ফেসবুক লাইভে আন্দোলনে আহত জহুর আলী: মামলা নিয়ে ব্যবসা শুরু হয়েছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হন মো. জহুর আলী (৩০)। ঘটনার প্রায় এক মাস পর তার বড় ভাই হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় এখন আসামি ধরা ও ছাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গুলিবিদ্ধ জহুর আলী।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ওই মামলা নিয়ে ব্যবসা বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে, মামলা দায়েরের এক মাস ২০ দিন পর বাদী হাফিজ আহমদ আদালতে হলফনামা দিয়ে দাবি করেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি কোনো কিছু জানেন না। এমনকি কোনো আসামিকে চেনেনও না।
গুলিতে আহত মো. জহুর আলী এখন ঢাকা পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) চিকিৎসাধীন।
সেখান থেকেই ফেসবুক লাইভে যুক্ত হয়ে জহুর আলী জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ শহরে গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশ তার বাঁ পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। এর এক মাস পর সাংবাদিক মাসুম হেলাল তাদের মামলা করার কথা বলেন।
জহুর আলী দাবি করেন, তারা তখন মাসুম হেলালকে বলেছিলেন, যেহেতু পুলিশ তাকে গুলি করেছে তাই পুলিশের বিরুদ্ধে এই মামলা করবেন। পরে দেখা যায়, মামলায় ৯৯ জন আসামির নাম। নাম ছাড়া আরও আসামি ২০০ জন। মামলা দায়েরের সময় মাসুম হেলাল ৩০ হাজার টাকা দিয়ে বলেন, একজন তাকে চিকিৎসার জন্য দিয়েছেন।
এই মামলা নিয়ে মহাবিপদে আছেন উল্লেখ করে জহুর আলী লাইভে বলেন, “পুলিশ আমারে গুলি করছে। পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করব। কিন্তু পরে দেখি মাসুম হেলাল সবাইরে মামলায় ঢুকাইয়া দিছে। এই মামলা নিয়া এখন ব্যবসা শুরু হইছে। সে (মাসুম হেলাল) কোটি টাকা নিছে। শুনছি সে এখন কানাডা চইলা যাইব। টাকা নিয়ে জেলে ঢুকায়, বের করে। মামলায় যারার নাম নাই তারারে পুলিশ ধরে বেশি। লোকজন বলে, ‘আমরা টাকা নিচ্ছি।’ এটা মিথ্যা। আমরা কোনো টাকা পাই নাই। আমরা গরিব মানুষ। এখন আমরা পড়ছি মহাবিপদে। সোমবার কোর্ট থেকে আমার ভাইরে তুলে নেওয়া হইছে।”
উল্লেখ্য, এই মামলায় সুনামগঞ্জের বাসিন্দা সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে এম এ মান্নান, মুহিবুর রহমানসহ অনেকই এখন জামিনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ফেসবুক লাইভে মাসুম হেলাল নামের যে সাংবাদিকের কথা জহুর আলী উল্লেখ করেছেন, তিনি অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এদিকে, মামলার বাদী হাফিজ আহমদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তিনি এত এত লোককে আসামি দিতে চাননি। ওই সাংবাদিকই সব করেছেন। আদালতে দেওয়া হলফনামায় তিনি লিখেছেন, ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ থেকে অনেক দূরে। তাই তিনি ঘটনার বিষয়ে কোনো কিছু জানেন না। আসামিদেরও চেনেন না।
তবে মামলায় নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না বলে দাবি করেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক।
তিনি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে বলেন, “যাদের নাম আসামির তালিকায় আছে, তারা পালিয়েছে। এটা ঠিক অজ্ঞাতনামা আসামি বেশি ধরা হচ্ছে। পুলিশ খোঁজ নিয়ে, ভিডিও ফুটেজ দেখে যারা ঘটনায় যুক্ত তাদের গ্রেপ্তার করছে। নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের সংঘর্ষ
সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়াবিস্তারিত পড়ুন
ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচের আগে বিক্ষোভে উত্তাল প্যারিস
উয়েফা নেশন্স লিগে ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচের আগে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়েবিস্তারিত পড়ুন
আসিফ নজরুল: কোনো অজুহাতেই জঙ্গিবাদ অ্যালাউ করতে পারি না
কোনোভাবেই কোনো অজুহাতেই, কোনো মোড়কেই জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদকে অ্যালাউ করতেবিস্তারিত পড়ুন