ যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে। স্বভাবতই এটা সহজে থামবে না।
স্টিভ ব্যাননের ‘জুডিও-ক্রিশ্চিয়ান ওয়েস্ট’ থেকে শুরু করে মুসলিমদের বিষয়ে মাইকেল ফ্লিনের আক্রমণাত্মক বক্তব্য এমন আতঙ্কের পেছনে কাজ করছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুসলিমবিদ্বেষী টুইট করেন ফ্লিন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘মুসলিমদের নিয়ে আতঙ্কিত হওয়াটা যৌক্তিক।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন