বনানীতে হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণ, ২৫ লাখ টাকা গেলো কোথায়?
আপন জুয়েলার্সের ২৫ লাখ টাকার ঘুষ প্রদান নিয়ে নানা কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রশ্ন জেগেছে কে পেলো এই ২৫ লাখ টাকা? ওসি না অন্য কেউ? তবে পুলিশেরই একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এই টাকার পুরোটাই পেয়েছেন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। বনানী থানার ওসি তা থেকে সিকিভাগও পাননি। পুুরো টাকাটাই ওই কর্মকর্তা হজম করে চুপচাপ বসে আছেন। ওই কর্মকর্তার নির্দেশেই থানা পুলিশ মামলা গ্রহণে দেরি করে। যে কারণে গতকাল সাংবাদিকদের কাছে দেয়া বক্তব্যে মহানগর পুলিশ কমিশনারও থানা পুলিশকে অতটা দায়ী করেননি। তিনি শুধু বলেছেন, থানা পুলিশের মামলা গ্রহণে কোনো গাফেলতি ছিল না। কিছু কিছু ব্যত্যয় ঘটেছে। সে সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।
এ দিকে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ বলেছে, রেইনট্রি থেকে উদ্ধারকৃত মদের কেমিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট তারা হাতে পেয়েছে। তাতে ১৩ পয়েন্ট ৪৯ পার্সেন্ট অ্যালকোহল পাওয়া গেছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, বনানী রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষিতা দুই তরুণী ৪ মে প্রথম থানায় যান। তারা ওসিকে ঘটনার ব্যাপারে বর্ণনা করলে ওসি তাৎক্ষণিক বিষয়টি একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। ওই কর্মকর্তা তখন ওসিকে সময় নেয়ার নির্দেশ দেন। পরের দিন তরুণীরা আবারো থানায় যান। কিন্তু ওই দিনও তারা মামলা দায়ের করতে ব্যর্থ হন। এ দিকে ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে মামলা দায়েরের অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি তার অধঃস্তন কর্মকর্তাকে বলে দেন এ বিষয়ে মামলা দায়ের হবে না। যে কারণে থানা পুলিশ ওই দিনও মামলা গ্রহণ করতে পারেনি। মামলা না নেয়ার বিষয়ে ৬ মে মিডিয়াগুলোতে নিউজ হওয়ার পর পুলিশ মামলা গ্রহণ করে। এ দিকে চার দিকে অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ে ওসি ২৫ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে। পুলিশেরই একাধিক সূত্র বলেছে, আপন জুয়েলার্স ঠিকই ২৫ লাখ টাকা দিয়েছে। কিন্তু তা একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে। ওই কর্মকর্তা পুরো টাকাটাই হজম করে এখন চুপচাপ বসে আছেন। এই ঘটনায় ইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভও সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই কর্মকর্তা যে ঘুষ গ্রহণ করেন তা নিয়ে পুলিশ বিভাগের মধ্যেও গুঞ্জন আছে।
এ দিকে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, হোটেল রেইনট্রি থেকে উদ্ধারকৃত মদের কেমিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট গতকাল তারা হাতে পেয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর গতকাল এই প্রতিবেদন দিয়েছে। তাতে উদ্ধারকৃত মদের ভেতরে ১৩ পয়েন্ট ৪৯ পার্সেন্ট অ্যালকোহল পাওয়া গেছে। গত ১৪ মে হোটেল রেইনট্রি থেকে ওই মদ উদ্ধার করা হয়। এ দিকে রেইনট্রি কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের জেনারেল ম্যানেজার ফ্র্যাংক ফরগেট বিদেশী নাগরিক। তিনি তার স্ত্রী-পরিবার নিয়ে ওই হোটেলেই অবস্থান করেন। যে মদ উদ্ধার করা হয়েছে তা ‘ফুড ওয়াইন’। সাধারণত ফ্র্যাংকের পরিবার খাবার তৈরিতে ওই মদ ব্যবহার করে আসছিল। ওটা হোটেল বোর্ডারদের কাছে বিক্রির জন্য নয়। ওই হোটেলে মদের লাইসেন্সও নেই বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বনানীর হোটেল রেইনট্রিতে দুই তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদারের ছেলে সাফাত এবং তার বন্ধু নাঈম আশরাফ মিলে দুই তরুণীকে ধর্ষণ করে। এতে সহায়তা করে সাফাতের অপর বন্ধু সাদমান সাকিফ। ওই দুই তরুণীসহ মোট চারজনকে সাফাত জন্মদিনের নিমন্ত্রণ জানিয়ে ওই হোটেলে নিয়েছিল। সেখানেই দুই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধর্ষণ করা হয়। গত ৬ মে মামলা দায়ের হয়। মামলা দায়েরের পর সাফাত, সাকিফ, সাফাতের ড্রাইভার বেল্লাল ও বডিগার্ড রহমত আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সাফাত, সাকিফ ও বেল্লাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। সূএ: নয়া দিগন্ত
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের
ঢাকার সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূস: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, এটি ত্রুটিপূর্ণ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “মানুষ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা।বিস্তারিত পড়ুন
আইসিটি অধ্যাদেশ অনুমোদন, ধারণ করা যাবে বিচার প্রক্রিয়ার অডিও-ভিডিও
‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনবিস্তারিত পড়ুন