ফাইনালের আগে মাটিতেই পা মাশরাফির
ম্যাচ ধরে পরিকল্পনা ছিল। মাশরাফি জানতেন, ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণ করেই ছুটতে হবে বড় অর্জনের দিকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টাই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে না জেতার কোনো কারণ দেখেননি তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ম্যাচে পাওয়া আত্মবিশ্বাসটা কাজে লাগিয়েই এল দারুণ জয়। যে জয় এশিয়া কাপের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে তুলে দিল বাংলাদেশকে।
দলের আর সবার মতো এতে খুশি অধিনায়ক মাশরাফিও। কঠিন এক পরিস্থিতিতে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। তাঁর ব্যাটেই জয়ের রাস্তা পরিষ্কার হওয়ায় মাশরাফি তৃপ্তও। কিন্তু ফাইনালের আগে পা মাটিতেই রাখছেন অধিনায়ক, ‘আমরা ফাইনালে পৌঁছেছি। এখনো আমরা চ্যাম্পিয়ন হইনি। আমরা যা করব, সেটাই আমাদের জন্য অর্জন হয়ে থাকবে। লক্ষ্য থাকবে, আমরা যা করতে চাচ্ছি, যেভাবে অনুশীলন করছি, সেগুলো যেন মাঠে বাস্তবায়ন করতে পারি। পারফরম্যান্সের গ্রাফটা যেন ওপরের থাকে।’
এক্ষেত্রে দলের অন্যদের প্রেরণা হতে পারেন মাশরাফিই। ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে ওঠা পাকিস্তান পেসার মোহাম্মদ আমিরের বলে যখন সাকিব আল হাসান ফিরে গেলেন, মোহাম্মদ মিঠুনকে না পাঠিয়ে অধিনায়ক নিজেই নেমে গেলেন ব্যাট হাতে। নিজে কি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, আমির-অস্ত্র ভোঁতা করতে সে মুহূর্তে মাঠে তাঁরই বেশি প্রয়োজন? ‘কোচই আমাকে ওই জায়গায় পাঠিয়েছিলেন। সিদ্ধান্তটাই তাঁরই ছিল। বল রিভার্স সুইং করছিল। সাকিব আউট হতেই কোচ বললেন, তুমিই যাও। আমি গিয়েই প্রথম বলটা পেয়ে গেছি। দ্বিতীয় বলটা ওটা আমার ব্যাটে লেগে চার হয়ে গেছে। আমি মনে করি আমরা কিছুটা ভাগ্যবান ছিলাম’—বললেন মাশরাফি।
গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে সাকিব আল হাসানের ফেরাটা কি দলের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছিল? মাশরাফি মনে করেন দলের ওপর থেকে চাপ কমাতে গিয়েই ওই শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে গিয়েছিলেন, ‘আমি যখন ব্যাটিংয়ে নেমেছি, তখন চাপ নিয়ে ভাবারও সময় ছিল না। সাকিব যে শটটা খেলতে গিয়ে আউট হয়েছে, সেটা সে সব সময়ই খুব ভালো খেলে। অনুশীলনও করে সব সময়। সাকিব আসলে দলকে চাপমুক্ত করতে চেয়েছিল। ওই সময় একটা-দুটো বাউন্ডারির খুব প্রয়োজন ছিল। সে সুযোগটা নিতে চেয়েছিল। বেশির ভাগ সময় বল ব্যাটে লাগলে চার হয়ে যায়। কিন্তু সাকিবের দুর্ভাগ্য, ম্যাচে সে সেটা করতে পারেনি। আমি মনে করি সাকিব যে ঝুঁকিটা নিয়েছিল সেটা হিসেব-কষেই নিয়েছিল।’
২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে দুর্ভাগ্যে মোড়া শেষ ওভারটিতে উইকেটে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কাল এশিয়া কাপেরই আরও একটি ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জয়ের শটটা এল তাঁরই ব্যাট থেকে। আর এটাই চেয়েছিলেন মাশরাফি, ‘আমি চেয়েছিলাম উইনিং শটটা মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকেই আসুক। আমাকে এসে বলছিল কি করব। আমি বলেছি পাইলে তুই মেরে দে। ড্রেসিং রুমেও সে আগের সেই স্মৃতিটা মনে করেছিল।’
মুস্তাফিজুর রহমানের না থাকাটা ম্যাচে খুব অনুভব করেছেন মাশরাফি। তাঁর আশা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই সে ফিট হয়ে উঠবে, ‘দলের জেতার পরও বলব, মুস্তাফিজকে অনেক মিস করেছি। একটা পরিস্থিতি ছিল, মুস্তাফিজ যদি থাকত আমাদের আরও ১৫টা রান কম হতো। আমাদের যখন উইকেট দরকার হয় তখন মুস্তাফিজই সব সময় এগিয়ে আসে। পুরো দলই তাকে মিস করছে। আমরা খুব আশাবাদী বিশ্বকাপের আগে সুস্থ হয়ে সে ফিরে আসবে।’
তাসকিনের বোলিংয়েরও প্রশংসা করেছেন মাশরাফি, ‘তাসকিন আমাদের জন্য ম্যাচের দিক ঠিক করে দিয়েছে। ছেলেটা পুরো টুর্নামেন্টে দুর্ভাগা ছিল। ওর বলে অনেকগুলো ক্যাচ ড্রপ হয়েছে। স্বস্তির বিষয়, সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েনি। আমি বলব, সে ইতিবাচক ছিল বলেই ফল পেয়েছে। তাসকিন শুরু করেছে। আল আমিন শেষ করেছে। এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। ছেলেরা এই চাপটা নিতে পেরেছে। বিশেষ করে বোলাররা। এটাই আসলে ভালো দল হয়ে উঠার লক্ষণ।’
ফাইনালের আগে পুরো দলকেই মাটিতে পা রাখতে বলছেন মাশরাফি। এড়িয়ে চলতে বলেছেন প্রত্যাশার অপ্রয়োজনীয় চাপ। নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারলেই ফাইনালে ফল আসবে—একান্ত বিশ্বাস বাংলাদেশ দলপতির।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন