বঙ্গবন্ধুর সূর্য এখন মধ্যগগনে
জাতিসংঘ অধিবেশনের পর ওয়াশিংটনে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ১৯৭৪ সালের ১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু তখন প্রধানমন্ত্রী, তাঁর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হোসেন আলী। বঙ্গবন্ধুর পাইপ টোব্যাকো ও মিসেস ফোর্ডের অসুস্থতা নিয়ে কুশলবিনিময়ের পর বঙ্গবন্ধু সোজা চলে যান মূল বিষয়ে। দেশে খাদ্যের চরম সংকট। অনতিবিলম্বে খাদ্য সহায়তা দরকার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বললেন, তাঁর দেশে খাদ্যশস্যের ফলন আশানুরূপ হয়নি। বড়জোর আড়াই লাখ টন গম দিতে পারবেন। এর মধ্যে দেড় লাখ টন হাতে আছে, বাকি এক লাখ টন সরবরাহ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আসছে—এ খবরটি তখন জরুরি ছিল। খাদ্য ঘাটতিকে পুঁজি করে অনেকেই চাল-গমের মজুদ গড়ে তুলেছিল, এ খবরে সেই খাদ্যশস্য বাজারে ছেড়ে দেবে, দামও কমে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কাজ চলছে, এটি সম্ভব হলে পাঁচ বছরে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে। সে প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গবন্ধু জানালেন, দেশে ১০ থেকে ২০ টিসিএফ গ্যাসের মজুদ আছে, তেল অনুসন্ধানের জন্য আমেরিকার দুটি কম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
স্বাধীনতাযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সবার জানা। তবু তিনি নিঃসংকোচে বললেন পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কথা। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পদ ভাগাভাগির কথা, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসনের কথা, এসব প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টোর নির্বিকারত্বের কথা জানালেন জেরাল্ড ফোর্ডকে।
দেশে কিংবা বিদেশে, যখনই কোনো সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন, দেশের স্বার্থের প্রসঙ্গ প্রথম সুযোগেই তিনি উত্থাপন করেছেন, নির্দ্বিধায়।
মানুষের নেতা তিনি, দেশের আনাচকানাচে হেঁটেছেন, মানুষের প্রয়োজন, দেশের প্রয়োজন তাঁর চেয়ে বেশি কে জানেন! তাই তাঁকে নির্ভর করতে হয়নি আমলাদের ওপর, কূটনীতিকদের ব্রিফিং বা নোটের ওপর।
মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। পাকিস্তানের জেল থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন ঘুরে দিল্লিতে নেমে বিপুল সংবর্ধনার জবাবে অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন বঙ্গবন্ধু। আনুষ্ঠানিক বৈঠকে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে তাঁর দেশের সৈন্য প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেন। তখনো তিনি স্বাধীন দেশে পা রাখেননি। তবু মাথায় রেখেছিলেন সার্বভৌমত্বের প্রশ্নটি, বন্ধুত্বের সংকোচে হারিয়ে যায়নি প্রখর বাস্তবতাবোধ।
মুক্তিযুদ্ধে বন্ধু দেশ সোভিয়েত রাশিয়া সফরে গিয়ে তিনি বিধ্বস্ত চট্টগ্রাম বন্দর সচল করার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করে এসেছিলেন।
১৯৭৩ সালে অটোয়ায় কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে মূল বৈঠকের আগেই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পদ ভাগাভাগি ও আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে একটি রেজুলেশন গ্রহণ করার ব্যাপারে তিনি স্বাগতিক দেশ কানাডা ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সফরসঙ্গী ছিলেন কূটনীতিক ফারুক চৌধুরী। সেই সফরের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, বৈঠকে বঙ্গবন্ধু রেজুলেশনের প্রস্তাব দিলে কানাডা ও যুক্তরাজ্য সমর্থন করে। তবে তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস নায়ারে আপত্তি তুললেন। বঙ্গবন্ধু তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর যুক্তি খণ্ডন করে বললেন, ‘কমনওয়েলথের সম্মেলনে যোগ দিতে পৃথিবীর অর্ধেক পথ উড়ে এসেছি। এই সংস্থার সদস্য হিসেবে একটি রেজুলেশনও যদি না পাই, তাহলে কী লাভ?’ পরে রেজুলেশন গৃহীত হলো।
জ্যামাইকার কিংসটনে ১৯৭৫ সালে কমনওয়েলথ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর মুখোমুখি হয়েছিলেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়াকুবু গাওয়ান। জিজ্ঞেস করেছিলেন, পাকিস্তান একটা শক্তিশালী দেশ। আপনি কেন এই দেশটিকে ভাঙলেন? বঙ্গবন্ধু অপ্রস্তুত হননি। স্বভাবসুলভ অট্টহাসি হেসে জবাব দিলেন, ভারতীয় উপমহাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে শক্তিশালী। তার চেয়েও শক্তিশালী এশিয়া মহাদেশ। আর বিশ্ব এশিয়ার চেয়েও শক্তিশালী। তবু কি এই বিশ্বকে এক রাখা গেছে? তাঁর এই তাৎক্ষণিক জবাবে নির্বাক বনে যান নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট। বঙ্গবন্ধু তাঁর গলায় ঝোলানো চাদর ঝুলিয়ে দিলেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের গলায়, সহাস্য বিদায় নিলেন।
এমন অনেক নজির রয়েছে, দ্বিপক্ষীয় কিংবা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সব সময়ই অন্য রাষ্ট্রনেতাদের কাছে উৎসাহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বঙ্গবন্ধু, যিনি ছিলেন তৃতীয় বিশ্বের নেতা। গড়পড়তা বাঙালির চেয়ে লম্বা পাঁচ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার শেখ মুজিব বিশ্বসভায় নজর কাড়তেন তাঁর ব্যক্তিত্ব দিয়ে। ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল নিউজ উইক সাময়িকীতে তাঁকে বলা হয়েছিল ‘রাজনীতির কবি’। ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে টাইম ম্যাগাজিনে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলা হয়, উপমহাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত কার্যকর জনপ্রিয় নেতা হওয়ার সব ব্যক্তিগত গুণ রয়েছে তাঁর।
বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বে চমত্কৃত হয়েছিলেন কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। আলজিয়ার্সে ১৯৭৩ সালে জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর কিউবার প্রধানমন্ত্রী ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি। তবে আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায় এই মানুষটি হিমালয়ের প্রতিভূ। তাঁকে দেখে আমার হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।’ কাস্ত্রো তাঁর ৯০তম জন্মদিন পালন করলেন গত ১৩ আগস্ট। আর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী। কাস্ত্রো তাঁর জীবদ্দশায়ই দেখছেন তাঁর দেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তন। তাঁর দেশে পাট রপ্তানি করার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগভাজন হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর সরকার। খাদ্য সহায়তার জাহাজ ফিরিয়ে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে শাস্তি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। আজ বাংলাদেশের প্রতিও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে ওয়াশিংটনের, যা বঙ্গবন্ধু দেখে যেতে পারেননি।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর পেছনে হাঁটে বাংলাদেশ, কলঙ্কিত হয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও। স্বাধীনতার প্রসব বেদনা সহ্য করা মুজিবকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা চলে ইতিহাস থেকে, গণমানুষের মন থেকে। কিন্তু বাঙালির রক্তে মিশে থাকা প্রিয় নেতা মুজিবকে নিশ্চিহ্ন করা যায়নি। বরং স্বমহিমায় জাতির সামনে আরো শক্তিশালী বিশ্বনেতা রূপে ফিরে এসেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিশ্বের নানা দেশে ঘোরার বিরল অভিজ্ঞতা রয়েছে সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক চৌধুরীর। তিনি বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ তখন সারা বিশ্বের মানুষের কল্পনাকে নাড়া দিয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতা বঙ্গবন্ধু তখন সবার চোখে রোমান্টিক নায়ক। তাই যেখানে গেছেন, সেখানেই তিনি সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। তাঁর ছিল অপরিসীম ধৈর্য, অসীম সাহস, বিরল দূরদৃষ্টি ও গভীর দেশপ্রেম, ছিল প্রবল ব্যক্তিত্ব, প্রখর প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব এবং আত্মসম্মানবোধ। সেই সময়কার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দুর্বলতা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু সচেতন ছিলেন। কিন্তু লজ্জিত ছিলেন না মোটেও। বিশ্বের জাঁদরেল সব রাষ্ট্রনায়কের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি, আত্মবিশ্বাসী ও উন্নতশির এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সদানিবেদিত।’
যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মাত্র ৪৪ মাস সময় পেয়েছিলেন। এরই মধ্যে অনেক কিছুরই সূচনা করে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি ও ছিটমহল বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, যার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলো তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের সময়। গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়েও কাজ এগিয়ে রেখেছিলেন তিনি। চুক্তি সম্পাদনও হলো তাঁর কন্যার হাত ধরে, ১৯৯৭ সালে। ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের প্রক্রিয়াও শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু ঘাতকের বুলেট থামিয়ে দেয় সেই প্রক্রিয়া। সেই সঙ্গে থেমে যায় যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন। সেই সমুদ্রসীমাও নির্ধারিত হয়েছে চার দশক পর, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। শুধু ভারতের সঙ্গে নয়, মিয়ানমারের সঙ্গেও নিষ্পত্তি হয়েছে সমুদ্রসীমা বিরোধ। সমুদ্রেও এখন নতুন আরেক বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধুর জাপান সফরের সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী কাকুই তানাকার সঙ্গে যমুনা সেতু নির্মাণে সহযোগিতা চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এ লক্ষ্যে একটি যৌথ ইশতেহারও ঘোষণা করেছিলেন দুই প্রধানমন্ত্রী। সেই সেতু চালু হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর ২২ বছর পর, ১৯৯৮ সালে যখন তাঁর মেয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের কাছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সীমিত আকারে চাল রপ্তানিও করছে এখন। গ্যাসসম্পদ সুরক্ষায় শেখ মুজিবের দূরদর্শিতার সুফল ভোগ করছে আজকের বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট সাড়ে চার মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে পাঁচটি তেল-গ্যাস ক্ষেত্র কিনে নিয়েছিলেন বিদেশি কম্পানির কাছ থেকে। সেই পাঁচটি ক্ষেত্র এখন দেশের গ্যাসের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ মেটায়। এত বছর ব্যবহারের পরও এই ক্ষেত্রগুলোতে মজুদ থাকা বর্তমান গ্যাসের বাজারমূল্য ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ এখন উত্থানপর্বে। ২৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের পাশাপাশি মাতারবাড়ী বিদ্যুেকন্দ্র, মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণ, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজও বাস্তবায়ন করছে সরকার। চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে অবকাঠামো খাতে এশিয়ার বিকাশমান অর্থনীতির দেশগুলোর কাতারে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে (বিসিআইএম) অর্থনৈতিক করিডর এবং ভারতসহ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু হলে এ অঞ্চলের দেশগুলোর পণ্য বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হবে।
গত ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ সফরে আসেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. কৌশিক বসু। তখন তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামনে উড়ন্ত সূচনা অপেক্ষা করছে। জিডিপির অনুপাতে বর্তমানে বিনিয়োগ জিডিপির ২৯ শতাংশ। যখন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকংয়ের বিনিয়োগের পরিমাণ ওই সব দেশের জিডিপির ৩০ শতাংশের মতো ছিল তখন থেকেই ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করছিল। তাই তিন বছরের মধ্যে যদি একটা টার্গেট করে বাংলাদেশের বিনিয়োগকে জিডিপির ৩৩ বা ৩৪ শতাংশে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। তখন বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ খুবই সম্ভব। আর সেটা হলে বাংলাদেশ বিশ্বের চার-পাঁচটি দেশের মধ্যে পড়ে যাবে, যারা উচ্চ প্রবৃদ্ধির সিঁড়িতে শীর্ষে রয়েছে।
গত ৬ জুলাই লন্ডনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা বিএমআই রিসার্চ এক প্রতিবেদনে বলেছে, ভবিষ্যতের উদীয়মান ১০টি সেরা বাজারের তালিকায় বাংলাদেশকে রেখেছে তারা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ‘সিএনএন মানি’ গত ১ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ প্রবৃদ্ধির দেশ। আর বিশ্বব্যাংক গত ৬ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬.৮ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি সম্ভাবনায় ভারতের পরেই জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে যে উন্নয়ন শুরু হয়েছিল তা এখন মধ্যগগনে।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ। তারা বলেছে, এ বছর বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বাংলাদেশ।
কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, শিক্ষাসহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মহাসড়কে দেশকে স্থাপিত করে দিয়ে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই পথেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এসে বাংলাদেশ আজ নানা বৈশ্বিক সূচকে সম্ভাবনার শীর্ষে স্থান পাচ্ছে। একদিন বিশ্বসভায় আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হবে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন